জানুয়ারিতেই আরও দুই কোম্পানি সিআরপিএফ রাজ্যে! নির্বাচন এগিয়ে আনার ভাবনা কেন্দ্রের?
কয়েকদিন আগেই রাজ্য সফরে এসে হামলার মুখে পড়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। ডায়মন্ড হারবার যাওয়ার পথে তাঁর কনভয়ে হামলা চালানো হয়েছিল। এরপর রাজ্যে আসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর সময়ে অবশ্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছিল। তবে তাঁর হাত ধরে দলে আসা শুভেন্দু অধিকারী এবং সাংসদ সুনীল মণ্ডলের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এহেন পরিস্থিতিতে রাজ্যে আরও দুই কোম্পানি সিআরপিএফ পাঠাচ্ছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই পুরুলিয়া ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়াতে তিন কোম্পানি বাহিনী রয়েছে।
রাজ্য রাজনীতিতে এই নিয়ে জোর জল্পনা
জানা গিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সহ রাজ্যে সফররত ভিআইপি এবং ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত। যদিও রাজ্য রাজনীতিতে এই নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। তৃণমূল কংগ্রেস নেতা ফিরহাদ হাকিম এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন। বলেন বর্তমানে 'স্বাধীনতা সংগ্রাম' লড়ছে তৃণমূল কংগ্রেস। এদিকে অনেকে মনে করছে যে নির্বাচনী আচরণবিধি লাগু করা হতে পারে অনেক আগেই। সেই লক্ষ্যেই আগেভাগে রাজ্যে বাহিনী পাঠাচ্ছে কেন্দ্র।
নাড্ডার কনভয়ে হামলা
গতবছরের ১০ ডিসেম্বর ডায়মন্ডহারবারে যাওয়ার পথে নাড্ডার কনভয়ে হামলা হয়েছিল। শিরাকলে তাঁর কনভয়ে হামলা চালিয়েছিল কয়েকজন দুষ্কৃতী। অভিযোগ,দুষ্কৃতীরা প্রত্যেকেই তৃণমূল আশ্রিত। ভাঙচুর করা হয়েছিল কৈলাস বিজয়বর্গীয়র গাড়ি। তাই এবার আর কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না সিআরপিএফ। সিআরপিএফ-এর বক্তব্য, অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনের পিছনে কোনও রাজনৈতিক কারণ নেই।
কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পান সাংসদ সুনীল মণ্ডল
এদিকে কয়েকদিন আগে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পান সাংসদ সুনীল মণ্ডল। ২৯ ডিসেম্বর কেন্দ্রের তরফে তাঁকে ওয়াই ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়া হল। কয়েকদিন আগে কলকাতায় তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল। এরপরই তিনি তিনি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেন।
বিজেপি নেতাদের নিরাপত্তা নিয়ে ওঠে প্রশ্ন
সুনীল মণ্ডল বর্ধমান-পূর্বের সাংসদ। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে তিনি তৃণমূলের টিকিটে ভোটে জিতেছিলেন। ১৯ জানুয়ারি মেদিনীপুর কলেজ ময়দানে অমিত শাহর সভায় তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর কয়েকদিন আগে হেস্টিং অফিসে বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে ঢোকার আগে তাঁর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মীরা। এরপরই দলে যোগ দেওয়া বিজেপি নেতাদের নিরাপত্তা নিয়ে উঠে যায় প্রশ্ন।
রাজ্যে আরও সিআরপিএফ জওয়ান
বিজেপি সূত্রে খবর, গোটা ঘটনা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয় বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র। তিনিই সুনীল মণ্ডলের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তার বিষয়টি তোলেন। পরে সুনীল মণ্ডলও কেন্দ্রের কাছে আবেদন করেন। সেই মতো তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়া হল। তাঁর সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা ১১ জন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তারক্ষী থাকবেন। এই আবহে রাজ্যে আরও সিআরপিএফ জওয়ান আসছে। পরবর্তীতে যখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বরা রাজ্যে আসবেন নির্বাচনী প্রচারে, তাঁদেরকেও সিআরপিএফ রক্ষী দেওয়া হবে। পাশাপাশি আরও সিআরপিএফ মোতায়েনের মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে চাপে রাখার অঙ্কও কষছেন অমিত শাহ, এমনই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।