বিসর্জন মামলায় মুখ পুড়ল মমতার সরকারের, মহরমেও বিসর্জন হবে, রায় হাইকোর্টের
দুর্গাপুজোর বিসর্জন মামলায় হাইকোর্টে মুখ পুড়ল রাজ্য সরকারের। কলকাতা হাইকোর্ট সাফ জানিয়ে দিল মহরমের দিনও বিসর্জন চলবে।
দুর্গাপুজোর বিসর্জন মামলায় হাইকোর্টে মুখ পুড়ল রাজ্য সরকারের। কলকাতা হাইকোর্ট সাফ জানিয়ে দিল মহরমের দিনও বিসর্জন চলবে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে রাজ্য সরকারকেই। এমনকি রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা খারিজ করে কলকাতা হাইকোর্টের অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি রাকেশ তিওয়ারি ও বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, প্রত্যেকদিন রাত ১২টা পর্যন্ত বিসর্জন হবে। রাজ্য সরকার নির্দেশিকায় বলেছিল দশমীর দিন রাত ১০টা পর্যন্ত বিসর্জন চলবে।
বুধবারই এই মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারকে ভর্ৎসনা করে হাইকোর্ট। আদালত প্রশ্ন তোলে, কীসের ভিত্তিতে এমন নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য সরকার। খোদ মুখ্যমন্ত্রী যখন রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলছেন, পাশাপাশি এই বিভাজন কেন। কেন দুই ধর্ম একসঙ্গে উৎসব পালন করতে পারবে না। রাজ্যকে কড়া ভাষায় বিচারপতি জানিয়ে দেন, দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করবেন না, শান্তিতে সহাবস্থান করতে দিন।
বৃহস্পতিবারও এই মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বলে, রাজ্য় সরকারের ক্ষমতা থাকতেই পারে, কিন্তু তা বলে সেই ক্ষমতা প্রয়োগের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে না। কোনও ভিত্তি ছাড়া এভাবে নিজের মতামত চাপানো যায় না। শুনানি চলাকালীন অস্থায়ী প্রধান বিচারপতি রাকেশ তিওয়ারি ও বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ ও প্রশাসনকে তৎপর থাকতে হবে। কোনওরকম জমায়েত থেকে হিংসা ছড়ালে ধাপে ধাপে ব্যবস্থা নিতে হবে। সেক্ষেত্রে জলকামান ব্যবহার করা যেতে পারে কিন্তু গুলি কোনও অবস্থাতেই চালানো যাবে না।
দুপুর ২টোর পর ফের মামলার শুনানি শুরু হলে, রাজ্য সরকারের বিসর্জন নির্দেশিকা খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। আদালত জানিয়ে দেয়, একাদশী অর্থাৎ মহরমের দিনও যথারীতি বিসর্জন হবে। সেক্ষেত্রে ভাসানের শোভাযাত্রা ও তাজিয়ার রুট পৃথক হবে। সেখানেও প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করতে হবে, যাতে দুই ধর্মই শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালন করতে পারে। সেই রুট কী হবে তা আগেই প্রকাশ করতে হবে। আদালতের এই রায় যাতে এখুনি কার্যকর না হয়, এদিন শুনানিতে সেই আর্জি জানান রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল। অবশ্য তাঁর এই আর্জিও খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।