মৃতদেহের সঙ্গে আইসোলেশন ওয়ার্ডে কোভিড রোগী, চাঞ্চল্যকর অভিযোগ রাজ্যের হাসপাতালের বিরুদ্ধে
মৃতদেহের সঙ্গে আইসোলেশন ওয়ার্ডে কোভিড রোগী, চাঞ্চল্যকর অভিযোগ রাজ্যের হাসপাতালের বিরুদ্ধে
নদীয়া জেলার এক হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডের রোগীর দুর্দশার কথা ইন্ডিয়া টুডেতে প্রকাশিত হওয়ার পর রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর তীব্রভাবে সমালোচিত হয়েছে। রাজ্যে বাড়তে থাকা করোনা ভাইরাস ইতিমধ্যেই সরকারের চিন্তাকে বাড়িয়েছে, তার ওপর এ ধরনের অভিযোগ সরকারের চিন্তা দ্বিগুণ করতে পারে।
মৃতদেহের সঙ্গে রাত কাটান রোগী
উত্তর ২৪ পরগণার এক রোগীর দেহে কোভিড-১৯-এর উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর তাঁকে নদীয়ায় স্থানান্তর করা হয়। ওই রোগী তখনও ভাবেননি যে তাঁকে পরবর্তী দিনগুলিতে মৃতদেহের এত কাছাকাছি তাঁকে থাকতে হবে। ইন্ডিয়া টুডেকে ওই রোগী জানিয়েছেন যে তাঁকে নদীয়ার কল্যাণীতে কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড জওহরলাল নেহেরু মেমোরিয়াল হসাপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তাঁকে বেড দেওয়ার পর ওই রোগী উপলব্ধি করেন যে তাঁর বিপরীত দিকে রয়েছে অযত্নে রাখা একটি মৃতদেহ। এই পরিস্থিতি বুধবার রাত পর্যন্ত কোনও বদল হয়নি এবং বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় ওই রোগী তাঁর মৌখিক বয়ানের সঙ্গে ছোট একটি ভিডিও করে।
হাল্কা উপসর্গ কোভিড রোগীদের আইসোলেশন ওয়ার্ড
ওই রোগী আইসোলেশন ওয়ার্ডের ৮ নম্বর বেডে ছিলেন এবং বেড সংলগ্ন নিয়মিত সরবরাহের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডারও ছিল। শুধু তাই নয় প্রকাশ্যে এসেছে আরও একটি তথ্য। যা হল এই আইসোলেশন ওয়ার্ডটি কোভিড-১৯-এর হাল্কা উপসর্গদের জন্য এবং তাঁদের যদি রিপোর্ট পজিটিভ আসে তবে তাঁদের ওই হাসপাতালের কাছে একটি কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তর করিয়ে দেওয়া হবে। ওই রোগী বলেন, ‘ওই ব্যক্তি মঙ্গলবার রাতে মারা গিয়েছে এবং তাঁর দেহ এখনও বেডে শোওয়ানো রয়েছে। আমার বেডের ঠিক বিপরীত দিকে। আমার সর্দি-কাশি হয়েছে এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যাও দেখা দিয়েছে। আমায় যে বেডটা দেওয়া হয়েছে সেখানে আগে এক করোনা রোগী ছিলেন। এখন আমি এখান থেকে চলে যেতে চাই।' ৫৫ বছরের ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন যে তাঁকে যে বেড দেওয়া হয়েছে আইসোলেশন ওয়ার্ডে সেখানে দু'দিন আগে পর্যন্ত এক করোনা রোগী ছিলেন।
রোগীর অভিযোগ স্বীকার হাসপাতালের
জেএনএম হাসপাতালের সুপারিটেনডেন্ট ডাঃ অভিজিত মুখোপাধ্যায় রোগীর অভিযোগকে স্বীকার করেছে। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের মৃতদেহ সরিয়ে দেওয়ার লোকের অভাব রয়েছে এবং সেই কারণে মর্গে দেহ নিয়ে যাওয়ায় দেরি হচ্ছে। তাই আইসোলেশন ওয়ার্ডের বেডে সারা রাত একটি মৃতদেহ পড়ে থাকার সম্ভাবনা থাকতে পারে। কিন্তু আমরা ভালো পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।'
দুঃখ প্রকাশ রাজ্য সরকারের
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে নদীয়া জেলার মুখ্য মেডিক্যাল অফিসার অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।'
প্রতীকী ছবি
গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড করোনা সংক্রমণ রাজ্যে, আক্রান্ত ২৪৩৬ জন, সুস্থতার সংখ্যায়ও রেকর্ড গড়ল বাংলা