ভাইপোর অন্যায়ে ‘অনুমোদন’ মমতার! অভিষেককে ‘ঢাল’ করে মুকুলের বাণ নেত্রীকে
বিজেপির রাজ্য দফতরে সপারিষদ সাংবাদিক সম্মেলন করে ফের বোমা ফাটালেন মুকুল রায়। অভিষেকের হলফনামা দেখিয়ে মুকুল রায়ের একের পর এক বাণ ধেয়ে এল মমতার দিকে।
ভাইপোকে ঢাল করে এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন মুকুল রায়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হলফনামার কপি দেখিয়ে তিনি বুঝিয়ে দিলেন, জেনে-বুঝে অন্যায় করতে বলেছেন মমতা। অর্থাৎ ভাইপোর সমস্ত অন্যায়কেই তিনি অনুমোদন করে গিয়েছেন। তাঁর প্রশ্রয়েই অভিষেক দলকে নিয়ে যা নয়, তাই করে গিয়েছেন।
শনিবার বিজেপির রাজ্য দফতরে সপারিষদ সাংবাদিক সম্মেলন করে ফের বোমা ফাটালেন মুকুল রায়। অভিষেকের হলফনামা দেখিয়ে মুকুল রায় জানালেন, 'এই হলফনামায় স্পষ্ট করে লেখা রয়েছে, অভিষেক নিজে কিছুই করেনি, সব কিছু করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জ্ঞাতসারেই।'
এদিন মুকুল রায় ফের দাবি করেন, 'অভিষেকের নামেই 'বিশ্ববাংলা' থেকে 'জাগোবাংলা', 'মা-মাটি-মানুষ'-এর ট্রেড মার্ক, তা তৃণমূলের নামে নয়। আমি একথা বলছি না। নথি এসব কথা বলছে। আমি নথির বাইরে একটা কথাও বলছি না। এমনকী তৃণমূলের সাধের 'ঘাসফুল' প্রতীকেও দখলদারি কায়েম করতে আবেদন করেছিলেন অভিষেক।'
মুকুলবাবু বলেন, 'হলফনামায় পরিষ্কার এইসব করা হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মতিতেই। অভিষেক নিজে হলফনামায় জানিয়েছেন আমি এসব নিজে কিছু করিনি, সব কিছু হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্মতিতে। অর্থায অভিষেকের যাবতীয় কাজকর্ম অনুমোদন করে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর আমার বক্তব্যে যে সত্যতা ছিল, তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে রাতারাতি অভিষেকের আবেদন প্রত্যাহার করাতেই।'
উল্লেখ্য, মুকুল রায় ১০ নভেম্বর বোমা ফাটানোর পরই ১৩ তারিখ আবেদন প্রত্যাহার করেন অভিষেক। তার এই কাজেই তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন, এতদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেই ছিল ওই সমস্ত ট্রেড মার্ক। এখন নতুন তথ্য এল দলের প্রতীকও তিনি নিজের নামে করে নিতে চেয়েছিলেন।
এদিন ফাইল ওয়ান ছাড়াও রাজ্যের তৃণমূল সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন মুকুল রায়। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নামও তিনি এদিন জড়িয়ে দেন চিটফান্ডের সঙ্গে। কাগজ দেখিয়ে তিনি তুলে ধরেন পার্থর চিটফান্ড যোগের কথা। এক চিটফান্ড কর্তার সঙ্গে ছবিও দেখান মুকুল রায়। নাকতলার পুজোয় স্পনসর নিয়েও তাঁর বক্তব্যে এদিন অনড় থাকেন তিনি।
এছাড়া রাজ্যকে নিশানা করে মুকুল রায় বলেন, 'রাজ্যের মন্ত্রীরা হোয়াটস অ্যাপে কথা বলেন, এটা গণতন্ত্রের পক্ষে শুভ নয়।' তারপর আমার ফোন তো বটেই, বিজেপি নেতৃত্বের ফোনেই আড়িপাতা হচ্ছে। দিল্লি হাইকোর্টে আমি এই সংক্রান্ত মামলা দায়ের করেছিলাম। সেই মামলায় মোট ন'জন আইনজীবীকে নামানো হয়েছিল। কোর্টে জানিয়েছে, হলফনামা আকারে জানাতে হবে যে সরকার কোনও ফোনে আড়ি পাতেনি।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলন শেষে মুকুল রায় বলে যান, 'তিনি একটি ভিডিও দেখাবেন অদূর ভবিষ্যতে। সেই ভিডিও-তে এক বিধায়কের ছেলে দাবি করেন, তাঁর বাবা খুন করেছেন।' সাংবাদিক বৈঠকে পরে যোগ দিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, মুকুলদা যাঁদের সম্বন্ধে বলতে শুরু করেছেন, তাঁদের শরীরী ভাষাও ইতিমধ্যেই বদলে গিয়েছে। তাঁরা এখন গরাদের ওপার যাওয়ার আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেছেন।