ভয়াবহ ট্রেন ডাকাতির শিকার বাংলার জিমন্যাস্টিক দল, চোট লক্ষাধিক টাকা এবং কাগজপত্র
ভয়াবহ ট্রেন ডাকাতির শিকার বাংলার জিমন্যাস্টিক দল, চোট লক্ষাধিক টাকা এবং কাগজপত্র
ভয়াবহ ট্রেন ডাকাতির শিকার হল বাংলা জিমন্যাস্টিক দল। শুক্রবার ভোর রাতে লক্ষাধিক টাকা সহ ক্রেডিট কার্ড, গুরুত্বপূর্ণ নথি সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিস ভর্তি স্যুটকেশ খোয়া গিয়েছে।
খেলো ইন্ডিয়ায় অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে দু'চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে হওয়া থেকে অমৃতসর মেলে উঠেছিল বাংলার জিমন্যাস্টিক দল। কিন্তু এই ট্রেন যাত্রাই কাল হয়ে দাঁড়াবে তা কল্পনাও করতে পারেননি গোটা বাংলা দল এবং দলের সঙ্গে সফররত ম্যানেজার।
শুক্রবার আনুমানিক রাত আড়াইটে থেকে সাড়ে তিনটের মধ্যে মোকামা এবং পাটনা সাহিবের মধ্যে বাংলা দলের ম্যানেজার দিলীপ দাসের স্যুটকেশ চুরি যায়। ওই স্যুটকেসে ছিল এক লক্ষেরও বেশি টাকা, ক্রেডিট কার্ড, মোবাইল ফোন এবং প্রায় ৩০ জনের যে জিমন্যাস্টিক দল যাচ্ছে তাঁদের প্রতিযোগীতায় অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি সমস্ত নথিপত্র। বাংলা দলের সঙ্গেই সফররত দুই ইন্টারন্যাশনাল জাজে স্যুটকেস খোয়া গিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন অফিসিয়াসলের একাধিক বস্তু চুরি হয়েছে।
এই ট্রেন ডাকাতির কারণে খেল ইন্ডিয়ায় নামাটাই কঠিন হয়ে গেল। এ দিন বিধ্বস্ত কন্ঠে বাংলা দলের ম্যানেজার দিলীপ দাস বলেন, "রাত আড়াইটে থেকে সাড়ে তিনটের মধ্যে এই ভায়বহ ট্রেন ডাকাতি হয়েছে। টাকা-পয়সার কথা যদি বাদও দেওয়া হয় কিন্তু এই ছেলে-মেয়েগুলোর কী হবে। ওই স্যুটকেসে ছিল সমস্ত ডকুমেন্টস। এইগুলো ছাড়া ওই প্রতিযোগীতায় নামতেই পারবে না ওরা।"
একই সঙ্গে রেল কর্তৃপক্ষের অসহযোগীতা এবং দুর্ব্যাবহারের অভিযোগও করেন তিনি। তিনি জানিয়েছে, এই ঘটনা বুঝতে পারার পরই চেন টেনে ট্রেন থামান তাঁরা। রেল পুলিশ এবং টিটি এসে সমস্ত ঘটনা শোনার পর তড়িঘড়ি ট্রেন ছেড়ে দেয় এবং জানায় পাটনা স্টেশনে গিয়ে সমস্ত কথা শোনা হবে। কিন্তু আদতে কোনও রকমই সহযোগীতচা রেল কর্তৃপক্ষ করেনি। দিলীপ দাস বলেন, "চেন টেনে ট্রেন দাঁড় করানোর পর আরপিএফ-টিটি কিছু কথা বলেই চলে যায় এবং জানায় পাটনায় গিয়ে সমস্ত কথা শোনা হবে। পাটনাতে গিয়েও কিছু হয়নি। আরপিএফ অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেছে। আমরা এফআইআর করতে চেয়েছিলাম কিন্তু সেই ক্ষেত্রেও কোনও সাহায্য পাইনি।"
শনিবার ভোরে অমৃতসর মেল পৌঁছবে অম্বালায়। রেলের তরফ থেকে বলা হয়েছে ওখানে গিয়ে এফআইআর নেওয়া হবে। কিন্তু রেলের কথায় বিশ্বাস করতে পারছেন না বাংলা দলের সঙ্গে থাকা ম্যানেজার। তিনি অত্যন্ত চিন্তায় রয়েছেন আদৌ এই দল খেল ইন্ডিয়ায় নামবে পারবে কি না তা নিয়ে। তিনি বলেন, "অম্বালাতে যাওয়ার পর কেন এফআইআর নেওয়া হবে। এই ঘটনা যেখানে ঘটেছে সেখানে তো এই অভিযোগ নেওয়া যেতে পারতো। আমরা হতাশ রেলের ভূমিকায়। শেষ পর্যন্ত এই ছেলে-মেয়েগুলো হরিয়ানায় নামতে পারবে কি না, সেটাই সব থেকে বড় চিন্তার। এফআইআর রিপোর্ট তো দেখাতেই হবে সেখানে। দুপুরে একজনও কেউ কিছু খায়নি। সবাই প্রচন্ড ভয়ে এবং সংশয়ের মধ্যে রয়েছে।"
উল্লেখ্যে, বাংলা দলের সঙ্গে সফররত ইন্টারন্যাশনাল জাজ ডা: অংশুমান বন্দ্যোপাধ্যায় রেলের বিভিন্ন দফতরকে ট্যাগ করে একটি টুইট করেন এবং তার পর নড়েচড়ে বসেছে রেলে। যদিও এখনও আশ্বাসবানী ছাড়া কিছুই পাননি তারা।