নজরে বহরমপুর: ইন্দ্রনীল কি ইন্দ্রবধ করবেন, জল্পনা তুঙ্গে
চারটি বড় যুযুধান শিবির যথা তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস, বামফ্রন্ট এবং বিজেপি এখানে প্রার্থী দিয়েছে। ছোটোখাটো প্রার্থীরাও রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী ইন্দ্রনীল সেন, কংগ্রেসের অধীররঞ্জন চৌধুরী, বামফ্রন্টের প্রমথেশ মুখোপাধ্যায় এবং বিজেপি-র দেবেশকুমার অধিকারী। তবে ওয়াকিবহাল মহল বলছে, এখানে লড়াইটা হবে ত্রিমুখী। তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ইন্দ্রনীল সেন, কংগ্রেসের অধীররঞ্জন চৌধুরী এবং বামফ্রন্টের প্রমথেশ মুখোপাধ্যায়। বিজেপি এখানে জিতবে, সেটা কেউ স্বপ্নেও ভাবছে না।
ইন্দ্রনীল সেন
২০০৯
সালের
লোকসভা
নির্বাচনে
কংগ্রেসের
সঙ্গে
মহাজোট
হয়েছিল
তৃণমূল
কংগ্রেসের।
তাই
বহরমপুরে
সেইবার
লড়াইটা
ছিল
কংগ্রেস
বনাম
বামফ্রন্টের।
এবার
আসরে
ইন্দ্রনীল
সেন।
কিছুটা
চমক
দিয়েই
বহরমপুর
আসনে
তাঁকে
টিকিট
দিয়েছেন
মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়।
ইন্দ্রনীলবাবু
নিজে
দাবি
করেছেন,
তিনি
জিতবেন।
কারণ
গত
তিন
বছরে
মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়
নাকি
এত
ভালো
কাজ
করেছেন
বাংলায়,
মানুষ
ঢেলে
ভোট
দেবে
তাঁকে।
তিনি
জানান,
মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়
নিজেই
একটা
ব্র্যান্ড।
পাশাপাশি,
রবীন্দ্রসঙ্গীত
গাইয়ে
হিসাবে
যথেষ্ট
নামডাক
ইন্দ্রনীলবাবুর।
সেটাও
কাজে
লাগবে
বলে
মনে
করেন
তিনি।
অধীররঞ্জন চৌধুরী
বহরমপুরের 'মুকুটহীন বাদশা' বলা হয় অধীরবাবুকে। এখন রেল মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী। ১৯৯৯ সালে প্রথম লোকসভা ভোটে জেতেন। তার পর ২০০৪ এবং ২০০৯ সালেও জিতেছেন। অর্থাৎ তিন-তিনবার জিতেছেন বহরমপুর থেকে। তাঁর দাপটে একদা বাম দুর্গ বহরমপুর এখন কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি। তিনি মনে করেন, মোদী-হাওয়া খাটবে না বহরমপুরে। বন্যা হোক কিংবা জলকষ্ট, ছুটে যান তিনি। অর্থাভাবে কারও মেয়ের বিয়ে হচ্ছে না, কেউ কলেজে ভর্তি হতে পারছে না, সেখানেও ত্রাতা অধীর। এই দুর্দান্ত জনসংযোগ তাঁর সাফল্যের চাবিকাঠি। তবে অভিযোগ, বিরোধীদের 'ঠান্ডা' করতে অধীরবাবু পেশি প্রদর্শন করেন হামেশাই। পুরনো খুনের মামলায় রাজ্য সরকার কিছুদিন আগে পর্যন্ত তাঁর পিছনে পড়েছিল। ভরতপুর থানা, কেতুগ্রাম থানা এবং নবগ্রাম থানায় তাঁর বিরুদ্ধে এখনও পাঁচটি মামলা ঝুলে রয়েছে।
কিন্তু
একটা
পাটিগণিত
মাথায়
রাখতে
হবে।
গতবার
অধীরবাবু
পেয়েছিলেন
৫৬.৯
শতাংশ
ভোট।
তাতে
তৃণমূল
কংগ্রেসের
ভোট
ছিল।
এবার
সেটা
ভাগাভাগি
হবে।
ফলে
জনসংযোগ
ভালো
হলেও
পাটিগণিতের
মারপ্যাঁচে
তিনি
ছিটকে
যাবেন
না
তো?
অধীরবাবু
অবশ্য
একদম
তা
মনে
করেন
না।
প্রমথেশ মুখোপাধ্যায়
২০০৯
সালেও
অধীররঞ্জন
চৌধুরীর
বিরুদ্ধে
লোকসভা
ভোটে
লড়েছিলেন
আরএসপি-র
প্রমথেশ
মুখোপাধ্যায়।
স্বচ্ছ
ভাবমূর্তি
রয়েছে
প্রমথেশবাবুর।
কোনও
ফৌজদারি
মামলা
নেই।
অধীর
চৌধুরীর
শিক্ষাগত
যোগ্যতা
যেখানে
দশম
শ্রেণী
পাশ,
সেখানে
প্রমথেশবাবুর
ডবল
এমএ।
গতবার
৩৭.৩
শতাংশ
ভোট
পেয়েছিলেন
তিনি।
তাঁর
দাবি,
রাজ্য
সরকারের
'জনবিরোধী'
কাজকর্মে
মানুষ
বিরক্ত।
পাশাপাশি,
ইউপিএ
সরকার
গত
দশ
বছরে
দেশকে
খাদের
কিনারায়
নিয়ে
গিয়েছে।
এবার
মানুষ
তাই
তাঁকেই
জয়ী
করবেন।
উপসংহার
বোঝাই
যাচ্ছে,
বহরমপুর
লোকসভা
আসনে
লড়াইটা
হবে
হাড্ডাহাড্ডি।
অধীররঞ্জন
চৌধুরী
তথা
কংগ্রেসকে
দু'টি
প্রচণ্ড
শক্তির
মোকাবিলা
করতে
হবে।
একটা
মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতা,
যাকে
বলে
অ্যান্টি-ইনকাম্বেন্সি,
তা
এখানে
কতটা
খাটে
সেটা
দেখার।
বহরমপুরে
মোদী-হাওয়া
খাটবে
না
বলে
যে
দাবি
করেছেন
অধীরবাবু,
সেটা
খুব
একটা
হয়তো
ভুল
নয়।
কারণ
পাশের
আসন
মুর্শিদাবাদের
মতো
এখানেও
সংখ্যালঘু
ভোটার
রয়েছেন
ভালো
পরিমাণে।
এই
ভোটের
সিংহভাগ
যে-দিকে
যাবে,
তারাই
ফায়দা
তুলবে।
পুনশ্চ
২০০৯ সালে অধীররঞ্জন চৌধুরী পেয়েছিলেন ৫৪১,৯২০ ভোট। প্রমথেশ মুখোপাধ্যায় পেয়েছিলেন ৩৫৪,৯৪৩ ভোট। ১৮৬,৯৭৭ ভোটে জেতেন অধীরবাবু। তৃতীয় স্থানে থাকা বিজেপি-র বিদ্যুৎ হালদার পেয়েছিলেন মাত্র ২৭,৬১৯ ভোট। বিএসপি, সমাজবাদী পার্টিও প্রার্থী দিয়েছিল। কিন্তু তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল এক শতাংশেরও কম।