কমনওয়েলথ গেমস ভিলেজে মানসিক নির্যাতন! লাভলিনার অভিযোগে শোরগোল, প্রস্তুতিতে ধাক্কা
টোকিও অলিম্পিকে দেশকে ব্রোঞ্জ এনে দিয়েছিলেন অসমের বক্সার লাভলিনা বরগোঁহাই। প্যারিস অলিম্পিকে পদকের রং পরিবর্তনের প্রত্যয়ও শোনা গিয়েছিল তাঁর গলায়। কমনওয়েলথ গেমসে ভারতের সম্ভাব্য পদকজয়ীদের তালিকায় অন্যতম লাভলিনা বরগোঁহাই। কিন্তু গেমস শুরুর আগে লাভলিনা আনলেন গুরুতর অভিযোগ। জানালেন ব্যাঘাত ঘটছে প্রস্তুতিতেও।
সরব লাভলিনা
বার্মিংহ্যামে কমনওয়েলথ গেমসে লাভলিনা নামবেন ৭০ কেজি বিভাগে। গেমসে তাঁর ইভেন্টে নামার আট দিন আগে লাভলিনা আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছেন কীভাবে তাঁকে গেমস ভিলেজে মানসিক নির্যাতন ও হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে। লাভলিনার কথায়, যে ধরনের হেনস্থা আমার সঙ্গে হচ্ছে তা গভীর দুঃখের সঙ্গেই সকলকে জানাচ্ছি। আমাকে অলিম্পিকে পদক জিততে যে দুই কোচ সহায়তা করেছিলেন তাঁদের এখানে আমার প্রস্তুতির সময় থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁদের মধ্যে একজন দ্রোণাচার্য পুরস্কার পাওয়া কোচ সন্ধ্যা গুরুং।
— Lovlina Borgohain (@LovlinaBorgohai) July 25, 2022 |
কমনওয়েলথ গেমসের প্রস্তুতি ব্যাহত
লাভলিনার অভিযোগ, এর আগেও তাঁর প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটানো হয়েছে, প্রশিক্ষণে কোচেদের না রেখে। হাতজোড় করে আবেদন নিবেদনেও কাজ হয়নি। এমনকী অনেক দেরিতে ট্রেনিং ক্যাম্পে কোচেদের যোগ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। এভাবেই বারেবারে তাঁতে মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ লাভলিনার। সন্ধ্যা গুরুংকে কমনওয়েলথ গেমস ভিলেজে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়নি। ফলে লাভলিনার প্রস্তুতি ধাক্কা খেয়েছে। লাভলিনার আরেক কোচকে ভারতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। তিনি অনুরোধ করা সত্ত্বেও কাজ হয়নি বলে জানান লাভলিনা। এই পরিস্থিতিতে কীভাবে নিজের খেলায় ফোকাস করবেন সেটাই বুঝতে পারছেন না লাভলিনা।
বিএফআইয়ের প্রতিক্রিয়া
বক্সিং ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার কর্তাদের দিকেই লাভলিনার এই অভিযোগের তির। তিনি আরও জানান, এই কারণেই গত বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে তাঁর পারফরম্যান্স ভালো হয়নি। রাজনীতির শিকার হয়ে কমনওয়েলথ গেমসে তিনি ব্যর্থ হোন, এমনটা মোটেই চাইছেন না ভারতের এই বক্সার। এই রাজনীতির কাছে মাথা নুইয়ে দেশকে পদক এনে দিতেও প্রত্যয় ধরা পড়েছে লাভলিনার গলায়। বিএফআই সচিব হেমন্ত কলিতা স্পোর্টসস্টারকে বলেছেন, অ্যাথলিটদের সংখ্যার ২৫ শতাংশ অফিসিয়াল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন। ১২ অ্যাথলিট থাকলে চারজন অফিসিয়াল। পরে অনুরোধ জানিয়ে সেই সংখ্যা বাড়িয়ে আট করা হয়েছে। এতে কোচ, চিকিৎসক, ফিজিওরা রয়েছেন। সন্ধ্যা গুরুংয়ের নাম পাঠানো হয়, সাই অনুমোদন দিলেও আইওএ-র সম্মতি মেলেনি।
চেষ্টা চলছে
কলিতা আরও জানান, গ্রুপ ইভেন্ট হলেও ব্যক্তিগত কোচ হিসেবে সন্ধ্যা গুরুংয়ের নাম পাঠানো হয়। প্রত্যেকেরই ব্যক্তিগত কোচ দরকার। সে কথা মাথায় রেখে এমন দুই মহিলা কোচ রাখা হয়েছে যাঁরা সকলকেই প্রশিক্ষণ দেন। চিকিৎসক, দুই ফিজিও ও এক ম্যাসিওরের প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে। টিম ম্যানেজারও পাঠানো যায়নি। আইওএ অনুমোদন না দেওয়ায় সন্ধ্যার অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড হয়নি, সে কারণে তিনি গেমস ভিলেজে যেতে পারছেন না। লাভলিনার কথা ভেবেই সাইকে বলা হয়েছিল। সন্ধ্যাকে ইংল্যান্ডে থেকে যেতে বলা হয়েছে। গুরুং নিজে জানিয়েছেন, ফেডারেশন কোচ হিসেবে তিনি যাতে লাভলিনার পাশে থাকতে পারেন সেই প্রয়াস চালাচ্ছে।