ভেষজ ছবিতে পোঁচ হাতের, রঙের মেলায় মেতেছে গ্রাম
ভেষজ ছবিতে পোঁচ হাতের, রঙের মেলায় মেতেছে গ্রাম
৫০০ বছরেও ফিকে হয় না রং, এমন যাদু রয়েছে এ বাংলার গ্রামে পুরনো পাতার স্মৃতি। লাল- সেগুন গাছের পাতা,খয়ের সাথে চুন মিশিয়ে৷ এছারা এক ধরনের গাছের ফল থেকে। নীল- অপরাজিতা ফুল। সবুজ - বরবটি, সিম, কেশুতে পাতা। হলুদ - হলুদ গাছের শেকর। কলো- বাশঁ বা চাল পুড়িয়ে। সাদা - কুসুম মাটি। আর এই রঙের খেলা দেখা গেল পটচত্র মেলায়।
হাওড়া থেকে যেকোনো মেদনিপুর গামি ট্রেনে বালিচক স্টেশন, সেখান থেকে বাসে(ময়নার বাস) বা ট্রেকারে নামতে হবে নয়া গ্রামে। সেখানে হয় এই মেলা। পিংলার মাটির দেয়াল গুলি এখন ইটের দেয়ালে পরিনত হয়েছে। এখন অনেক শিল্পি অনেক চিত্রকার অনেকেই জগৎ বিখ্যাত এমনকি রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পিদের সংখাও বেরেছে। তো পুরো গ্রামের সবার একটাই পরিচয় "চিত্রকার"।
এখন আর এদের ভয় নেই হারিয়ে যাওয়ার বাংলা নাটক ডট কম আর সরকারি সহজগিতায় আজ তারা সত্যিই শিল্পী। দেশ বিদেশ থেকে সবাই আসছে এদের কর্মকান্ড দেখতে। লাল মাটির এই দেশ আকাশে বাতাশে শুধুই লালের সমাহার। মেলা বলতে এখানে কোন স্টল বসে না, তাদের প্রত্যেকের ঘর-উঠান-দেয়াল রঙে রাঙিয়ে ওঠে। পট চিত্র কিন্তু শুধু মাত্র ছবি নয়, তাতে বাঁধা থাকে অনেক গল্প- গান। মূলত রামায়ন, মহাভারতের কাহিনি বা মঙ্গলকাব্য, পূরানের নানা ঘটনা চিত্র ও গানের মাধ্যমে সকলের সামনে তুলে ধরা। কিন্তু বর্তমানে নতুন প্রজন্মের শিল্পিরা তাঁদের নতুন চিন্তা ধারার সফল প্রয়োগ ঘটাছেন তাদের শেল্পের, তাদের পটে উঠে এসেছে "নর্ভয়া" র কথা, ৯/১১ এর কথা, আবার গ্রাম্য স মাজের আচার অনুষ্ঠান যমন "মাছেদের বিয়ে" কত কি মজার সব গল্প গাথা।
এই
হারিয়ে
যাওয়া
শিল্প
কে
নতুন
করে
প্রানের
সঞ্চার
ঘটিয়েছে
"বাংলা
নাটক.
কম"।
বিশ্বর
দরবারে
পটচিত্রকে
পৌঁছে
দাওয়াই
নয়
প্রথাগত
পট
এখন
শারি,
টি-সার্ট,
ছাতা,
ওড়না,
বিভিন্ন
সোপিস
এর
উপর
হাত
পাখা,
মোরা,
ঘর
সাজাবার
উপকরন
উপর
সমান
ভাবে
সমাদৃত
হছে।
বাড়ির
নিকানো
দেয়াল
যেন
হয়ে
ওঠে
ক্যানভাস।
বাড়ি
রূপ
নেয়
মন্দিরের।
শুধু শিল্প সৃষ্টি বা তার উতকর্ষ সাধনে থেমে না থেকে তারা এখন হয়ে উঠেছে বিপনিনি। চিত্রকার দের কথায় " শিল্পী বাঁচলে,তবেই বাঁচবে শিল্প"। প্রতিটি ঘর হয়ে উঠেছে এক একটি শিল্প বিপনিন কেন্দ্র, সাথে চলছে কর্মশালা, ভেষেজ জিনিস দিয়ে কিভাবে রং তৈরী করা যায় সকলকেই দেখানো চলছে এই কর্মশালায়। গ্রামের সামনেই গড়ে উঠেছে মঞ্চ সেখানে ৩দিন ধরে হয় বাউল, ছো, ঝুমুর নানা সংস্কৃতির অনুষ্ঠান।
বিবর্তনের যুগে সবাই ফেব্রিক রঙ ব্যবহার করছে এই নিয়ে দুলালা চিত্রকার, রবিন চিত্রকার, ব্যাপন চিত্রকার। তবে পটে এখনো তাঁরা ভেষজ রং ব্যবহার করে থাকে। নুরদিন চিত্রকর, গুরুপদ চিত্রকরের মতে প্রাকৃতিক রং এর ঔজ্জ্বল্যতা কৃত্রিম রঙে আসে না। নারকেলের মালায় বেলের আঁঠার সঙ্গে ফুল,পাতা,ছাল মিশিয়ে তৈরী হয় এই প্রাকৃতিক রং এবং এই রঙে জল ও আঁঠার পরিমান যদি ঠিক ঠাক হয় তাহলে তা ৫০০ বছরেও নষ্ট হবে না।
পটচিত্র মেলা কিন্তু আর পাঁচাটা মেলার থেকে অনেক আলাদা। শুধুমাত্র ইতিহাস সংস্কৃতি কে বাঁচিয়ে রাখা বা কিছু সংখ্যক মানুষকে জিবিকার ব্যবস্থা করে দেওয়া নয়, এই মেলা যুগ যুগ ধরে সম্প্রতি বহন করে চলেছে। এই শিল্পের সাথে যুক্ত প্রতিটি শিল্পি ধর্মে মুসলমান, তারা প্রতিদিন নামাজ পরে হিন্দু দেব দেবির মাহত্য প্রচার করে ফলে তাঁরা হয়ে উঠেছেন এক একজন চিত্রকার। দিনের শেষে যতোই আমাদের মধ্যে মতভেদ দন্দ থাকুক না কেন সবার আগে আমরা তো মানুষ তাই না। আজকে যখন চারিদিকে হিংসা, ভালোবাসতে মানুষ ভুলে যাচ্ছে সেই সময় দাঁড়িয়ে "পটচিত্র মেলা" এক পথ পদর্শক।
মমতার কথাই সত্যি! প্রমাণ পেয়ে গিয়েছেন সাংসদ, আসানসোলে দরাজ সার্টিফিকেট শত্রুঘ্নের