মাধ্যমিক পাস মানেই শিক্ষিত বেকার বৃদ্ধি! শোভন-মন্তব্যে বিতর্কের ঝড় রাজ্য রাজনীতিতে
মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পরদিনই বেকারত্ব নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠল রাজ্য রাজনীতিতে। দীর্ঘদিনের পোড় খাওয়া বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রীই খোদ বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন।
মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পরদিনই বেকারত্ব নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠল রাজ্য রাজনীতিতে। দীর্ঘদিনের পোড় খাওয়া বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রীই খোদ বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন। রাজ্যের বিরোধীরা যখন বেকারত্ব ও কর্মসংস্থানের দিশাহীনতা নিয়ে সরব, তখন শিক্ষামেলায় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্যের তৈরি হল বিতর্ক।
শনিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে শিক্ষামেলায় রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর রাজ্যে বেকারত্বের সংখ্যা আরও বেড়ে গেল। তবে উচ্চশিক্ষিত বেকারের থেকে স্বল্প শিক্ষিত বেকারের কাজ পাওয়া সহজ। উচ্চশিক্ষিত বেকারদের চাকরি না পাওয়া নিয়ে সরব হয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন তিনি।
শোভনদেব বলেন, এবারে মাধ্যমিক দিয়েছিল ১২ লক্ষ্য ছাত্রছাত্রী। পাস করেছে ৮৬ শতাংশ। সব শিক্ষিত বেকার তৈরি হয়ে গেল। এরপর উচ্চমাধ্যমিক, গ্র্যাজুয়েশন, মাস্টার্স পাস করেও ঘুরে বেড়াচ্ছে অনেকে। কৃষিমন্ত্রী আরও বলে, প্রতিদিন সকালে বহু মানুষের সঙ্গে দেখা করি। তাঁদের ১০ জনের মিনিমাম পাঁচ জন চাকরির জন্যও আসেন। তাঁরা এসে চাকরি চান।
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বক্তৃতার এই অংশটুকু নিয়ে বিজেপি ময়দানে নেমে পড়েছে। বিজেপির পক্ষে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সাফ জানিয়েছেন, শোভনদেববাবু তৃণমূলের প্রথম বিধায়ক, পোড় খাওয়া নেতা। তাঁকে ধন্যবাদ যে রাজ্যের বাস্তব চিত্রটা তিনি তুলে ধরেছেন। রাজ্যে যে কর্মসংস্থানের সুযোগ নেই, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
তবে এটা ঠিক যে, রাজ্যের শিক্ষামেলায় কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের গোটা বক্তৃতা শুনলেই স্পষ্ট হবে রাজ্যের সমালোচনায় তিনি সরব হননি। তিনি বলেন, রোজ সকালে যখন ভিজিটরদের সঙ্গে মিট করে, দেখি ১০ জনে পাঁচ জান চাকরি চাইছে আসছেন। এখন অনেক সুযোগ রয়েছে উচ্চমাধ্যমিকের পর।
এমন একটা বিষয় নিয়ে পড়তে হবে, যা চাকরি পেতে সাহায্য করবে। তাঁর কথায়, আমাদের রাজ্যে এখন কাজের অনেক সুযোগ, বাইরে থেকে অনেকে বাংলায় আসছেন। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, রাজ্যে যে সুযোগ রয়েছে, তা কাজে লাগাতে পারলেই চাকরি নিশ্চিত। তা না করে গতানুগতিক শিক্ষার পিছনে ছোটার কোনও অর্থ নেই। তিনি বলতে চেয়েছেন, প্রথাগত শিক্ষার বাইরে বেরিয়ে পড়াশোনা করার কথা। তাহলে চাকরি বা কাজ কিছুই আটকাবে না। বরং সেই শিক্ষা হবে জীবিকা সহায়ক।
এদিনের অনুষ্ঠানে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন পুরমন্ত্রী তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর। তাদের সামনেই প্রবীণ মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বেকারত্ব-মন্তব্য করেন। তিনি যে শিক্ষিত বেকার তৈরি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন, তা নিয়েই বাজার গরম। বিরোধীরা বলছেন, শোভনদেব রাজ্যের সঠিক চিত্রটাই তুলে ধরেছেন তাঁর ওই বক্তব্যের মাধ্যমে।