তৃণমূলে গুরুত্ব হারিয়ে অস্তমিত মুকুল, একুশে ব্রাত্য প্রাক্তন ‘সেকেন্ড ইন কম্যান্ড’
একদিন যে আসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন মুকুল রায়, সেই আসনে শুক্রবারের ধর্মতলার সমাবেশে পাকাপাকিভাবে অভিষেক হয়ে গেল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তিনিও নাম নিলেন না রাজনৈতিক শিক্ষাগুরুর।
দলে প্রায় অস্তমিত মুকুল রায়! একদা 'সেকেন্ড ইন কম্যান্ড' বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসে ব্রাত্যের তালিকায়। একুশে জুলাইয়ের সমাবেশে হাতে মাইক্রোফোনই পেলেন না তিনি। তাঁকে ডাকা হল না বক্তব্য রাখার জন্যও। যে নেতাকে চোখে হারাতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর নাম মেরেকেটে একবার নিলেন নেত্রী। তাও ১০-১২ জনের পরে উচ্চারিত হল মুকুলবাবুর নাম।
একদিন যে আসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন মুকুল রায়, সেই আসনে শুক্রবারের ধর্মতলার সমাবেশে পাকাপাকিভাবে অভিষেক হয়ে গেল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যাঁকে হাতে ধরে রাজনৈতিক শিক্ষা দিয়েছিলেন মুকুলবাবু, সেই অভিষেকও একবার নাম নিলেন না রাজনৈতিক 'শিক্ষাগুরু'র। দলের তাঁর প্রয়োজন ফুরিয়েছে, এখন তাই একেবারে পিছনের সারিতে চলে গেলেন তিনি।
জল্পনা চলছিল দীর্ঘদিন ধরেই, মুকুল রায়ের হলটা কী! সারদা-কাঁটা সরিয়ে দলে নিজের গুরুত্ব ফের বাড়াতে শুরু করেছিলেন মুকুল। দায়িত্ব বাড়ছিল। হঠাৎ করেই আবার 'সাইড' করে দেওয়া হল তাঁকে। হঠাৎ ত্রিপুরার দায়িত্ব থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হল মুকুল রায়কে। তাঁর জায়গায় ত্রিপুরার দায়িত্বে এলেন সব্যসাচী দত্ত। তখন থেকেই সন্দেহটা আরও দৃঢ় হতে থাকে। সেই সন্দেহ যে সত্যি, তা জলের মতো পরিষ্কার হয়ে গেল একুশের সমাবেশে।
তৃণমূল কংগ্রেস মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরের স্থানটি কার? তা নিয়ে জল্পনা চলছিল দীর্ঘদিন ধরেই। দলের কাজে ভাইপোর গুরুত্ব ধীরে ধীরে বাড়াচ্ছিলেন মমতা। অভিষেকের গুরুত্বে দলে অনেক কিছুই কানাঘুষো চলছিল। তবে সেসবকে আমল না দিয়েই শহিদ সমাবেশে সেকেন্ড ইন কম্যান্ড হিসেবে অভিষেকের হাতেই একপ্রকার ব্যাটন তুলে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তৃণমূলের 'যুবরাজ' অভিষেক মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে একে একে সমস্ত প্রথম সারির নেতাকে অভিভাবক বলে সম্বোধন করলেও, একবার ভুলেও নাম নিলেন না মুকুল রায়ের। একুশের মঞ্চে বক্তব্য রাখলেন প্রথম সারির প্রায় সবাই। শুধু বাদ একজনই। তিনি প্রাক্তন 'সেকেন্ড ইন কম্যান্ড' মুকুল রায়। এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁর এক সময়ের ছায়াসঙ্গীকে ব্রাত্য করে রাখলেন। এদিন মঞ্চে থাকলেও মুকুলের কোনও গুরুত্বই ছিল না। মদনের মতোই তিনি ব্রাত্যের তালিকায়। ফারাক শুধু- মদন মঞ্চে ওঠার অনুমতি পাননি, মুকুল মঞ্চে ছিলেন- এই যা।