মমতার ‘রিজার্ভ বেঞ্চ’ এখনও তৈরি নয়! লোকসভার আগে ‘ভুল’ থেকে নিলেন শিক্ষা
পঞ্চায়েত নির্বাচন বুঝিয়ে দিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরসূরিরা এখনও উপযুক্ত হয়ে উঠতে পারেনি। তাই ক্ষমতায় আসার সাত বছর পরেও নিজেকেই ফিরে আসার লড়াইয়ে নামতে হচ্ছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচন বুঝিয়ে দিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরসূরিরা এখনও উপযুক্ত হয়ে উঠতে পারেনি। তাই ক্ষমতায় আসার সাত বছর পরেও নিজেকেই ফিরে আসার লড়াইয়ে নামতে হচ্ছে। সামনেই নোকসভা নির্বাচন, এবার আর 'ভুল' করতে চান না তিনি। তাই 'পছন্দের পাত্র'কেও দূরে ঠেলতে তিনি দুবার ভাববেন না।
জঙ্গলমহলে ভরাডুবি হওয়ার পর তড়িঘড়ি মন্ত্রিসভার রদবদল করে আদিবাসী উন্নয়নমন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতোকে সরিয়ে দিয়েছেন তিনি। কাউকে আর সেই ভার দেননি, গুরুদায়িত্ব নিজের হাতেই রেখেছেন মমতা। আর একইসঙ্গে দলের নেতৃত্বকে বার্তা দিয়েছেন, 'তোমরা এখনও উপযুক্ত হওনি। শেখো, কীভাবে আবার লড়াইয়ে ফিরে আসতে হয়।'
পঞ্চায়েত নির্বাচনের সমস্ত দায়িত্ব তিনি নেতৃত্বের উপর ছেড়েছিলেন। মুকুল রায়ের অবর্তমানে তাঁর উত্তরসূরিদের দিয়েছিলেন দায়িত্ব। কিন্তু সেই গুরুভার পালনে ব্যর্থ তাঁরা। বাধ্য হয়েই নিজেকেই ফের ময়দানে নামাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বুঝতে চাইছেন, জঙ্গলমহলের মানুষ কী চায়, তা কেন বুঝতে ব্যর্থ হল দল। কেন দল এই ভরাডুবির আভাস পেল না।
[আরও পড়ুন: জঙ্গলমহলে ভরাডুবিতে চেতনা ফিরল মমতার! নিয়েই নিলেন 'চরম' সেই সিদ্ধান্তটাই ]
পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম ও বাঁকুড়া- তিন জেলায় তিনি তাঁর দলের বড় মাপের নেতাদেরই দায়িত্ব দিয়েছিলেন। জেলা নেতৃত্ব যদি ভুল পথে পরিচালিত হন, তার জন্য রেখেছিলেন পর্যবেক্ষক। আর যাঁরা পর্যবেক্ষক ছিলেন, তাঁরা কেন পড়তে পারলেন না মানুষের মনের ভাষা। দলনেত্রীর কাছে তাঁরা কেন ভুল রিপোর্ট দিলেন।
দল যে আদৌ এগোয়নি, বরং পিছিয়ে পড়েছে, সেই রিপোর্ট ছিল না তৃণমূলের বড় নেতাদের কাছে। ভিতরে ভিতরে যে অন্তর্ঘাত বাসা বেঁধেছে সেই রোগও ধরতে পারেনি কেউ। তাই আবার আসরে নামতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন প্রশ্ন তৃণমূলের প্রতি অসন্তোষের যে বীজ বপন হয়েছে, তার শিকড় কি উপড়ে ফেলতে পারবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাকি সেই অঙ্কুরিত বীজেই তৃণমূলের পতনের সূচনা হবে, তা বলবে আগামী লোকসভা। মুখ্যমন্ত্রী আশাবাদী, তিনি জঙ্গলমহলের মানুষের মন ফের জয় করে নিতে পারবেন।
দলের নেতাদের পারফরমেন্সে তিনি যে হতাশ, তা বুঝিয়ে দিয়েছে তাঁর নেওয়া সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত। জঙ্গলমহলের ভালো-মন্দ তিনিই দেখভাল করবেন এখন থেকে। কারণ তিনি হতাশ তাঁর দলের নেতৃত্বের দায়িত্ববোধ ও পারফরমেন্সে। তাঁকে বাদ দিয়ে দল যে এখনও তৈরি নয়, তাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে সাম্প্রতিক নির্বাচনে এবং নির্বাচনোত্তর পর্বে।