ইভিএম জালিয়াতির অভিযোগে সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক, মোদী বিরোধিতায় সুর মেলালেন মমতাও
ইভিএম জালিয়াতির অভিযোগ এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের মুখেও। মোদী বিরোধিতায় বিরোধীদের সুরে সুর মিলিয়ে এক জোটেও সায় দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। আগামী লোকসভার আগে নয়া সমীকরণ উসকে দিয়ে গেল মমতার মন্তব্য।
কলকাতা, ১৮ মার্চ : ইভিএম জালিয়াতির অভিযোগ এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের মুখেও। মোদী বিরোধিতায় বিরোধীদের সুরে সুর মিলিয়ে এক জোটেও সায় দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। আগামী লোকসভার আগে নয়া সমীকরণ উসকে দিয়ে গেল মমতার মন্তব্য। তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, ইভিএম নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকুক নির্বাচন কমিশন।[নয়া আইন প্রণয়ন নয়, পুরনো আইনেই বেসরকারি স্কুলগুলিকে 'শিক্ষা' দেবেন মুখ্যমন্ত্রী]
পাঁচ রাজ্যের ভোটের দামামা শেষ হতেই ২০১৯-এর সমীকরণ নিয়ে কাউন্টডাউন শুরু হয়েছে। মোদী বিরোধিতায় একজোট হওয়ার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছে অবিজেপি দলগুলি। ইভিএম জালিয়াতির অভিযোগ তুলে বিজেপি বিরোধিতায় এক হতে চাইছে সমস্ত বিরোধী দলগুলিই। আর সেই সুর এক তারে বাঁধতে চাইলেন মমতাও।[বাংলায় বিজেপি ৩ বা ৪ নম্বরে, তৃণমূলকে সরাতে পারবে না ওরা : মমতা ]
উত্তরপ্রদেশে ভরাডুবির পর বিজেপি-র বিরুদ্ধে ইভিএম কারচুপির অভিযোগ তুলেছিলেন বহুজন সমাজবাদী পার্টির নেত্রী মায়াবতী। তাঁর সুরে এবার সুর মিলিয়ে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এর আগে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও ইভিএম জালিয়াতির অভিযোগ তুলে দিল্লি পুরসভার ভোট ব্যালট পেপারে করার দাবি তুলেছেন। তদন্ত দাবি করেছেন রাহুল গান্ধি ও অখিলেশ যাদবও।
এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁদের সঙ্গে একই সারিতে চলে এলেন। ঠিক যেভাবে নোট বাতিল ইস্যুতে মোদী বিরোধিতায় এককাট্টা ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, এবার ইভিএম জালিয়াতির অভিযোগেও তিনি শামিল। তিনি যে এবার ইভিএম জলিয়াতিকে হাতিয়ার করে মোদীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ঘুঁটি সাজাবেন, তাও স্পষ্ট করে দিলেন শুক্রবার।
এদিন ইভিএম জালিয়াতি প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তুলে ধরেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর একটি ভিডও ক্লিপিংস। তিনি তা সাংবাদিকদের দেখানও। সেখানে সুব্রহ্মণ্যম স্বামী সরব হয়েছেন এই বলে যে, ইভিএম জালিয়াতি ভোটের ফল পাল্টে দিতে পারে। উত্তরপ্রদেশে বিজেপির বড় জয়ের পর এছাড়া আর কিছু বলার ছিল না বিরোধীদের।
তাই বিরোধীরা ২০১৯-কে পাখির চোখ করে প্রতিটি রাজ্য ধরে ধরে ঘুঁটি সাজাচ্ছেন। বিজেপিকে থামাতে যা করা সম্ভব তাই করবেন এমনই মন্তব্য উড়ে এসেছে নানা রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, অ-বিজেপি জোটের প্রস্তাবে তিনি রাজি।
বিরোধীদের ব্যাখ্যা, উত্তরপ্রদেশ ভোটে যদি বিজেপি বিরোধী জোট হত, অর্থাৎ বিএসপিও সামিল হল সপা-কংগ্রেস জোটে, তাহলে বিজেপি-র জয় সম্ভব হত না। ঠিক বিহারের মতোই পরিস্থিতি দাঁড়াত উত্তরপ্রদেশে। বিহারে যখন আরজেডি ও জেডিইউ এক হতে পারল, তাহলে উত্তরপ্রদেশে সপা-বসপা নয় কেন?
এখন থেকেই সমস্ত বিরোধী দলকে এক মঞ্চে আনার প্রস্তাবনা শুরু হয়ে গিয়েছে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে। আর মায়াবতী যে সুর বেঁধে দিয়েছিলেন, সেই সুরে সুর মিলিয়ে মমতাও এগিয়ে এসেছেন। তবে রাজৈনতিক মহলের মতে, মুখ জোটবদ্ধতার কথা বললেও, আদতে তা করে দেখানো খুবই কঠিন কাজ। এক সুতোয় তাঁদের বাধবেন কে? সেটাই প্রথম প্রশ্ন।