টালা ব্রিজ বন্ধের জেরে ঘুর পথে চলা বাস গুলিতে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ , মাঠে কলকাতা পুলিশ
টালা ব্রিজ বন্ধের জেরে ঘুর পথে চলা বাস গুলিতে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ , মাঠে কলকাতা পুলিশ
সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে টালা ব্রিজ। তার জেরে শহর জুড়ে ঘুর পথে চলছে একাধিক যানবাহন। ১৫ মিনিট দূরত্বের কোনও গন্তব্যে পৌঁছাতে সময় লেগে যাচ্ছে কোথাও একঘণ্টা তো কোথাও দেড় ঘণ্টা। যার জেরে নাকাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ থেকে বাসচালকেরাও।
বাসের গতিপথ বদলে দেওয়ায় এবার বিভিন্ন বাসে যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার মত গুরুতর অভিযোগ উঠলো বাস চালকদের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগের পরেই নড়েচড়ে বসেছে কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ বিভাগ। টালা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় বিভিন্ন বাসে যাত্রীদের থেকে কন্ডাক্টরদের বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ ইতিমধ্যেই কানে এসেছিল কলকাতা পুলিশের। সূত্রের খবর, এবার থেকে ওই বাস কন্ডাক্টরদের গতিবিধির উপর নজর রাখতে উত্তর কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় নজরদারি চালাবে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের একটি বিশেষ দল।
কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক কন্ট্রোল বিভাগের তরফে এই বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশদের বিশেষ প্রশিক্ষণের জন্য একটি প্রশিক্ষণ শিবিরও খোলা হয়েছে টালা ব্রিজ সংলগ্ন বেলগাছিয়ায়। সূত্রের খবর, তারাই মূলত এই নজরদারি কাজ চালাবে। অন্যদিকে, টালা ব্রিজে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেই প্রবল যানজটের মধ্যে পড়ে গোটা উত্তর কলকাতা। বিকল্প পথে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের তরফে একাধিক কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়।
ট্রাফিক পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের এক আধিকারিক এই প্রসঙ্গে বলেন, 'এই মুহূর্তে মোট ১০ জন টেকনিক্যাল ও নন-টেকনিক্যাল কর্মকর্তা নিয়োজিত করা হয়েছে যান চলাচলের পর্যবেক্ষণের জন্য।’ বিভিন্ন বাসে যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ' আমাদের দলের সদস্যরা শহরের বিভিন্ন যাত্রী প্রতিক্ষালয়ে গিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলছেন। রাজ্য পরিবহন দফতরের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত ভাড়ার থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে কিনা সেই বিষয়েও জানতে চাওয়া হচ্ছে যাত্রীদের কাছে।’
এক সময় এই ব্রিজের উপর দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৬০০র বেশি বাস চলাচল করতো। কিন্তু ২৫ শে সেপ্টেম্বরের পর থেকে এই ব্রিজে যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রাজ্য সরকার। যদিও এই প্রসঙ্গে বাস মালিকদের অনেকাংশের অভিযোগ, ওই রুটের বাস গুলিকে ঘুরপথে চালিত করায় তাদের জ্বালানিও অনেক বেশি খরচ হচ্ছে। যার জেরে চরম আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তারা।
জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন ব্যানার্জি বলেন, 'এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ চেয়ে আমরা গত সপ্তাহেই রাজ্য পরিবহন দফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সেখানে ওই রুটের বাস গুলির জন্য বিকল্প রাস্তার চিন্তাভাবনা শুরুর কথা জানিয়েছে পরিবহন দফতর। নতুন রুটের ম্যাপও খুব শিগগিরই প্রকাশিত হবে বলে সরকারি প্রতিশ্রুতিও মিলেছে।'
অন্যদিকে, এই মুহূর্তে তীব্র যানজট থেকে যাত্রীদের রেহাই দিতে নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণ কারার পথে রাজ্য সরকার। উত্তর কলকাতার সিঁথির মোড় থেকে শ্যামবাজার-বাটা এবং চিড়িয়ামোড় থেকে শ্যামবাজার-বাটা পর্যন্ত দুটি নতুন রুটে আগামী ৩রা অক্টোবর থেকেই নতুন অটো পরিষেবা চালু করতে উদ্যোগী রাজ্য পরিবহন দফতর।
পাশাপাশি যাত্রী দুর্ভোগ ঠেকাতে ইতিমধ্যে রাজ্য পরিবহন দফতরের কর্মকর্তারা 'শাটল্ গাড়ি' চালানোর ব্যাপারে ব্যারাকপুর পুলিশের সাথেও কথা বলেছেন বলে জানা যাচ্ছে। বিশেষত অফিস টাইমে শাটল গাড়ি চালু হলে নিত্য যাত্রীরা অনেকটাই উপকৃত হবেন বলে আশাবাদী রাজ্য পরিবহন দফতর।