চাওয়ালা প্রধানমন্ত্রী হলে মমতা নন কেন, চপ শিল্প নিয়ে গবেষণায় বাংলার অধ্যাপক
চাওয়ালা প্রধানমন্ত্রী হলে মমতা নন কেন, চপ শিল্প নিয়ে গবেষণায় বাংলার অধ্যাপক
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একবার এমন একজন ব্যক্তির কথা বলেছিলেন যিনি চপ ভেজে বিক্রি করে তাঁর ভাগ্য পরিবর্তন করেছিলেন। বেকারত্ব মোকাবিলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরামর্শ দিয়ে বলেছিলেন, চপ ভাজাকে একটি শিল্পে পরিণত করা যেতে পারে। একইভাবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও মন্তব্য করেছিলেন পকোড়া তৈরি করাও একটি কর্মসংস্থান।
চপ শিল্প নিয়ে গবেষণা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে যত সমালোচনা বা উপহাস করা হোক না কেন, তাঁদের এই দাবি বা পরামর্শ এখন গবেষণাপত্রে স্থান পেয়েছে। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক তাপস পাল ও তাঁর ছাত্র কনা সরকার ভাজা শিল্প নিয়ে একটি গবেষণাপত্র তৈরি করেছেন। তাঁরা গবেষণাপত্রে উল্লেখ করেছেন, এই কাজকে ভালোভাবে লালন-পালন করা হলে এটি রাজ্যের জন্য একটি লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হতে পারে।
‘চপ শিল্প’ নিয়ে কেন উপহাস
রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক তাপস পাল এবং তাঁর ছাত্র কনা সরকার 'ভাজা শিল্প' নিয়ে একটি গবেষণাপত্র নিয়ে এসেছেন। পাল বলেন, যদি ভালভাবে লালন-পালন করা হয়, তবে এটি রাজ্যের জন্য একটি লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অধ্যাপক তাপস পাল 'চপ শিল্প' গবেষণা নিয়ে কয়েকজন লোককে সোশ্যাল মিডিয়ায় উপহাস করতে দেখে কিছুটা বিরক্ত হয়েছিলেন।
চাওয়ালা যদি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন
অধ্যাপক তখন বলেছিলেন, চাওয়ালা যদি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন এবাং তারপর তিনি বলেন দেশের সমস্ত ব্যবসায় উন্নতি হওয়া উচিত এবং সম্মান করা উচিত, তাহলে চপ শিল্প নিয়ে এত উপহাস কেন? প্রধানমন্ত্রীও তো পকোড়া শিল্পে কর্মসংস্থানের কতা তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। যদি কেএফসি খাদ্য শিল্পের একটি অংশ হতে পারে, তবে আমার গ্রামীণ ভাই-বোনেরা চপ ভাজে বা পকোড়া তৈরি করে তখন সেটি খাদ্য শিল্পের অংশ হবে না কেন।
সামাজিক বিষয়ে গবেষণায় আগ্রহী অধ্যাপক
অধ্যাপককে এমন প্রশ্নবাণের মোকাবিলা করতেও হয়েছিল যে, তাঁর গবেষণা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারা অনুপ্রাণিত কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গৌণ, আমি সবসময় সামাজিক বিষয়ে আগ্রহী। অতীতে মুচি, রিকশাওয়ালা, টোটোওয়ালা এবং বিভিন্ন উপজাতি সম্প্রদায়ের উপর গবেষণা করেছি।
২৩টি পরিবারের সমীক্ষার ভিত্তিতে
বাংলার মালদহ জেলার তিনটি পঞ্চায়েত এলাকায় ২৩টি পরিবারের সমীক্ষার ভিত্তিতে অধ্যাপক তাপস পাল ধারণায় উপনীত হয়েছেন যে, ভাজার দোকানগুলি গড়ে প্রায় ৯ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা মাসিক আয় করে। এরর তাঁর কাছে প্রশ্ন করা হয়েছিল, চপ বা পকোড়া ভাজাকে কি শিল্প বলা যায়। তার উত্তরে অধ্যাপক বলেন, অবশ্যই শিল্প বলা যেতে পারে। যে কোনও জিনিসের ইনপুট, ম্যানুফ্যাকচারিং এবং আউটপুট থাকলে সেটাকে শিল্প বলা যেতে পারে।
কেন তা নিয়ে উপহাস হয় বুঝি না।
অধ্যাপকের কথায়, চপ বা যে কোনও ভাজা তৈরিতে কাঁচামাল লাগে। তাকে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে একটা নির্দিষ্ট জিনিসে রূপান্তরিত করা হয়। এবং তার বিপণন হয়। তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন চপ শিল্পের কথা বলেন, তখন তা ভুল হয় কী করে, কেন তা নিয়ে উপহাস হয় বুঝি না।
বড় অংশের দারিদ্র্যের হাত থেকে রক্ষা
অধ্যাপক তাপস পালের কথায়, এই জাতীয় ছোট ব্যবসাগুলি মহামারীর মতো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহায়তা করতে পারে, যখন লকডাউনের কারণে অনেক মানুষ চাকরি হারিয়েছিলেন, তখন তা সহায়ক হয়েছিল। এ ধরনের ব্যবসা কারও কারও জন্য অতিরিক্ত আয়ের একটি বড় উৎস হতে পারে। করোনার সময় একটি বড় অংশকে দারিদ্র্যের হাত থেকে রক্ষা করেছিল গ্রামীণ এই শিল্প।
সংগঠিত, মানসম্মত ও গুরুত্বশালী করতে
অধ্যাপক বলেন, তিনি আরও কিছু গবেষণার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্যোা পাধ্যায়ের কাছে তাঁর সুপারিশগুলি পাঠাবেন। এই জাতীয় ব্যবসাগুলি ধীরে ধীরে সংগঠিত ক্ষেত্র হিসেবে উঠে আসতে পারে। এবং এই ব্যবসার প্রতি সমর্থন বাড়তে পারে। ভাজা সম্পর্কিত ব্যবসাগুলিকে আরও সংগঠিত, মানসম্মত ও গুরুত্বশালী হওয়া উচিত।
Big Breaking: ২১ জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশে বড় চমক! তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন বিজেপির প্রাক্তন মন্ত্রী