অধীর-গড়ে কার্যত নিশ্চিহ্ন কংগ্রেস, বহরমপুরের পর কান্দিতেও ফুটছে ঘাসফুল!
কলকাতা, ১৯ সেপ্টেম্বর : কলকাতা ফুটবলে দলবদলের আঁচকেই মনে করাচ্ছে তৃণমূল। তবে রাজনীতির অন্দরে এই লড়াই বড়ই একপেশে। দলবদলের আসরে দুই প্রধান যেমন একে-অপরকে টেক্কা দেওয়ার খেলায় মেতে ওঠেন। এক্ষেত্রে তৃণমূল কংগ্রেস একাই ছড়ি ঘোরাচ্ছে। এক এক করে কংগ্রেস গড়ে থাবা বসিয়ে বাঘা বাঘা নেতাদের গোপন ডেরায় তুলে আনছে মমতা ব্রিগেড।
বিশেষ করেই এবার তৃণমূলের টার্গেট ছিল অধীরের গড় মুর্শিদাবাদ। সেই মুর্শিদাবাদ থেকে কংগ্রেসকে প্রায় নিশ্চিহ্ন করে দিতে পেরেছেন শুভেন্দু অধিকারী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মান্নান হোসেন, সৌমিক হোসেনরা। অধীরের খাসতালুক বহরমপুর পুরসভা রবিবারই কার্যত হাতছাড়া হয়েছে। এবার হাতছাড়া হতে বসেছে কান্দি পুরসভা। রইল বাকি মুর্শিদাবাদ পুরসভা। এই জেলায় সাতটি পুরসভার মধ্যে পাঁচটিতেই সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূল।
কান্দির প্রাক্তন উপপ্রধান ও চারজন কাউন্সিলর দল ছাড়তে চলেছেন। ইতিমধ্যেই তাদের কলকাতায় তৃণমূলের গোপন ডেরায় লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এক বা দু'দিনের মধ্যেই তাদের তৃণমূলে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করানো হতে পারে। কান্দির চার কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগদান করলে এই পুরসভায় ম্যাজিক ফিগার পেয়ে যাবে। ১৮ আসনবিশিষ্ট এই পুরসভায় কংগ্রেস ও তৃণমূলের কাউন্সিলর সংখ্যা ছিল ৯-৯। চারজন যোগ দিলে সমীকরণ দাঁড়াবে তৃণমূলের পক্ষে ১৪-৫। ফলে এই পুরসভা দখল নেওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা হয়ে দাঁড়াবে তৃণমূলের।
এদিকে কান্দি ও মুর্শিদাবাদ রক্ষা করতে সোমবারই বৈঠকে বসছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। জেলায় একেবারে নিশ্চিহ্ন হওয়ার আগে মানরক্ষা করতে উদ্যোগী তিনি। জেলার নীতি নির্ধারক কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে তিনি চাইছেন দলের কাউন্সলর-সদস্যদের তৃণমূলমুখী স্রোত আটকাতে। পথে নেমে জেলায় মিছিলও করবেন তিনি।
রবিবারই বেহাত হয়েছে বহরমপুর পুরসভা। ষোলোজন কাউন্সিলর নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন পুর চেয়ারম্যান নীলরতন আঢ্য। প্রতিরোধের দেওয়াল আগেই ভেঙে পড়েছিল। এবার খসে পড়ছে এক একটি ইট। ঘর ভেঙেছে বামেদেরও। হাতছাড়া হয়েছে বড়ঞা ও বেলডাঙা ১নং পঞ্চায়েত সমিতি। দুটি পঞ্চায়েতেরই দখল নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
বহরমপুর পুরসভায় মোট আসন সংখ্যা ছিল আঠাশ। এক কাউন্সিলরের মৃত্যু হওয়ায় সংখাটা দাঁড়ায় ২৭-এ। তৃণমূলের কাউন্সিলর ছিলেন মাত্র এক জন। কংগ্রেসের ছাব্বিশ জন। দলবদলের পর তৃণমূল বেড়ে হল ১৮। আর কংগ্রেস কমে ৯।
ছিয়াশি সাল থেকেই এই পুরসভা ছিল কংগ্রেসের দখলে। অধীরবাবু নিজে উপদেষ্টা। রবিবারই অভিষেক বলেছিলেন একমাসের মধ্যেই কান্দি ও মুর্শিদাবাদও তৃণমূলের দখলে আসবে। ইতিমধ্যেই কান্দির চারজনকে ডেরায় তুলে তৃণমূল বুঝিয়ে দিল এই দলবদলের খেলায় বাজিমাত করবেন তারাই। বিরোধী বলে কিছু থাকবে না এ রাজ্যে।