দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ, দেখা যাবে কি ভারত-পাক দ্বৈরথ - কী বলছে মোদি সরকার
হাতে আর মাত্র ২৩ দিন। আগামী ২৮ নভেম্বর থেকেই ওড়িশার ভূবনেশ্বরে শুরু হতে চলেছে পুরুষদের হকি বিশ্বকাপ। এই নিয়ে তৃতীয়বার ভারতে আয়োজিত হচ্ছে এই টুর্নামেন্ট।
ক্রিকেটের মতো হকি মাঠেও অন্যতম জনপ্রিয় দ্বৈরথ ভারত বনাম পাকিস্তান। শেষ তারা মুখোমুখি হয়েছিল ওমানের রাজধানি মুস্কাতে। এশিয়া চ্যাম্পিয়নশিপ হকির সেই ম্য়াচ অবশ্য প্রবল বৃষ্টিতে ভেস্তে যায়। এরপর হকিপ্রেমীরা আশা করে আছেন দেশের মাটিতে হকি টার্ফে দুই দলের একটি জমজমাট ম্যাচ দেখার। কিন্তু তা আদৌ সম্ভব হবে কিনা তাই নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

ভিসা সমস্যায় পাক দল
গত মাসেই ভারতে বিশ্বকাপ খেলতে আসার জন্য তাদের খেলোয়াড় ও সাপোর্ট স্টাফদের জন্য ভারত সরকারের কাছে ভিসার আবেদন জানিয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু দুই দেশের রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে সেই ভিসার আবেদন আদৌ মঞ্জুর হবে কিনা তাই নিয়ে সংশয় রয়েছে। টুর্নামেন্ট শুরুর ২৩ দিন আগেও এক সর্বভারতীয় পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে মোদী সরকার পাকিস্তানের হকি দলকে ভিসা দেওয়া হবে কিনা সেই বিষয়টি বিবেচনার স্তরেই রেখে দিয়েছে।

রাজনীতির থাবা পড়েছে খেলার মাঠেও
দুই দেশের ক্রীড়াপ্রেমীরাই দুই দলকে খেলার মাঠে আরও বেশি করে মুখোমুখি দেখতে চাইলেও খেলার মাঠেও পড়েছে দুই দেশের রাজনৈতিক উত্তেজনার থাবা। বন্ধ হয়ে গিয়েছে দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট সিরিজ। হকি টার্ফও এর বাইরে নেই। ২০১৬ সালে হকি নিয়ে রাজনীতির খেলার বিষয়টি প্রকট হয়ে গিয়েছিল। ভারতে আয়োজিত জুনিয়র হকি টুর্নামেন্ট থেক নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিল পাকিস্তান। তারা অভিযোগ করেছিল, ভার ভিসা ইস্যু করতে দেরি করাতেই তাদের ওই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। বাস্তবে ভিসার আবেদনের শেষ তারিখ পার হয়ে যাওয়ার পরে পাকিস্তান আবেদন করায় ভিসা দিতে দেরি হয়েছিল।

এবার কী হবে?
একটি সূত্রের খবর, যেহেতু বিশ্বকাপ একটি বহুদেশীয় টুর্নামেন্ট, তাই এক্ষেত্রে ভারত সরকার সম্ভবত শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান হকি দলকে ভিসা দেবে। জানা গিয়েছে পাকিস্তানকে যাতে বিশ্বকাপে অংশ নিতে অনুমতি দেওয়া হয়, তার জন্য আন্তর্জাতিক হকি ফেডারেশনের তরফেও ভারত সরকারের কাছে অনুরোধ রাখা হয়েছে। তবে শেষ কথা বলবে ভারত সরকারের শীর্ষ মহলই।

ভারতের মাটিতে পাকিস্তান হকি দল
ভারতের মাটিতে শেষবার পাকিস্তানের হকি দল খেলেছিল ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের সেই ম্যাচে ভারতকে পরাজিত হতে হয় পাকিস্তানের কাছে। কিন্তু সেই ম্য়াচ জিতেও হেরেছিলেন পাকিস্তানিরা। কারণ, জয়ের পরই ভারতীয় সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে কুরুচিকর অঙ্গভঙ্গী করেছিলেন সেই পাক দলের খেলোয়াড়রা।

সাম্প্রতিক ভারত-পাক রাজনৈতিক সম্পর্ক
গত সেপ্টেম্বর মাসেই দুই দেশের বিদেশ মন্ত্রীদের এক বৈঠকে বসার কথা ছিল। কিন্তু বৈঠকের কথা ঘোষণা ঘোষণার ২৪ ঘন্টা যেতে না যেতেই তা ভেস্তে দেয় ভারত। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে লেখা নয়া পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের এক চিঠির প্রেক্ষিতেই এই বৈঠকের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে অবশ্য সেই ঘোষণা ফিরিয়ে নিয়ে জানানো হয়, অন্তত পরের বছর ভারতের সাধারণ নির্বাচন না মেটা অবধি দুই দেশের মধঅযে কোনও আলাপ-আলোচনায় আগ্রহী নয় মোদী সরকার। ইমরান খান সম্প্রতি জানিয়েছেন ভারতের নির্বাচন মিটলে তিনি আরও একবার ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসার চেষ্টা চালাবেন।