যাদবপুরে সক্রিয়, অথচ নীলরতনে যুবক খুনে কেন নিষ্ক্রিয় পুলিশ, উঠছে প্রশ্ন
উপাচার্যের প্রাণহানি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, এই অভিযোগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে হিটলারি কায়দায় পড়ুয়াদের নির্মমভাবে পিটিয়েছিল পুলিশ। অথচ নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গণপিটুনির ঘটনায় এক যুবক মরে গেলেও সেই কলকাতা পুলিশই 'হাবাগোবা' হয়ে বসে রয়েছে। দোষীদের চিহ্নিত করা তো দূরের কথা, তদন্তই শুরু করেনি তারা। ঘটনার পর চারদিন কেটে গেলেও কেন পুলিশ শীতঘুম দিচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গত রবিবার নীলরতন সরকার বা এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বয়েজ হস্টেলে পিটিয়ে মারা হয় এক যুবককে। অভিযোগ, তিনি নাকি মোবাইল ফোন চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন। তাঁকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে, ইট দিয়ে মুখ থেঁতলে, ব্লেড দিয়ে যৌনাঙ্গ কেটে খুন করা হয়।
পরে জানা যায়, ২৮ বছরের ওই যুবক আদৌ চোর নন। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। বাড়ি উলুবেড়িয়ার খৈজুরি গ্রামে। নাম কোরপান শাহ। ২০১১ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মাথায় চোট লাগে। তার পর থেকে চিকিৎসা চলছিল। বাবা-মা নেই। স্ত্রী, ছেলেমেয়ে আর এক ভাইকে নিয়ে সংসার ছিল কোরপানের। স্ত্রী আরবিনা বিবি মুড়ি ভেজে সংসার চালান। সেই হতদরিদ্র কোরপান শাহকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে মেরে দেয় হবু ডাক্তারবাবুরা। শুধু উলুবেড়িয়ার খৈজুরির গ্রামের লোকই নন, দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় বিধায়ক পুলক রায় পর্যন্ত।
অথচ এই নির্মম ঘটনার পর চারদিন কেটে গেলেও পুলিশ কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি বা বলা ভালো চিহ্নিত করতে চায়নি। তা হলে কি দোষীরা কোনওদিন সাজা পাবে না? এই প্রশ্ন তুলেছেন নিহত কোরপান শাহের স্ত্রী আরবিনা বিবি।