বিজেপিতে আরও অনেকে পদ হারানোর আশঙ্কায়, নেতা পরিবর্তনে নেতৃত্ব বদল আসন্ন
বিজেপিতে আরও অনেকে পদ হারানোর আশঙ্কায়, নেতা পরিবর্তনে নেতৃত্ব বদল আসন্ন
বিজেপির রাজ্য সভাপতি পদে দিলীপ ঘোষের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। বাংলার নির্বাচনে হেরে নেতৃত্ব বদলরে পথে হেঁটেছে বিজেপি। এবার রাজ্য কমিটিতেও রদবদলের তোড়জো়ড় শুরু হতে চলেছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, রাজ্য কমিটিতে রদবদল আসন্ন, সেই কারণই বর্তমান ও প্রাক্তন রাজ্য সভাপতিকে দিল্লিতে তলব করেছেন অমিত শাহ-জেপি নাড্ডারা।
রাজ্যে সাংগঠনিক রদবদল আসন্ন, দিল্লিতে বৈঠক
ভবানীপুর উপনির্বাচনের প্রচারপর্ব শেষ হতেই দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার ও দলের রাজ্য সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী ছুটে গিয়েছেন দিল্লি। মঙ্গলবার জেপি নাড্ডা ও অমিত শাহের সঙ্গে তাঁদের বৈঠকের কথা। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজ্যে সাংগঠনিক রদবদল করতেই জরুরি বৈঠকে বসছেন তাঁরা।
দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের মিশেলে নতুন রাজ্য কমিটি
বিধানসভা নির্বাচনের পর বিজেপি ছেড়েছেন অনেকেই। অনেককে নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সভাপতি বদলের পর এবার রাজ্য কমিটিতেও রদবদল আসবে, এটাই স্বাভাবিক। দলের বেশ কিছু নেতার দায়িত্ব পরিবর্তন হতে পারে। বিজেপি উত্তরবঙ্গকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাইছে। দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের মিশেলে নতুন রাজ্য কমিটি হতে পারে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
বিজেপি নতুন করে শুরু করতে চাইছে বঙ্গে
দিলীপ ঘোষ দু-দফায় রাজ্য সভাপতি হয়েছিলেন। একজন তিনবথর করে দু-দফায় সর্বোচ্চ ৬ বছর সভাপতি থাকতে পারেন। ২০১৫-র ডিসেম্বরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি মনোনীত হওয়ার পর দিলীপ ঘোষ তাঁর ছ-বছরের মেয়াদের প্রায় শেষে চলে এসেছিল। ২০২১-এর নির্বাচনের পর রাজ্যে এবার পুর নির্বাচন ও পঞ্চায়েত নির্বাচন। তারপর ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন রয়েছে। ফলে বিজেপি নতুন করে শুরু করতে চাইছিল নতুন নেতৃত্বের হাত ধরে।
রাজ্যের সাধারণ সম্পাদকের সংখ্যা বাড়ানোও হতে পারে
বিজেপি রাজ্য সভাপতি হিসেবে যেমন তরুণ-তুর্কি নেতাকে বেছে নিয়েছিল, তেমনই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাইছে রাজ্য কমিটিতে নতুনদের সুযোগ দিতে। সূত্রের খবর, বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন পাঁচ জন, তাঁদের তিনজনকে সরানো হতে পারে। আবার রাজ্যের সাধারণ সম্পাদকের সংখ্যা বাড়ানোও হতে পারে।
রাজ্য কমিটিতে মহিলা মুখ কে, নজরে দিল্লির বৈঠক
রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে। উত্তরবঙ্গ থেকে একাধিক নেতাকে রাজ্য কমিটির বিভিন্ন পদে আনা হতে পারে। দেবজিৎ সরকারের মতো নেতাকে এবার গুরুত্বের আসনে বসানো হতে পারে। সংগঠনে বড় পদ পেতে পারেন উত্তরবঙ্গের সাংসদ ও বিধায়করা। রাজ্য কমিটিতে মহিলা মুখ হিসেবে কাকে রাখা হয় তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে।
কেন্দ্রীয়মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে রাজ্যের সংগঠনে গুরুত্ব!
রাজ্য থেকে দুই কেন্দ্রীয়মন্ত্রীকে সরিয়ে সংগঠনে আনার কথা আগেই জানানো হয়েছিল। দুই কেন্দ্রীয়মন্ত্রীর মধ্যে বাবুল সুপ্রিয় ইতিমধ্যেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। অপরজন হলেন দেবশ্রী চৌধুরী। তাঁকে বিজেপি রাজ্য সংগঠনে আনতে পারে। দেবশ্রীকে গুরুত্বর আসনেই বসাতে পারে বিজেপি।
মুকুল-ঘনিষ্ঠ নেতাদের নিয়ে জল্পনুা রাজ্য বিজেপিতে
মুকুল রায় বিজেপি ছেড়েছেন ২০২১-এর নির্বাচনের পরই। তাঁর তৃণমূলে য়োগদানের পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছিল মুকুল-ঘনিষ্ঠ নেতাদের নিয়ে। বিজেপির রাজ্য কমিটিতে মুকুল-ঘনিষ্ঠ বহু নেতা রয়েছেন। তাঁদের কী অবস্থান হবে, বা দল তাঁদের নিয়ে কী অবস্থান নেবে? দলের অবস্থান এতদিনে স্পষ্ট যে মুকুল-ঘনিষ্ঠ নেতারা, যাঁরা দলে বর্তমান নিষ্ক্রিয় তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। বা কম গুরু্তের কোনও পদে বসানো হতে পারে।
বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব পরিবর্তনে পদ খোয়ানোর আশঙ্কা
মুকুল রায় দল ছাড়ার পর যাঁদের নিয়ে জল্পনা চলছিল, তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এখনও অনেকে ঘরওয়াপসির অপেক্ষায় রয়েছেন। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসও তাঁদের নিয়ে হঠকারী সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে না। ফলে ঝুলে রয়েছে তাঁদের ভবিষ্যৎ। তৃণমূলের দরজাও বন্ধ, বিজেপিতে তাঁদের গুরুত্ব কমেছে। এখনও তাঁদের অনেকে গুরুত্বশালী পদে থাকলেও, বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব পরিবর্তনে তাঁরা পদ খোয়াতে পারেন।
২০২৪-এর নির্বাচনকে পাখির চোখ, বিজেপিতে পরিবর্তন
মোট কথা, ২০২৪-এর নির্বাচনকে পাখির চোখ করে বিজেপি আবার কোমর বাঁধতে চাইছে। নতুন নেতৃত্ব নিয়ে তাঁরা বাংলার নির্বাচনে তৃণমূলকে ধরাশায়ী করার ঘূঁটি এখন থেকে সাজানো শুরু করে দিয়েছে। তার উপর সামনে রয়েছে পুরসভা নির্বাচন, বাকি চার কেন্দ্রের উপনির্বাচন। তারপর ২০২৩-এ পঞ্চায়েত নির্বাচন। এতগুলি ফ্যাক্টরকে রেখে রাজ্যের সংগঠন সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বিজেপি।