‘আমি নিরাপরাধ, আসল অপরাধী জুহিরাই’, শিশুপাচারকাণ্ডে বোমা ফাটালেন চন্দনা চক্রবর্তী
‘আমি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। জুহি আমার সংস্থার যাবতীয় ঝামেলা মিটিয়ে দেবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল। আসল অপরাধী জুহিরাই।’
জলপাইগুড়ি, ২৮ ফেব্রুয়ারি : জলপাইগুড়ি শিশুপাচার কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ ধৃত চন্দনা চক্রবর্তীর। নিজেকে নিরাপরাধ বলে দাবি করে বিজেপির মহিলা মোর্চা নেত্রী জুহি চৌধুরীর ঘাড়েই সমস্ত দায় চাপালেন তিনি। বললেন, 'আমি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার। জুহি আমার সংস্থার যাবতীয় ঝামেলা মিটিয়ে দেবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল। আসল অপরাধী জুহিরাই।'
জলপাইগুড়ির 'আশ্রয়' হোমের আড়ালে শিশু পাচার চক্র চালাত বলে অভিযোগ ওঠে সংস্থার কর্ণধার তথা এলাকার প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষিকা চন্দনা চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। তাঁকে গ্রেফতার করার পরই এই ঘটনায় নাম জড়িয়ে যায় বিজেপি নেত্রী জুহি চৌধুরী ও তাঁর বাবা বিজেপি নেতা রবীন্দ্রনাথ চৌধুরীর। সিআইডি জানতে পারে দত্তক ব্যবসার নাম করে তাঁরা আন্তর্জাতিক শিশু পাচার চক্র চালাত। আর এই কাজ সুষ্ঠুভাবে চালাতে দিল্লিতে দরবার করতেন জুহিই।
চন্দনা চক্রবর্তীকে নিয়ে জুহি পৃথক সংস্থা গঠন করে দত্তক ব্যবসা করতে চেয়েছিলেন বলেও জানতে পারেন তদন্তকারীরা। এমতাবস্থায় চন্দনা চক্রবর্তী সাফ জানালেন, 'যদি কোনও অন্যায় হয়ে থাকে, তবে তা করেছেন জুহিরাই। আমার সঙ্গে কোনও কথা হয়নি বিজেপি নেতাদের। জুহিই রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ও কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে কথা বলেছিলেন। আমি পাশের ঘরে ছিলাম।'
জুহির বিরুদ্ধে চন্দনা চক্রবর্তীর এই দায় চাপানোর পরও বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জুহির পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, জুহির বয়স কত? ২৪-২৫ বছর। আর চন্দনাদেবী হোম চালাচ্ছেন ১৫ বছর। উনি হোম চালিয়ে বাড়ি করেছেন। অনেক কিছু করেছেন। তাঁর অনেক জানাশোনা ছিল। শাসক দলের নেতাদের সঙ্গেও ওঠাবসা ছিল চন্দনাদেবীর। শাসকদলের যুবনেতা যিনি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন, গ্রেফতারের দাবি তুলেছেন বিজেপি-র বিরুদ্ধে, তিনিই আইনজীবী হিসেবে অন্তত ৪০ জন শিশু বিক্রির কাগজে সই করেছেন।
বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে শাসক দল। যাকে তাকে ধরে জেলে পুরে দেবে, তা মেনে নেওয়া হবে না। এ ব্যাপারে নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। চন্দনা চক্রবর্তীরা এখন শাসক দলের সঙ্গে রয়েছেন। জুহির সঙ্গে দেখা করেছে, সাহায্য চেয়েছে বলে সে এই ঘটনায় জড়িত এ তত্ত্বে বিশ্বাসী নই।