ভারতে বছরে ১ লক্ষ শিশু খোয়া যায়, শিশু চুরি ও পাচারে দেশের মধ্যে শীর্ষে পশ্চিমবঙ্গ
জাল নোটের কারবার, বেকারত্ব ইত্যাদিতে ইতিমধ্যেই দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। এবার নতুন তথ্যে দেখা যাচ্ছে, শিশু চুরি বা খোয়া যাওয়ার মামলাতেও একেবারে শীর্ষে এরাজ্য।
যৌন দাসত্বের কারবারে ভারতের ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গ
পরিসংখ্যান বলছে, সারা দেশে বছরে গড়ে প্রায় ১ লক্ষ শিশু খোয়া যাচ্ছে। ২০১১-২০১৪ সাল পর্যন্ত এই সংখ্যাটি প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ। শিশু চুরি করে বা ভুলিয়ে নিয়ে এসে তাদের দিয়ে যৌনদাসত্ব বা অন্য রোজগারের কাজে লাগিয়ে দেওয়া হয়।
গত মাসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র দফতর একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে সারা দেশে শিশু খোয়া যাওয়ার মামলাতেও সর্বাগ্রে পশ্চিমবঙ্গ। এরাজ্যের মোট ১৪ হাজার ৬৭১টি শিশু এক বছরে খোয়া গিয়েছে যা সারা দেশের মোট খোয়া যাওয়া শিশুর এক-পঞ্চমাংশের বেশি।
কীভাবে পাকিস্তানে তৈরি জাল ভারতীয় নোট বাংলাদেশ হয়ে ঢুকছে পশ্চিমবঙ্গে
পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, সারা দেশে খোয়া যাওয়া শিশুর মধ্যে ৭০ শতাংশই মেয়ে। এক্ষেত্রে ভারত প্রতিবেশী পাকিস্তান ও চিনকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে। কারণ পাকিস্তানে সংখ্য়াটা মাত্র ৩ হাজার ও চিনে বছরে ১০ হাজার মেয়ে শিশু খোয়া যায়। ভারতে তার চেয়ে সংখ্যাটা অনেক অনেক বেশি।
মানব পাচারের ক্ষেত্রেও পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, অসম, ওড়িশা, বিহার একেবারে উপরের দিকে রয়েছে। এই কয়েকটি রাজ্য থেকেই সারা দেশের মোট পাচারের ৭৫ শতাংশ হয়ে থাকে। এই পাচারের প্রায় ৫০ শতাংশই হয় শিশু পাচার।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, পাচার হওয়া মেয়েটির পরিবারের আর্থিক সঙ্কটের সুবিধা নিয়ে জোর করে মেয়েকে পরিবারের সামনেই তুলে নিয়ে গিয়ে বেচে দেওয়া হয়। মুম্বই, দিল্লিতে এমন ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে।
তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা দেখেছেন, সারা দেশে এই পাচারকারীদের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক ও সিন্ডিকেট রয়েছে। সেটাকে কাজে লাগিয়েই পাচারকারীরা সহজেই কাজ হাসিল করছে। এরপরে ছেলে বা মেয়েটিকে নিয়ে গিয়ে কাজে লাগানো হচ্ছে।
ছেলেদের পাচার করে বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে তাদের বন্ডে সই করিয়ে নিয়ে কাজ করতে বাধ্য করা হয়। এছাড়া মেয়েদের নিয়ে গিয়ে যৌনদাসত্বে কাজে লাগানো হয়, অথবা বিত্তবান কারও কাছে বেচে দেওয়া হয়।