সিপিএমকেই সমর্থন জমি কমিটির, পাত্তা দিচ্ছেন না আরাবুল - ভাঙড়ের এবার কোন দিকে
ভাঙড় আন্দোলন সংহতি কমিটি লোকসভা নির্বাচন ২০১৯-এ সিপিআইএম প্রার্থীকেই সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে টিএমসি নেতা আরাবুল ইসলাম বলেছেন, এতে কোনও প্রভাব পড়বে না।
ভাঙড়ের দাঁড়িপাল্লা কোন দিকে ভারী? স্পষ্ট নয় কোনও দলের কাছেই। প্রথমে নিজেরা প্রার্থী দেওয়ার কথা বলেও পরে সিপিআইএম প্রার্থীকেই কে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছে ভাঙড়ের জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি। কিন্তু এই সমর্থনকে বিশেষ পাত্তা দিতে নারাজ আরাবুল ইসলাম তথা তৃণমূল কংগ্রেস। ভিতরে ভিতরে কিন্তু চিন্তিত তৃণমূল।
ভাঙড় বিধানসভার ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চলে কোন দলের কত সমর্থক আছেন সেই আছেন সেই ছবি মোটামুটি সব পক্ষের কাছেই পরিষ্কার। কিন্তু ধাঁধায় ফেলেছে পাওয়ার গ্রিড সাব স্টেশন অধ্যুষিত পোলেরহাট ২ গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চল। সেখানকার মানুষ তাঁদের ভোট কোন পক্ষকে উজাড় করে দেবেন তা নিয়ে সন্দিহানে দুই পক্ষই। যদিও তৃণমূল, বাম দুই দলেরই দাবি, পাওয়ার গ্রিড অঞ্চলে তাঁরাই ফেভারিট।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর এবার লোকসভাতেও তৃণমূলকে আটকাতে সিপিআইএম প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য-কেই সমর্থন করছে ভাঙড়ের জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটি। এই নিয়ে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের সঙ্গে জমি কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বের একান্ত বৈঠক-ও হয়েছে।
দিন দুই আগে মাছিভাঙা গ্রামে এক ঘরোয়া বৈঠকে বিকাশবাবুর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন দিপালী ভট্টচার্য্য, বিশিষ্ঠ আইনজীবি ভারতী মুৎসুদ্দি। বৈঠকে ছিলেন জমি কমিটির মুখপাত্র অলিক চক্রবর্তী-সহ মির্জা হাসান, অলি মহম্মদ, সাজারুল ইসলাম, মোশারেফ হোসেন ও আরও কয়েকজন শীর্ষ নেতৃত্ব। সেখানে ঠিক হয় ভাঙড়ে বাম প্রার্থীর হয়ে প্রচার করবে জমি কমিটি। ভাঙড় থেকে বিকাশ বাবু-কে যতটা বেশি সম্ভব ভোটের লিড দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। এপ্রসঙ্গে জমি কমিটির নেতা মির্জা হাসান বলেন, 'বিকাশদা এসেছিলেন, একটা ঘরোয়া বৈঠক হয়েছে নির্বাচন সংক্রান্ত। এর বেশি কিছু এখন বলতে পারব না।'
এই সমর্থনকে অবশ্য আদৌ গুরুত্ব দিচ্ছে না তৃণমূল কংগ্রেস। ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম বলেছেন, 'আমাদের সরকার গোটা রাজ্যে কী উন্নয়ন হয়েছে আর জমি কমিটির লোকেরা কী ভাবে দুর্নীতি করেছেন - সেটা তুলেই প্রচার হবে। ২০১৪ সালে আমরা পোলেরহাট ২ গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চল থেকে সাড়ে সাত হাজার ভোটের লিড পেয়েছিলাম। এবার সেটা আরও বাড়বে।'
মুখে
আরাবুল
যাই
বলুন,
জমি
কমিটির
এই
সিদ্ধান্তে
কিছুটা
হলেও
চিন্তার
ভাঁজ
পড়েছে
তৃণমূলের
অন্দরমহলে।
কারণ,
ভাঙড়ে
গত
বিধানসভা
নির্বাচনে
শাসকদলের
একচেটিয়া
ভোটব্যাঙ্কে
থাবা
বসিয়েছিল
জমি
রক্ষা
কমিটি।
পাওয়ার
গ্রিড
বিরোধী
আন্দোলনের
মাত্রা
যত
বেড়েছে,
ততই
তৃণমূলের
ভোট
কমেছে।
বিগত
লোকসভা
নির্বাচনে
তৃণমূল
প্রার্থী
সুগত
বসু
ভাঙড়
থেকে
৬০
হাজার
ভোটের
লিড
পেয়েছিলেন।
বিধানসভা
নির্বাচনে
সেখানে
তৃণমূল
প্রার্থী
রেজ্জাক
মোল্লার
জয়ের
ব্যবধান
নেমে
যায়
২০
হাজারে।
শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় এই চিত্র আরও বদলে গিয়েছিল। পাওয়ার গ্রিড বিরোধিতাকে সামনে রেখে অলীক চক্রবর্তীর নেতৃত্বে জমি কমিটি তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছিল। ৬টি আসনে তাদের প্রার্থী জয়ী হয়। এবার কী হয় সেটাই এখন দেখার।