চিটফান্ডে সিবিআইয়ের হাতে ধৃত 'প্রভাবশালী' তৃণমূল নেতা! প্রায় ১০০ কোটি টাকা তোলার অভিযোগ
গত কয়েক বছর আগে বাংলায় সারদা কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়। এক ধাক্কা কোটি কোটি মানুষের মাথায় বাজ ভেঙে পড়ে। জীবনের সমস্ত সঞ্চয় এক ধাক্কায় শূন্য। এরপর একের পর এক আদালত ঘুরে বাংলার চিটফান্ডের তদন্তে সিবিআই ।
রাজ্যে চিটফান্ড মামলায় এক তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করল সিবিআই। ধৃত ওই ব্যক্তির নাম প্রবীর চট্টোপাধ্যায় বলে জানা যাচ্ছে। তিনি খানাকুল ১ নম্বর ব্লকের সহ সভাপতি বলে জানা যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে ওই ব্যক্তির খোঁজ পাচ্ছিলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা। এই বিষয়ে একাধিকবার খোঁজ চালানো হলেও ব্যর্থ হয় সিবিআই। তবে আজ বৃহস্পতিবার নিজের বাড়ি থেকেই ওই তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানা যাচ্ছে। যা সিবিআইয়ের বড়সড় সাফল্য বলেই মনে করা হচ্ছে।
৯০ থেকে ১০০ কোটি টাকা তোলা হয়েছে
রাজ্যে সারদা সহ একাধিক চিটফান্ডের তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই। সেই মতো ভারত কৃষি সমৃদ্ধ প্রাইভেট লিমিটেড বলে একটি চিটফান্ডের খোঁজ পান তদন্তকারীরা। আর সেই মতো এই চিটফান্ডের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তদন্তকারীরা জানতে পারেন এই চিটফান্ডের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর পদে রয়েছেন প্রবীর চট্টোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি। যিনি কিনা খানাকুল ১ নম্বর ব্লকের সহ সভাপতি। শুধু তাই নয়, ওই তৃণমূল নেতার আমলেই ওই চিটফান্ড বাজার থেকে ৯০ থেকে ১০০ কোটি টাকা তোলে বলে অভিযোগ।
বেআইনি স্কিম দেখিয়ে এই চিটফান্ড টাকা তুলেছে
একাধিক বেআইনি স্কিম দেখিয়ে এই চিটফান্ড টাকা তুলেছে। রাজ্যজুড়ে বেআইনি ভাবে সেই টাকা তোলা হয়েছে বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারী সংস্থা। ইতিমধ্যে সেবি এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে ভারত কৃষি সমৃদ্ধ প্রাইভেট লিমিটেডের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জোগাড় করেছেন আধিকারিকরা। জানা যাচ্ছে, কোনও অনুমতি ছিল না। আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দিনের পর দিন এই টাকা তোলা হয়েছে বলে খবর সিবিআই সুত্রে। ইতিমধ্যে এই চিটফান্ড সংস্থার গভীরে পৌঁছে গিয়েছে তদন্ত করছে সিবিআই। আর সেখানেই প্রবীর চট্টোপাধ্যায় সহ একাধিক নাম সামনে এসেছে বলে খবর।
জেরার পরেই গ্রেফতার
শুধু তাই নয়, একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্যও এই চিটফান্ড নিয়ে সিবিআইয়ের হাতে এসেছে বলে খবর। যদিও কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার পর থেকেই পলাতক ছিল প্রবীর চট্টোপাধ্যায়। যদিও আজ গোপন সূত্রে ওই তৃণমূল নেতা বাড়িতে এসেছে বলে খবর পান আধিকারিকরা। আর এরপরেই সেখানে হানা দেন তদন্তকারীরা। একেবারে হাতেনাতে ওই তৃণমূল নেতাকে ধরে সিবিআই। এরপর বাড়িতেই দীর্ঘক্ষণ অভিযুক্ত ওই নেতাকে জেরা করা হয়। এমনকি তাঁর বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়। সেখান থেকে একাধিক নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে খবর। অন্যদিকে ওই চিটফান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ স্পষ্ট হওয়ার পরেই প্রবীরবাবুকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তাঁকে জেরা করে আরও গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করবেন আধিকারিক। এমনটাই খবর। যদিও বিরোধীদের কটাক্ষ, তৃণমূল নেতাকে জেরা করে না আবার রাঘববোয়ালদের নাম না বেরিয়ে আসে।