বিজেপিই পয়লা নম্বর শত্রু! মোদীকে হারাতে মমতার হাত ধরতে চান সিপিআইএমএলের দীপঙ্কর
কেন্দ্রের মোদী সরকারকে হারাতে প্রয়োজনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরতে রাজি সিপিআইএমএল সিপিাইএমএলের সর্বভারতীয় সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। তাঁর অভিমত বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে হঠাতে সর্বাত্মক জোটের প্রয়োজন।
কেন্দ্রের মোদী সরকারকে হারাতে প্রয়োজনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরতে রাজি সিপিআইএমএল সিপিাইএমএলের সর্বভারতীয় সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। তাঁর অভিমত বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে হঠাতে সর্বাত্মক জোটের প্রয়োজন। দেশজুড়ে সার্বিকভাবে বিরোধী ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। তার জন্য তৃণমূলের হাত ধরতে হলেও তাঁর কোনও আপত্তি নেই।
পরাস্ত হয়েছেন ঠিকই, মোদী ক্ষমতা থেকে সরে যাননি
সিপিআইএমএলের সর্বভারতীয় সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, কৃষি আইন প্রত্যাহারকে বিরোধীরা অনেকেই মোদী ও বিজেপির পরাজয় বলে ব্যাখ্যা করছেন। কৃষকদের লাগাতার আন্দোলনের কাছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর সরকার পরাস্ত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু মোদী বা বিজেপি এখনও ক্ষমতা থেকে সরে যাননি। এখনও তিনি দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতার অলিন্দে বিচরণ করছেন।
মোদীর অপশাসন দূর না করা পর্যন্ত আন্দোলন
দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেন, কৃষি আইন প্রত্যাহার শুধু মোদীর পরাজয় বলে দেখতে নারাজ তিনি। কেননা মোদী ও তাঁর বাহিনীর হাতেই এখনও ক্ষমতা। তাঁকে যতক্ষণ না ক্ষমতার অলিন্দ থেকে সরানো যাচ্ছে, ততক্ষণ পরাজয় হয়ে বলে নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে না। মোদীর অপশাসন দূর না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
মোদী শাসনের অবসান ঘটাতে সর্বাত্মক ঐক্য দরকার
দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের কথায়, মোদীর অপশাসন দূর করতে তাঁর দলকে যদি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরতে হয় তিনি তা করতে দুবার ভাববেন না। বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করেই তিনি তৃণমূলের হাত ধরবেন। কেননা কোনও কিছু না ভেবে বিরোধী ঐক্যকে মজবুত করতে হবে মোদী শাসনের অবসান ঘটাতে।
শুধু বিজেপি ও মোদীকে হটানোর লক্ষ্য নিতে হবে
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে দেশের ক্ষমতার অলিন্দ থেকে বিজেপিকে সরাতে সর্বাত্মক জোটের প্রয়োজন। সেখানে শুধু দলীয় স্বার্থ দেখলে হবে না। কারও স্বার্থহানি হলেও তাঁকে এগিয়ে আসতে হবে শুধু বিজেপি ও মোদীকে হটানোর লক্ষ্য নিয়ে। দেশজুড়ে বিরোধী ঐক্যকে শান দিতে যা যা করণীয়, তাই করতে হবে।
মমতা একজন শক্তিশালী নেত্রী, ত়ৃণমূল একটা শক্তিশালী দল
দেশের ভালোর জন্য আজ যে সবার আগে সার্বিক জোটের প্রয়োজন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এটা অস্বীকার করার জায়গা নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন শক্তিশালী নেত্রী। আর ত়ৃণমূল একটা শক্তিশালী দল। তাই এই শক্তিশালী নেত্রী ও শক্তিশালী দলের সঙ্গে জোট বেঁধে এবার দেশ থেকে মোদী শাসন উৎখাত করতে হবে।
বিজেপিই পয়লা নম্বর শত্রু, তৃণমূলের সঙ্গে চাই জোট
তিনি বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস সর্বভারতীয় দল না হলেও বাংলায় তারা যা করেছে, তা যথেষ্ট। তৃণমূল সর্বভারতীয় দল না হলেও শক্তিশালী দল তা তো মানতে হবে। তার থেকেও বড় কথা বিজেপি বিরোধিতায় তৃণমূল গুরুত্বপূর্ণ দল। তাই তাদের সঙ্গে জোট বাঁধতে আমার কোনও আপত্তি নেই। আমার কাছে বিজেপিই পয়লা নম্বর শত্রু।
মোদীকে হটাতে চাই, জোট গড়তে পারি মমতার সঙ্গে
বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রের মোদী সরকার দেশের জন্য বিপর্যয়। ২০২৪-এই এই বিজেপি নামক বিপর্যয়কে দেশ থেকে উপড়ে ফেলতে হবে। আমরা কাছে বিজেপিই একমাত্র রাজনৈতিক শত্রু। এই শত্রুর মোকাবিলা করার উপযুক্ত নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ মমতার মধ্যে ঝুঁকি নেওয়ার সাহস রয়েছে। তাই আমরা তাঁর হাত ধরতে প্রস্তুত। মোদীকে হটাতে তাই আমরা জোট গড়তে পারি।
সিপিএম তাঁদের রাজনৈতিক শত্রুকে বেছে নিতে পারেনি
এর আগেও বামফ্রন্টের বড় শরিক সিপিএমের সমালোচনায় দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বলেছিলেন, সিপিএম তাঁদের শত্রুকে বেছে নিতে পারেনি বলেই এই বিপর্যয়। সিপিএম বিজেপির বিরোধিতা করবেন নাকি তৃণমূলের বিরোধিতা করবেন, তাই ঠিক করতে পারেনি। উভয় দলের সঙ্গে সমদূরত্ব রাখতে গিয়ে সিপিএম রাজনৈতিক শত্রু নির্বাচন করতেও পারেনি। তার ফলে মানুষের মনে বিশ্বাস জোগাতে ব্যর্থ হয়েছে।
সিপিএম তথা বামফ্রন্টের উদ্দশ্যে প্রয়োজনীয় বার্তা
সিপিআইএমএলের পক্ষ থেক সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য বিহার বিধানসভায় সাফল্য পাওযার পরই সিপিএম তথা বামফ্রন্টের উদ্দশ্যে প্রয়োজনীয় বার্তা দিয়েছিলেন। সিপিএমকে স্থির করতে বলেছিলেন, কারা তাদের আসল শত্রু তা স্থির করেই রাজনৈতিক লড়াইয়ে নামতে হবে। তা না হলে না ঘরকা না ঘাটকা পরিস্থিতি হয়ে যাবে। সেটাই হয়েছে সিপিএমের ক্ষেত্রে।
তৃণমূলের এখন ঘোরতর অ্যালার্জি কংগ্রেসে
সিপিএম যেমন তৃণমূল না বিজেপিকে পয়লা নম্বর শত্রু মনে করবে, তা চূড়ান্ত করতে পারেনি। এখন আবার কংগ্রেসকে নিয়েও তাঁরা সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না জোট নাকি একলা চলো নীতি নিয়ে চলবে দল। সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে কংগ্রেসের সঙ্গে চললেও, বাংলায় তাঁরা কংগ্রেসকে নিয়ে পিছু হটছে। কেননা বাম শরিকরা অনেকে আবার কংগ্রেসকে পছন্দ করছে না। ফলে দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের কথামতো সার্বিক জোট কোনও ক্ষেত্রেই গড়ে উঠছে না। ওদিকে আবার তৃণমূলের এখন ঘোরতর অ্যালার্জি কংগ্রেসে। ফলে বিজেপির বিরুদ্ধে সার্বিক লড়াই এখনও বিশ বাঁও জলে।