দিলীপে নয় আস্থা মুকুলে! পঞ্চায়েত নির্বাচনে মমতাকে ‘ট্রাম্প-কার্ড’ বিজেপির
তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর এই প্রথম গুরুদায়িত্ব পেলেন মুকুল রায়। বিজেপির পঞ্চায়েত ভোট কমিটির আহ্বায়ক হলেন তৃণমূলের প্রাক্তন ‘সেকেন্ড ইন কম্যান্ড’।
বিজেপিতে আসার পর নয় নয় করে কেটে গিয়েছে প্রায় চার মাস। তারপরও কোনও পদ মিলছিল না তাঁর নতুন দলে। খাতায় কলমে দায়িত্বও ছিল না তাঁর। অবশেষে সেই ঘাটতি দূর হল মুকুলের। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর এই প্রথম গুরুদায়িত্ব পেলেন মুকুল রায়। বিজেপির পঞ্চায়েত ভোট কমিটির আহ্বায়ক হলেন তৃণমূলের প্রাক্তন 'সেকেন্ড ইন কম্যান্ড'।
[আরও পড়ুন: মমতার বিরুদ্ধে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে মরিয়া মুকুল, পঞ্চায়েতে রণকৌশল চূড়ান্ত বিজেপির]
শুধু কি 'সেকেন্ড ইন কম্যান্ড', তৃণমূল কংগ্রেসে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মুকুল রায়। এমনকী গুরুত্ব হারিয়ে দল ছাড়ার সময়ও তিনি ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি। অথচ বিজেপিতে গিয়ে তাঁর কোনও পদ জোটেনি। তাঁর পরিচয় ছিল স্রেফ বিজেপি নেতা। বঙ্গ বিজেপির অন্যতম মুখ। চারমাস পর মুকুল রায় অনেক পরীক্ষা দিয়ে পেলেন গুরু দায়িত্ব।
বিজেপির কর্মসমিতির সভায় তাঁকে পঞ্চায়েত ভোট কমিটির আহ্বায়ক করা হল। অর্থাৎ মুকুল রায়কে সামনে রেখেই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট লড়তে চলেছে বিজেপি। পঞ্চায়েত ভোট মানেই গ্রামের যুদ্ধ। তৃণমূল স্তরের এই লড়াইয়ে এতদিন তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট পরিচালনার দায়িত্ব থাকতেন তিনি। এবার তিনি বিরোধী বিজেপির ভোট পরিচালনা করবেন। তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইটা পৌঁছে দেবেন একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে।
এতদিন তৃণমূলের সংগঠন সামলেছেন নিজের হাতে। তৃণমূল স্তরের আটঘাট তিনি হাতের তালুর মতো চেনেন। এহেন মুকুল রায় বিপক্ষ শিবিরের দায়িত্বে থাকার অর্থ শাসক শিবিরে বাড়তি চাপ তৈরি হওয়া। আর সেই চাপের রাজনীতিটা এখন থেকেই শুরু করে দিল বিজেপি।
শনিবার ভবানীপুরে ন্যাশনাল লাইব্রেরির প্রেক্ষাগৃহে বিজেপির পঞ্চায়েত কর্মসমিতির বৈঠকে পঞ্চায়েত ভোটের লড়াইয়ের রূপরেখা তৈরি করা হয়। এই বৈঠকেই গুরুদায়িত্ব পেয়ে গেলেন মুকুল রায়। আর এই লড়াইয়ে তাঁর সহযোগীর দায়িত্ব পেলেন শমীক ভট্টাচার্য।
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা তথা রাজ্যের পর্যবেক্ষক কৈলাশ বিজয়বর্গীয় থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় সম্পাদক শিব প্রকাশ, কেন্দ্রীয় নেতা রাহুল সিনহা, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বঙ্গ বিজেপির অন্যতম মুখ মুকুল রায় উপস্থিত ছিলেন এই বৈঠকে। তাঁরা জানান, পঞ্চায়েত নির্বাচনের দামাম বেজে গিয়েছে।
এই বৈঠকে স্থির হয়, প্রতি বুথে প্রার্থী দেওয়াই যে বিজেপির প্রধান লক্ষ্য। আর প্রার্থী নির্বাচনে বিজেপি চাইছে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল কাজে লাগাতে। প্রয়োজনে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধকেও টিকিট দিয়ে কার্য হাসিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মুকুল রায়-শমীক ঘোষের উপর পঞ্চায়েত ভোটের দায়িত্ব দিয়ে বিজেপি শাসক শিবিরে প্রত্যাঘাত করতে চাইছে।
[আরও পড়ুন:বিজেপির সভাপতির মুখে সমাজবিরোধীর ভাষা, দিলীপকে পাল্টা নিশানা পার্থর]