জনপ্রিয় সাহিত্যিক সুচিত্রা ভট্টাচার্যের জীবনাবসান
কলকাতা, ১৩ মে : আচমকাই অসুস্থ হয়ে মঙ্গলবার রাতে নিজের ঢাকুরিয়ার বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন জনপ্রিয় সাহিত্যিক সুচিত্রা ভট্টাচার্য। চিকিৎসকরা জানিয়েছেম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। আজ তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
মৃত্যুকালে সুচিত্রা দেবীর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। মঙ্গলবার রাতে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এরপর রাত ১০ টা ৪৫ মিনিট নাগাদ হৃদযন্ত্র কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অতি জনপ্রিয় সাহিত্যিক ছিলেন সুচিত্রাদেবী। শুধু লেখা নয়, সাম্প্রতিক বিভিন্ন ইস্যুতে নিজের আওয়াজ উঠিয়েছেন তিনি। বর্তমান সমাজে মহিলাদের সমস্যা ও কষ্ট নিয়েও বহুবার কলম তুলেছেন তিনি।
১৯৫০ সালের ১০ জানুয়ারি ভাগলপুরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। এযাবৎ প্রায় ২৪টি সাহিত্য এবং অগুণিত ছোট গল্প লিখেছেন অকালে প্রয়াত এই লেখিকা। তাঁর প্রথম সাড়া জাগানো উপন্যাস 'কাঁচের দেওয়াল'। এছাড়াও 'কাছের মানুষ', 'হেমন্তের পাখি', 'অলীক সুখ', 'গভীর অসুখ'-এ মতো অনবদ্য উপন্যাসের সৃষ্টি করেছিলেন সুচিত্রা দেবীই।
শহুরে মধ্যবিত্ত জীবন ও সম্পর্কের টানাপোড়েনই সুচিত্রা ভট্টাচার্যের লেখায় বেশি ধরা পড়ত। তাঁর লেখা থেকে 'দহন', 'ইচ্ছে', 'রামধনু', 'অলীক সুখ'-এর মতো বেশ কিছু জনপ্রিয় ছবি তৈরি হয়েছে বাংলায়। সম্প্রতি পুজোর লেখায় হাত দিয়েছিলেন, কিন্তু তা অসম্পূর্ণই রয়ে গেল।
দহন ও অলীক সুখ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। খবর পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে ছুটে আসেন তিনি।
সুচিত্রা ভট্টাচার্যের লেখা হিন্দি, তামিল, তেলুগু, মালায়লম, ওড়িয়া, মারাঠি, গুজরাতি, পাঞ্জাবি ও ইংরাজি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। নিজের সৃষ্টির জন্য ননজানাগুড়ু থিরুমালাম্বা জাতীয় পুরস্কার (১৯৯৬), কথা পুরস্কার (১৯৯৭), তারাশঙ্কর পুরস্কার (২০০০), শরৎ পুরস্কার (২০০২)-এর মতো সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। এছাড়াও ভারত নির্মান পুরস্কার, সাহিত্য সেতু পুরস্কার, শৈলজানন্দ স্মৃতি পুরস্কারও অর্জন করেছেন তিনি।
শহরে না থাকলেও ঝাড়গ্রাম থেকে খবর পেয়ে শোকবার্তা পাঠিয়েন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। "সুচিত্রার প্রয়াণে বাংলা সাহিত্য শুধু এক জন জনপ্রিয় নয়, অত্যন্ত শক্তিশালী কলমকে হারাল। আরও অনেক লেখা তাঁর কাছ থেকে পাওয়ার ছিল আমাদের।"