বনধ জমেনি পাহাড়ে, অস্তিত্ব রক্ষায় চা বাগান আন্দোলনে ‘আশ্রয়’ খুঁজছেন মোর্চা প্রধান
পাহাড়ে সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন সত্ত্বেও প্রতিটি সরকারি অফিসে হাজিরা নজর কেড়েছে। মমতার প্রশাসনের কড়া অবস্থানে কোণঠাসা হয়েই কি চা বাগানে ধর্মঘটকে সমর্থন গুরুঙ্গের?
পাহাড়ে জমেনি বনধ। বিপাকে পড়ে এবার তাই চা বাগান বনধকেই হাতিয়ার করতে উঠে পড়ে লাগল মোর্চা নেতৃত্ব। মান বাঁচাতে বিমল গুরুং এবার চা বাগান বনধকে সমর্থন জানিয়ে উত্তরবঙ্গের চার জেলায় সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিলেন। এই বনধ-রাজনীতির মাধ্যমে মোর্চা সুপ্রিমো চা শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলছেন বটে, কিন্তু রাজনৈতিক মহল মনে করছে নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতেই এটি নয়া চাল গুরুংয়ের।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার পাহাড় পা দেওয়ার পর থেকেই একের পর এক আন্দোলন গড়ে তুলেছে মোর্চা। আর প্রতিটি আন্দোলনেই ধাক্কা খেয়ে এসেছেন বিমল গুরুং। মুখ্যমন্ত্রীকে কালো পতাকা দেখানো থেকে মন্ত্রিসভার বৈঠকের প্রতিবাদ, শেষমেশ পাহাড়ে অনির্দিষ্টকালের বনধেও মমতার কড়া অবস্থানে এক ঘরে হয়ে গিয়েছে মোর্চা। মমতার নির্দেশে প্রশাসনের কড়া অবস্থানে পাহাড়ে সরকারি অফিস বনধের কর্মসূচিতে সে অর্থে সাড়া পড়েনি। এবার তাই সঙ্কটে পড়ে চা বাগান ধর্মঘটকে সমর্থন করার পরিকল্পনা নিয়েছেন গুরুং।
সোমবার থেকে থেকে পাহাড়ে শুরু হয়েছে সরকারি অফিসের বিরুদ্ধে মোর্চার অসহযোগ আন্দোলন। শনিবারই গুরুং ঘোষণা করেছিলেন, পাহাড়ের সমস্ত সরকারি অফিস সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা হবে। সোম ও বৃহস্পতিবার শুধু ব্যাঙ্ক খোলা থাকবে। কিন্তু বিমল গুরুংয়ের সেই ডাকে সাড়া দেয়নি পাহাড়।
এদিন গুরুংয়ের ডাক উপেক্ষা করে সরকারি অফিসে হাজিরা ছিল ভালোই। মহিলা মোর্চার নেতৃত্বে পিকেটিংও সেভাবে জমাতে পারেননি মোর্চা। পুলিশ-প্রশাসন, সেনা-আধা সামরিক বাহিনীর নজরদারিতে পাহাড় আপাত শান্ত। কোনওরকম জঙ্গি আন্দোলনেরও সাড়া মেলেনি। এমতাবস্থায় বিমল গুরুং চা শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে চা বাগান বনধকে সমর্থন করলেন। ডাক দিলেন দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় সাধারণ ধর্মঘটের।
উল্লেখ্য, জয়েন্ট ফোরামের ডাকে চা বাগানে দু'দিনের ধর্মঘট চলছে। চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ও আইন প্রণয়নের দাবিতে সোমবার সকাল থেকেই অচল দার্জিলিংয়ের ৪৫টি চা বাগান। উত্তরবঙ্গের অন্যান্য চা বাগানেও এই বনধের আঁচ পড়েছে। জয়েন্ট ফোরামই চা বাগান বনধের সঙ্গে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেয় মঙ্গলবার। এই জয়েন্ট ফোরামের মধ্যে বামপন্থী সংগঠনগুলিও রয়েছে। দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের পক্ষ থেকেও এই বনধকে সমর্থন জানানো হয়। সমর্থন করে মোর্চা। রাজ্য সরকার যথারীতি এই বনধের বিরোধিতায় নামছে।