এখনই বার্ষিক চুক্তি থেকে সুশীলকে ছেঁটে ফেলতে রাজি নয় ফেডারেশন, ভাবমূর্তি নষ্টের আশঙ্কা
এখনই বার্ষিক চুক্তি থেকে সুশীলকে ছেঁটে ফেলতে রাজি নয় ফেডারেশন, ভাবমূর্তি নষ্টের ভয়
দিল্লির কুস্তিগীর খুনের ঘটনায় কিংবদন্তি সুশীল কুমারের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছে ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশন। এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ভারতীয় কুস্তির ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংস্থার সহকারি সচিব বিনোদ তোমর। তবে তিনি এও জানিয়েছেন যে চাপে পড়ে কোনও হঠকারি সিদ্ধান্ত নিতে চায় না ফেডারেশন। দুটি অলিম্পিক থেকে ভারতকে পদক এনে দেওয়া সুশীল কুমারকে এখনই বার্ষিক চুক্তি থেকে ছেঁটে ফেলা হবে না বলেও জানিয়েছেন তোমর।
অলিম্পিক কুস্তিতে ভারতের ৫৬ বছরের পদকের অপেক্ষা শেষ হয়েছিল সুশীল কুমারের হাত ধরে। ২০০৮ সালের বেজিং গেমসে দেশকে তিনি ব্রোঞ্জ দিয়েছিলেন। ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকেও রূপো জিতে ভারতকে গর্বিত করেছিলেন সুশীল। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ও কমনওয়েলথ গেমস থেকে দেশকে সোনা এনে দেওয়া কিংবদন্তি কুস্তিগীর ২০১৮ সালে ফেডারেশনের বার্ষিক চুক্তির এ গ্রেডে উন্নিত হন। সে অনুযায়ী সুশীলকে বার্ষিক ৩০ লক্ষ টাকা ভাতা দিচ্ছে ভারতীয় কুস্তি সংস্থা। খুনের মামলা রুজু হলেও এখনই ভারতের একমাত্র বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন কুস্তিগীরের থেকে সেই সুবিধা কেড়ে নেওয়া হবে না বলে ফেডারেশনের তরফে জানানো হয়েছে।
দিল্লির তরুণ কুস্তিগীরের খুনের ঘটনায় এফআইআর দায়ের হওয়া তারকা সুশীল কুমারের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশ জারি করেছে পুলিশ। কিংবদন্তি ভারতীয় কুস্তিগীরের খোঁজে তল্লাশি চলছে। ঘটনায় সাক্ষী হিসেবে ভাগতু ও রবীন্দর নামের আরও দুই কুস্তিগীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সুশীল এবং তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে খুন সংক্রান্ত তথ্য ও প্রমাণ জড়ো হয়েছে বলে তদন্তকারীদের তরফে জানানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পর হরিদ্বারে চলে গিয়েছিলেন সুশীল কুমার। এক আশ্রমে গা ঢাকা দিয়েছিলেন ভারতীয় কুস্তিগীর। এরপর ঋষিকেশ হয়ে সুশীল ফের দিল্লি ফেরেন বলে জানতে পারে পুলিশ। ধরা পড়ার ভয়ে তিনি বারবার নিজের অবস্থান পরিবর্তন করছেন বলেও জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা স্করপিও গাড়ি থেকে পাঁচটি কার্তুজ সহ ডবল ব্যারেল গান এবং দুটি কাঠের লাঠি উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে পাঁচটি গাড়ি। মৃত কুস্তিগীরের পরিবারের সদস্য এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী ঘটনাস্থলে ছিলেন সুশীল কুমার। যিনি ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন। বাকি অভিযুক্তদেরও খোঁজ চালাচ্ছে দিল্লি পুলিশ। স্টেডিয়ামের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অপরাধীদের চিহ্নিতকরণের চেষ্টা চলছে।
ঘটনায় আহত দুই কুস্তিগীরের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, মৃত সাগর ধনকড়কে উচিত শিক্ষা দিতে তাঁর মডেল টাউনের বাড়ি থেকে তুলে আনেন সুশীল ও তাঁর সঙ্গীরা। যদিও সংঘর্ষের আসল কারণ এখনও জানতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার সঙ্গে কেনই বা যুক্ত হল সুশীল কুমারের নাম, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনায় যে ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের ভাবমূর্তি বেশ খানিকটা নষ্ট হয়েছে, তা মেনে নিয়েছেন সংস্থার সহকারি সচিব বিনোদ তোমর।