বিশ্ব ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের পদকজয়ী কারা? সবচেয়ে বেশি পদক কার ঝুলিতে?
বিডব্লুএফ ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ ব্যাডমিন্টনের দুনিয়ায় সবচেয়ে ঐতিহ্যশালী প্রতিযোগিতা। অলিম্পিক ও অল ইংল্যান্ড ওপেনের পাশাপাশি তাই বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে পদক জয়ের প্রত্যাশায় নিজেদের সেরাটা উজাড় করে দেন শাটলাররা। ১৯৭৭ সালে প্রথম হয় এই প্রতিযোগিতা। ১৯৮৩ অবধি হতো তিন বছর অন্তর। তারপর থেকে ২০০৫ অবধি তা হয়ে দাঁড়ায় দ্বিবার্ষিক প্রতিযোগিতা। এরপর থেকে অলিম্পিকের বছরটি বাদ দিয়ে প্রতি বছরই হয়ে থাকে। করোনা পরিস্থিতিতে অবশ্য গত বছর অলিম্পিক ও বিশ্ব ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগিতা দুটোই হয়েছিল। এই প্রতিযোগিতা থেকে ভারত মোট ১২টি পদক জিতেছে। একটি ডাবলসে, বাকিগুলি সিঙ্গলসে।
সফলতম সিন্ধু
পিভি সিন্ধু বিশ্ব ব্যাডমিন্টনের ইতিহাসে ভারতের সফলতম শাটলার। কমনওয়েলথ গেমসে গোড়ালির চোট পাওয়ার জেরে সিন্ধু এবারের বিশ্ব ব্য়াডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপে নামতে পারছেন না। তিনি ২০১৯ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়ে সোনা জিতেছিলেন। সিন্ধুর ঝুলিতে রয়েছে বিশ্ব ব্যাডমিন্টনের পাঁচটি পদক। যে নজির দুবারের অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন চিনের নিং ঝাং ছাড়া আর কারও নেই। ২০১৩ সালে প্রথমবার বিশ্ব ব্য়াডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপে নেমেই অষ্টাদশী সিন্ধু ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। অলিম্পিক পদকজয়ী তথা বিশ্বের প্রাক্তন ১ নম্বর চিনের ওয়াং শিজিয়ানকে হারিয়ে। সেমিফাইনালে সিন্ধুকে হারিয়েছিলেন সেবারের সোনাজয়ী রাচানক ইন্তানন। ২০১৪ সালেও সিন্ধু ব্রোঞ্জ জেতেন। প্রথমবার ফাইনালে উঠেছিলেন ২০১৭ সালে। জাপানের নোজোমি ওকুহারার কাছে পরাস্ত হয়ে রুপো জিতে সন্তুষ্ট থাকতে হয় সিন্ধুকে। ২০১৮ সালে ফাইনালে হেরে ফের রুপো জেতেন, এবার তাঁকে হারিয়েছিলেন ক্যারোলিনা মারিন। ২০১৯ সালে ওকুহারাকে ৩৮ মিনিটের মধ্যে উড়িয়ে প্রথম ভারতীয় হিসেবে বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে চ্যাম্পিয়ন হন সিন্ধু।
সাইনার জোড়া পদক
সাইনা নেহওয়ালের দিকে এবারের বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে নজর থাকবে। সাইনা বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে দুটি পদক জিতেছেন। ২০১৫ সালে সাইনা প্রথমবার বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে পদক জেতেন, সে বছরই তিনি সিঙ্গলসে বিশ্বের ১ নম্বর শাটলার হয়েছিলেন। সাইনা দারুণ ছন্দে থেকে ২০১৫-র বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে ফাইনালে পৌঁছেছিলেন। কিন্তু ফাইনালে ক্যারোলিনা মারিনের কাছে পরাস্ত হয়ে রুপো জেতেন। ২০১৭ সালে প্রথমবার বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে ভারতের দুই মহিলা শাটলার পদক জেতেন। সিন্ধু জেতেন রুপো। সাইনা ওকুহারার কাছে সেমিফাইনালে হেরে গিয়েছিলেন। সেই ব্রোঞ্জ জেতার পর থেকে আর সাইনা বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে পদক জিততে পারেননি। সেই খরা এবার মিটবে কিনা সেটাই দেখার।
প্রথম পদক পাড়ুকোনের
বিশ্ব ব্যাডমিন্টন থেকে ভারতকে সর্বপ্রথম পদকটি এনে দিয়েছিলেন প্রকাশ পাড়ুকোন। ১৯৮৩ সালে তিনি সিঙ্গলসে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। এরপর ২৮ বছর আর কেউ বিশ্ব ব্যাডমিন্টন থেকে দেশকে পদক এনে দিতে পারেননি। সেমিফাইনাল অবধি মাত্র ২৭ পয়েন্ট খুইয়েছিলেন প্রকাশ। ইন্দোনেশিয়ার ইচুক সুগিয়ার্তোর বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে প্রথম গেম জেতার পরও শেষ অবধি হেরে যান। ব্রোঞ্জ জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। সুগিয়ার্তো সেবার সোনা জিতেছিলেন।
২৮ বছর পর
বিশ্ব ব্যাডমিন্টনের ডাবলসে এখনও অবধি মাত্র একটি পদকই এসেছে ভারতের ঝুলিতে। অবাছাই হিসেবে খেলতে নেমে ২০১১ সালের বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে মহিলাদের ডাবলসে ব্রোঞ্জ জিতেছিল জোয়ালা গুট্টা ও অশ্বিনী পোন্নাপ্পার জুটি। দ্বিতীয় রাউন্ডে তাঁরা উড়িয়ে দিয়েছিলেন প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় বাছাইকে। এরপর একাদশ ও দ্বাদশ বাছাই জুটিও ভারতীয় জুটির কাছে পরাস্ত হয়। যদিও পঞ্চম বাছাই জুটির কাছে সেমিফাইনালে হেরে গুট্টা-পোন্নাপ্পা জুটি ব্রোঞ্জ জেতে। প্রকাশ পাড়ুকোনের পদকের পর এটিই ছিল বিশ্ব ব্যাডমিন্টন থেকে ভারতের দ্বিতীয় পদক।
প্রণীথের ব্রোঞ্জ
প্রকাশ পাড়ুকোনের পর দ্বিতীয় ভারতীয় পুরুষ শাটলার হিসেবে ২০১৯ সালের বিশ্ব ব্যাডমিন্টন থেকে পদক জেতেন বি সাই প্রণীথ। সেমিফাইনালে সেবার তাঁর স্বপ্নের দৌড় থামান শীর্ষবাছাই তথা সেবারের সোনাজয়ী কেন্তো মোমোতা। সেমিফাইনাল অবধি জায়ান্ট কিলার প্রণীথকে শেষ অবধি ব্রোঞ্জ জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়।
শ্রীকান্তের রুপো
বিশ্বের প্রাক্তন ১ নম্বর কিদাম্বি শ্রীকান্তও বিশ্ব ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে পদক জিতেছেন। লক্ষ্য সেনের বিরুদ্ধে হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচ জিতে তিনি ফাইনালে উঠেছিলেন গতবারের বিশ্ব ব্য়াডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপে। প্রথম ভারতীয় পুরুষ শাটলার হিসেবে তিনি বিশ্ব ব্যাডমিন্টন সিঙ্গলসের ফাইনালে ওঠেন। যদিও সিঙ্গাপুরের লোহ কিয়ান ইউয়ের কাছে হেরে যাওয়ায় রুপো জেতেন শ্রীকান্ত।
লক্ষ্য সেনের ব্রোঞ্জ
এবারের বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে নজর থাকবে কমনওয়েলথ গেমসে সিঙ্গলসে সোনাজয়ী লক্ষ্য সেনের দিকে। গত বছর শ্রীকান্তের কাছে সেমিফাইনালে হেরে তিনি ব্রোঞ্জ জেতেন। প্রথম রাউন্ডে বাই পেলেও সেমিফাইনাল অবধি তাবড় প্রতিপক্ষকে হারিয়েছিলেন লক্ষ্য।
ভাইচুং এআইএফএফ সভাপতি নির্বাচনে লড়বেন, ক্লাবগুলির স্বার্থরক্ষায় ফিফা ও এএফসিকে অনুরোধ কেন্দ্রের