জড়ির কাজ করতে করতে দেশের হয়ে সোনা জয়, অচিন্ত্যের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত দেউলপুর
বাবা ভ্যান চালাতেন। ২০১৩ সাল বাবাকে হারায় অচিন্ত্য। সেই থেকে মা আর দুই ছেলের সংসারে লড়াই প্রতিদিনের সঙ্গী। তবে বড় ছেলে অচিন্ত্যর এবারের লড়াইটা শুধু নিজের জন্য ছিল না। লড়াইটা ছিল দেশের জন্যও। আর সেখানেই সফল ভারোত্তোলক অচিন্ত্য শিউলি (achinta sheuli)।
হাওড়ার দেউলপুরের বাসিন্দা কমনওয়েলথে জিতে নিয়েছে সোনা। আর তাই তাঁর গ্রামের মানুষ কার্যত ফেটে পড়েছে আনন্দে , উচ্ছ্বাসে। গত্যকাল রাতে যখন থেকে গ্রামের ছেলের সোনা জয় নিশ্চিত হয়েছে তখন থেকেই আনন্দে মাতোয়ারা গ্রামের মানুষ। সঙ্গে তাঁরা গর্বিত ছেলের সাফল্যে। এক ছোট্ট গ্রাম থেকে উঠে আসা ছেলের জীবন জুড়ে শুধুই লড়াই। সেই লড়াইয়ের একটা বড় স্বীকৃতি মিলেছে বারমিংহ্যামের মাটিতে। এই দিনটার জন্যই তো অপেক্ষা করেছে মা ও ছেলে। আজ সমাগত সেই দিন। তাই উচ্ছাসের বাঁধ ভেঙেছে। কারও আনন্দটা নিজের মধ্যেই রয়েছে। বহিঃপ্রকাশ কম। কেউ গাঁয়ের ছেলের সাফল্যে মেতেছেন আপন খেয়ালে।
রোজগার লড়াইয়ের সংসারে এমন উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ার মুহূর্ত খুব কম। থাকলেও সেটা লড়াইয়ের ঘষটানিতে হারিয়ে গিয়েছে। তাই তাঁর আজকে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়া হয়নি। আতসবাজি ফুটছে মনের মধ্যে। অচিন্ত্যর মা বলেন , "ছেলে আমার প্রচুর কষ্ট করেছে। বাবা মারা যাবার পর আমাদের তিন জনের সংসার। আমার আরেক ছেলে আছে। তো আমরা জড়ির কাজ করে সংসার চালাতাম। একদিন বড় ছেলে বলল যে খেলা থেকে ওর বড় সুযোগ আছে। তাই আমি ছোট ছেলেকে সঙ্গে সঙ্গে যেতে বলি। পুনেতে গিয়েছিল বড়ছেলে। ওখানে ভাত খেতে পারত না। ৮০ টাকা এক প্লেট ভাত। কী করবে চলবে। ও তাই ভাত খেত না। আর এখানে আমার আর ছোট ছেলের প্রতিদিনের লড়াই তো আছেই। এভাবেই দিন কেটেছে আমাদের পুরো পরিবারের। অনেক কষ্ট করেছে আমার ছেলেরা। আজ আমার ছোট ছেলে এত বড় মঞ্চে প্রথম হয়েছে এর আনন্দ অপরিসীম। বলে বোঝানো যাবে না কতটা খুশি আমি"
এদিকে পাড়ার মানুষও আনন্দে ফেটে পড়েছেন। তাঁরা আবার বলছেন কোচ অষ্টম দাসের কথাও। গ্রামবাসীদের দাবী, স্থানীয় কোচের হাতে কিছু নেই কিন্তু তাঁর মধ্যে ও এতগুলো ছেলেকে নিজের হাতে করে তৈরি করছে তাঁরা দেশের নাম উজ্জ্বল করছে। ওঁর একটা ব্যবস্থা যদি সরকার করে তাহলে খুব ভালো হয়।
পাশাপাশি , তাঁরা অচিন্ত্যর সাফল্যে দারুণ খুশি। বলছেন যে ওঁদের পরিবার দারুণ কষ্টের মধ্যে চলে। এই সাফল্য খুব দরকার ছিল।
জেরেমি ক্ষিদ্দা পরিবার, তাঁরাই সমর্থক, পদক উৎসর্গ দাদু ঠাকুমাকে