বিজেপি এক-তৃতীয়াংশ ওয়ার্ডে প্রার্থীই দিতে পারেনি, গোপন রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি
সোমবার চার পুরনিগমের ভোটর ফল প্রকাশের পরই দামাম বাজা শুরু হয়ে যাবে ১০৮ পুরসভা ভোটের। কিন্তু এই ১০৮ পুরসভার লড়াইয়ে কি তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারবে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি?
সোমবার চার পুরনিগমের ভোটর ফল প্রকাশের পরই দামাম বাজা শুরু হয়ে যাবে ১০৮ পুরসভা ভোটের। কিন্তু এই ১০৮ পুরসভার লড়াইয়ে কি তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারবে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি? বিজেপির সাম্প্রতিক ময়নাতদন্তের রিপোর্ট কিন্তু আশঙ্কার বার্তা রেখে গেল।
২৭ ফেব্রুয়ারি ১০৮ পুরসভার ভোট গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে মনোনয়ন পর্ব সারা হয়ে গিয়েছে। এই পর্বে দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের প্রধান চ্যালেঞ্জার তথা রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি সমস্ত ওয়ার্ডে প্রার্থী দিতে পারেনি। ফলে পুরভোটের এই মহাসংগ্রাম ফিকে হয়ে যেতে বসেছে। ইতিমধ্যে বহু পুরসভা জিতে গিয়েছে তৃণমূল। এখন দেখা যাচ্ছে আরও অনেক ওয়ার্ডে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না বিজেপি।
এ প্রসঙ্গে এই প্রশ্ন উঠছে য়ে, তবে কি তৃণমূলের সন্ত্রাসের কারণেই বিজেপি প্রার্থী দিতে পারল না সমস্ত ওয়ার্ডে। নাকি বিজেপির প্রার্থী না দেওয়ার পিছনে রয়েছে সাংগঠনিক দুর্বলতা? সম্প্রতি দলগত ময়নাতদন্তে বিজেপি কার্যত স্বীকার করে নিচ্ছে, শুধু তৃণমূলের সংন্ত্রাস নয়, বিজেপির সাংগঠনিক দুর্বলতাও বহুলাংশে দায়ী। শুধু সন্ত্রাসের তত্ত্বকে খাঁড়া করে লাভ নেই।
সূত্রের খবর, বিজেপির গোপন রিপোর্টে রয়েছে কিছু পুরসভায় তৃণমূলী সন্ত্রাসে তাঁরা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে। জোর করে মনোনয়ন তুলে নিয়েছেন প্রার্থীরা। কেউ ভয়ে সরে গিয়েছেন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাংগঠনিক দুর্বলতাকে দায়ী করা হয়েছে। পরিস্থিতি এমনই জায়গায় দাঁড়িয়েছে, বিজেপি স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি, কতগুলি ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে।
রাজ্য বিজেপির একাংশ অবশ্য জানিয়েছে, বিজেপি এবার মোট ২২৭২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। সেই হিসেবকে শিরোধার্য মানলে দুই-তৃতীয়াংশ আসনে বিজেপি প্রার্থী দিতে পেরেছে। এক-তৃতীয়াংশ আসনে বিজেপি প্রার্থী দিতে পারেনি। ফলে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ আসনে তৃণমূলকে লড়াই দিতে পারছে না বিজেপি। হয় ওই সমস্ত কেন্দ্রে কংগ্রেস বা বামফ্রন্টের কোনও প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াই হবে, নতুবা তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হবে।
কলকাতা পুরসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বিজেপিক একাংশ দাবি করেছিল, দলের নেতা-কর্মীদের একটা বড় অংশ নিষ্ক্রিয়। প্রার্থীরা অভিযোগ করেছিলেন, কোনও নেতাকে তাঁরা ডাকলে পান না। তৃণমূলের বিরুদ্ধে তাহলে তাঁরা কাদের ভরসায় লড়বেন। দেখা যায় এবার কলকাতা পুরভোটে ধরাশায়ী হয়েছে বিজেপি। সোমবার চার পুরনিগমের ভোটেও এমন কিছু হতে চলেছে বলে আভাস বিজেপির আগাম কর্মসূচি ঘোষণায়। ফলে রাজ্যে তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ জানানোর অস্ত্র মজুত নেই বিজেপির তূণে, সেটাই প্রমাণিত।