আলিপুর চিড়িয়াখানার বাঘেদের নিয়মিত বিশেষ যত্ন নেওয়া হবে, চালু কঠোর সুরক্ষা বিধি
আলিপুর চিড়িয়াখানার বাঘেদের নিয়মিত বিশেষ যত্ন নেওয়া হবে, চালু কঠোর সুরক্ষা বিধি
নিউইয়র্কের চিড়িয়াখানায় এক বাঘিনীর শরীরে করোনা উপসর্গ দেখা দিয়েছে। এরপরই কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানা বাঘেদের নিয়মিত পরীক্ষা ও তাদের সুরক্ষা নিয়মের কঠোর প্রয়োগে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
৪ বছরের বাঘিনীর শরীরে করোনা উপসর্গ
প্রসঙ্গত, নিউইয়র্কের একটি চিড়িয়াখানার একটি বাঘিনীর শরীরে করোনা ভাইরাস মিলল৷ অর্থাৎ মানুষের থেকে এবার পশুদের শরীরেও ছড়াচ্ছে সংক্রমণ৷ ব্রোনক্স চিড়িয়াখানার ওই বাঘিনীর পাশাপাশি বেশ কয়েকটি সিংহ ও বাঘের শরীরেও করোনার উপসর্গ দেখা দিয়েছে৷ সোমবার এই ঘটনায় ভারতের সব চিড়িয়াখানার জন্য সতর্কতা জারি করেছে সেন্ট্রাল জু অথরিটি৷ আলিপুর চিড়িয়াখানার জন্যও সতর্কতা জারি হয়েছে৷ সতর্ক থাকছে রাজ্য বন দফতরও৷ জানা গিয়েছে, ৪ বছরের মালায়ান বাঘ, নাম নাদিয়া, তার শরীরে কোভিড-১৯-এর উপসর্গ পাওয়া গিয়েছে। মনে করা হচ্ছে বাঘেদের দেখাশোনার জন্য যে ব্যক্তি আছেন তাঁর সংস্পর্শেই বাঘের এই রোগ দেখা দেয়। যদিও ওই ব্যক্তি বর্তমানে সংক্রমণহীন।
মধ্য ফেব্রুয়ারি থেকেই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে
আলিপুর চিড়িয়াখানার পরিচালক আশিষ কুমার সামন্ত জানিয়েছেন যে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে অ্যান্টি-ভাইরাল স্প্রে নিয়মিত ছড়ানো, বিশেষ করে বাঘেদের খাঁচাগুলিতে এবং বাগানে, এগুলি ছাড়াও বহু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাঘের শরীরে কোভিড-১৯-এর উপসর্গ এই খবর সত্যিই উদ্বেগের। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময় থেকে আমরা চিড়িয়াখানায় বাঘ ও অন্য পশুদের জন্য সতর্কমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। সমস্ত কেয়ারটেকার, চিকিৎসক অন্য কর্মীদের জন্য কড়া সুরক্ষা বিধি কার্যকর করা হয়েছে।' তিনি জানান, বাঘগুলিকে ২৪/৭ পর্যবেক্ষণে রাখা হবে, যাতে যদি কিছু ঘটে তবে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হবে। আশিষ কুমার সামন্ত বলেন, ‘বর্তমানে কেয়ারটেকার ও চিকিৎসকরা বাঘ ও অন্যান্য পশুদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন। আমরা কেয়ারটেকার, চিকিৎসক সহ অন্যান্য কর্মীদের নিয়ে আলোচনা করেছি যাতে সকলে এই সুরক্ষা বিধি মেনে চলেন। এর অর্থ যে কোনও পশুদের কাছে যাওয়ার আগে মাস্ক, গ্লাভস ও স্যানিটাইজার বাধ্যতামূলক।'
সবচেয়ে পুরনো চিড়িয়াখানা
১৮৭৬ সালে এই জুলজিকাল গার্ডেন গড়ে ওঠে আলিপুরে। যা ভারতের সবচেয়ে পুরনো চিড়িয়াখানা হিসাবে পরিচিত। এখানে আটটি বাঘ, চারটে সিংহ সহ দুটি শিশু সিংহ, তিনটে চিতা ও দু'টি জাগুয়ার সহ অন্য পশু রয়েছে। বাঘ, সিংহ, হাতি, জেব্রা, জিরাফ, সরীসৃপ ও পাখি সহ ১২৭০ টি প্রাণীর যত্ন নেওয়া হয়। চিড়িয়াখানার কর্মীরাই এদের খাওয়ান ও যত্ন নেন। ১৭ মার্চের পর থেকে এই চিড়িয়াখানায় ভিড় এড়ানোর জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়।