কলকাতা পুরভোটে বিপর্যয় থেকে শিক্ষা! বাংলায় ঘুরে দাঁড়াতে নতুন টিম গড়ছে বিজেপি
কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর ঘুরে দাঁড়ানোর রাস্তা খুঁজছে বিজেপি। সামনেই হাওড়া-সহ শতাধিক পুরসভার ভোট। গেরুয়া শিবিরের লক্ষ্য তৃণমূলকে সমানে সমানে টক্কর দেওয়া। সে জন্য নতুন রাজ্য সভাপতি কি এবার নতুন টিম গড়তে চাইছেন? রাজনৈতিক মহল মনে করছে, নয়া রাজ্য কমিটি গড়ার লক্ষ্যেই দিল্লিতে ডাক পড়েছে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের।


বিজেপিকে পর পর তিনটি নির্বাচনে হারতে হয়েছে
দিলীপ ঘোষ অপসারিত হওয়ার পর বঙ্গ বিজেপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হতে হয়েছে বিজেপিকে। সবু মুখ রক্ষা তিন থেকে বেড়ে ৭৭ বিধায়ক হওয়ায়। কিন্তু সুকান্ত মজুমদার দায়িত্ব নেওয়ার পরও শ্রী ফেরেনি বিজেপির। বিজেপিকে পর পর তিনটি নির্বাচনে হারতে হয়েছে সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে আসার পর।

রাজ্য সভাপতিকে তলব কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্বের
বাংলার পাঁচ কেন্দ্রে উপনির্বাচন ও দুই কেন্দ্রে বকেয়া নির্বাচন পর্বে হারতে হয়েছে বিজেপিকে। তারপর কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে ভরাডুবি হতে হল তাদের। এই অবস্থায় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অখুশি দলের পারফরম্যান্সে। দলের বঙ্গে নেতৃত্বের গা-ছাড়াভাব আগেই সমালোচিত হয়েছে। রাজ্যে সবৃহকারী পর্যবক্ষেক অমিত মালব্য সবার সামনেই সমালোচনা করেছেন, পরামর্শ দিয়েছেন। তবু হুঁশ ফেরেনি বিজেপির। এবার রাজ্য সভাপতিকে তলব করে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কী পরামর্শ দেয়, সেটাই দেখার।

নয়া রাজ্য কমিটি গঠন করে চমক দেবে বিজেপি
বঙ্গ বিজেপিতে গোষ্ঠীকোন্দল বাসা বেঁধেছে, অসন্তোষ ও দুর্নীতির করাল ছায়া গ্রাস করেছে এবং সর্বোপরি সাংগঠনিক স্তরে অচলাবস্থা জারি হয়েছে, তার কিনারা করতেই সুকান্তকে তলব করা হয়েছে। এই টালমাটাল পরিস্থিতি থেকে রাজ্য বিজেপিকে বের করে আনতে রাজ্য কমিটিতে বদল আনা হতে পারে। নয়া রাজ্য কমিটি গঠন করে চমক দিতে পারে বিজেপি নেতৃত্ব।

নতুন রাজ্য কমিটিতে কারা স্থান পেতে পারে, জল্পনা
বিশেষ সূত্রের খবর, বঙ্গ বিজেপির রাজ্য কমিটি চূড়ান্ত করতেই রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে তলব করা হয়েছে। তিনি এদিনই দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবেন। এই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষকেও। বড়দিনের মধ্যেই নতুন রাজ্য কমিটি গঠন করা হতে পারে। সেখানে কারা স্থান পায় তা নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা।

রাজ্যের শতাধিক পুরসভা ভোটের আগে নতুন বিজেপি
২০ সেপ্টেম্বর দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে সুকান্ত মজুমদারকে রাজ্য সভাপতি পদে নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু নতুন রাজ্য কমিটি গঠন করা হয়নি। দিলীপ ঘোষের আমলের রাজ্য কমিটিই চলছে এতদিন। তারপর বিধানসভার বকেয়া দুটি কেন্দ্রের নির্বাচন হয়ে গিয়েছে, পাঁচ কেন্দ্রের উপনির্বাচন হয়েছে, সম্প্রতি হয়ে গেল কলকাতা পুরসভা নির্বাচনও। এখন সামনে রাজ্যের শতাধিক পুরসভার নির্বাচন বাকি।

নতুন টিম নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কোমর বেঁধে নামবে বিজেপি
সম্প্রতি কলকাতা পুরসভা ভোট বিপর্যয়ের পর বিজেপি নেতৃত্ব আর দেরি করতে চাইছে না। তাঁরা চাইছে নতুন কমিটি গড়ে রাজ্যের নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়তে। প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করাই তাঁদরে আশু কর্তব্য। তারপর রয়েছে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন, তার আগে তৈরি হতে হবে, কোমর বাঁধতে হবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে এবার কমিটিতে মহিলাদের বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হবে।

বিজেপির সাধারণ সম্পাদক স্তরে বেশ কিছু তাৎপর্যপূর্ণ রদবদল!
নতুন রাজ্য কমিটি ৩২ জনকে নিয়ে গঠন হলে অন্তত ৮ জন থাকবেন মহিলা সদস্য। বেশ কিছু নতুন মুখও আসতে পারে। গুরুত্ব বাড়বে উত্তরবঙ্গেরও। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক স্তরে বেশ কিছু তাৎপর্যপূর্ণ রদবদল আসতে পারে। সাধারণ সম্পাদক সংগঠন পদের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হতে পারে সহকারী পদ। আর বদল আসতে পারে শাখা সংগঠনগুলিতে।

দিলীপ ঘোষ ও সুকান্ত মজুমদারের অনুগামীদের সমন্বয়ে কমিটি
এখন প্রশ্ন, কারা নতুন মুখ হিসেবে আসতে পারে। আর কারা বাদ যেতে পারে পুরনো কমিটি থেকে। প্রথম কথা নতুন কমিটিতে স্থান হবে না মুকুল ঘনিষ্ঠ নেতাদের। এখনও অনেকে শাখা সংগঠনে রয়ে গিয়েছে। কারণ গতবারের কমিটিতে মুকুল রায়ের প্রভাব ছিল। তাঁর অনুগামীদের গুরুত্ব দিয়েই কমিটি গঠন করা হয়েছিল। দিলীপ ঘোষ ও মুকুল রায়ের অনুগামীদের মধ্যে সমন্বয় রেখেই কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এবার তা হতে পারে দিলীপ ঘোষ ও সুকান্ত মজুমদারের অনুগামীদের সমন্বয়ে।