নেক্সট টার্গেট শুভেন্দু! বিজেপির লাভ নয়, তৃণমূলের ক্ষতিই চান দিলীপ-রা
মুকুল রায়ের বক্তব্যের রেষ ধরে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ মুখরিত হলেন শুভেন্দুর বন্দনায়। তাতেই জল্পনার পারদ চড়ল।
বিজেপির নেক্সট টার্গেট কি শুভেন্দু অধিকারী! মুকুলের পর শুভেন্দু-বন্দনা খোদ বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মুখে। তাতেই জল্পনার পারদ চড়ছে। প্রথমে শুধু মুকুল রায়ের নাম নিচ্ছিলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলতেন, 'শুধু মুকুল রায় নন, আরও অনেকে লাইন দিয়ে রয়েছে তৃণমূল ছাড়ার জন্য।' এখন কিন্তু মুকুলের সঙ্গে একই বন্ধনীতে উচ্চারিত হচ্ছে শুভেন্দুর নামও।
মুকুল রায় ক'দিন আগেই শুভেন্দু অধিকারীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠেছিলেন। বলেছিলেন, 'শুভেন্দু এই প্রজন্মের সেরা নেতা। শুভেন্দুই নন্দীগ্রাম গণ আন্দোলনের কাণ্ডারি। সবাই-ই জানেন নন্দীগ্রাম আন্দোলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সামনে থাকলেও পিছন থেকে আন্দোলন পরিচালনা করেছেন শুভেন্দুই। তাই তৃণমূলের উত্থানে শুভেন্দুর ভূমিকা কারও থেকে কম নয়।'
মুকুলের এই বক্তব্যের রেষ ধরে বিজেপি রাজ্য সভাপতি শুভেন্দুর বন্দনায় মুখরিত হলেন এবার। দিলীপ ঘোষ বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে তৃণমূল কংগ্রেসে সবথেকে যোগ্য নেতা শুভেন্দু অধিকারী। গঙ্গার ওপারে ওঁর থেকে যোগ্য নেতা আর কেউ নেই। নন্দীগ্রাম আন্দোলনে শুভেন্দু অধিকারীর ভূমিকা অস্বীকার করা যাবে না কোনওমতেই।'
বিজেপি রাজ্য সভাপতি আরও বলেন, 'মুকুল রায়ের দলত্যাগে বিজেপির কী লাভ হবে, কী আদৌ লাভ হবে না সেটা বড় কথা নয়, আসল কথা হল তৃণমূলের কতটা ক্ষতি হল। তৃণমূলের যে ক্ষতি হল, তা বলাই বাহুল্য।' মোট কথা তৃণমূলের ক্ষতিসাধনই বিজেপির এখন একমাত্র উদ্দেশ্য। বিজেপি সার ভেবেছে তৃণমূলের ক্ষতি হলেই তাঁদের লাভ। মুকুল রায়-রা বিজেপিতে যোগ দিলেন কি না, তা মুখ্য নয়, তৃণমূল ছাড়লেন এটাই অনেক বিজেপির কাছে।
রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, 'দিলীপ ঘোষ তাঁর মন্তব্যে বোঝাতে চেয়েছেন, শুভেন্দু তৃণমূলে যোগ্য সম্মান পাননি। শুভেন্দুকে সেরার মর্যাদা দেওয়া হয়নি। তাঁকে আড়ালে রাখা হয়েছে। বিজেপিতে এলে তিনি যোগ্য সম্মান ও মর্যাদা পাবেন।' উল্লেখ্য শুভেন্দুর মতো নেতাকে হঠাৎই যুব সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তার বদলে প্রথমে সৌমিত্র খান ও পরে ভাইপো অভিষেককে যুব সভাপতির পদ দেওয়া হয়। সেইসময় শুভেন্দুর পদ খর্ব করে দেওয়া হয়। পরবর্তী সময়ে সেই ক্ষতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রলেপ দেন তাঁকে পরিবহণ মন্ত্রী করে।
স্বাভাবিকভাবেই এইসব কারণে মুকুল রায়ের পর শুভেন্দু অধিকারীকে টার্গেট করছে বিজেপি। বছর দুয়েক আগে মুকুল রায় যখন দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন, তখনই মুকুল রায়ের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর নামও জড়িয়েছিল বিজেপিতে আসার ব্যাপারে। সেইসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শক্ত হাতে তা রোধ করেছিলেন। এবার মুকুলকে আর ধরে রাখতে পারেননি। দলে যথাযত গুরুত্ব না শুভেন্দু কি এবার সেই মুকুলের পথই অনুসরণ করবেন? তা-ই লাখ টাকার প্রশ্ন।
শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, 'সাধারণ মানুষের প্রশংসা ছাড়া আর কারও সার্টিফিকেটের আমার দরকার নেই। মা-মাটি-মানুষের সঙ্গে থাকতে পেরেছি। মানুষের আশীর্বাদ পেয়েছি, তাতেই আমার সব পাওয়া হয়ে গিয়েছে।'