তারকেশ্বরকে ৫ কোটি, হবে মেডিক্যাল কলেজ, হুগলিজুড়ে উন্নয়নের আর কী তালিকা পেশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী
পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আসতেই হুগলির ১০০ শতাংশ মানুষকে সরকারি পরিষেবা দেওয়া দিতে উন্নয়নের জোয়ার তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জনসভা সভা থেকেই বরাদ্দ করলেন বহু প্রকল্পের টাকা।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে হুগলিতে উন্নয়নের বার্তা দিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারকেশ্বর মন্দির উন্নয়নে পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে তারকেশ্বর মন্দির ডেভেলপমেন্ট বোর্ডও তৈরি করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বোর্ডের চেয়ারম্যান হলেন ফিরহাদ হাকিম। ভাইস চেয়ারম্যান করা হল বেচারাম মান্নাকে। সংস্কারের দায়িত্ব অর্পণ করলেন খোদ জেলাশাসকের উপর।
বৃহস্পতিবার হুগলির তারকেশ্বরে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক জনসভা থেকে ঘোষণা করলেন, হুগলির ১০০ শতাংশ মানুষকে সরকারি পরিষেবা দেওয়া হবে। আরামবাগে হবে মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। তারকেশ্বরে মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হবে। সেই মেডিক্যাল কলেজ হবে প্রফুল্ল সেনের নামে। সেইসঙ্গে হুগলিতে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কথাও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, হুগলির নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়নে ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বর্ষার আগে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সেই কাজ সম্পূর্ণ করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, চন্দননগরে হবে পুলিশ কমিশনারেট। এছাড়া পান্ডুয়ায় ৫টি কর্মতীর্থের শিলান্যাসও করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন তিনি বলেন, সিঙ্গুর আন্দোলন নজর কেড়েছিল বিশ্বব্যাপী। সিঙ্গুরের চাষদের জমি ফিরিয়েছি, এখন সেখানে সোনা ফলছে। সিঙ্গুর ফিরে এসেছে শস্যের ভাণ্ডারে। আমাদের সরকার প্রতিশ্রুতি দিলে প্রতিশ্রুতি রাখে।
এদিন ফের একবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ৪০ হাজার কোটি টাকা কেটে নিয়ে চলে যাচ্ছে কেন্দ্রের সরকার। অন্য কোনও সরকার থাকলে কেউ বেতন পেতেন না। এই সরকারের মতো মানবিক সরকার আর নেই। আমরা বাংলায় শান্তির বাতাবরণ তৈরি করেছি। এখন পাহাড় হাসছে, জঙ্গলমহল হাসছে।
মুখমন্ত্রী এদিন কেন্দ্রের মোদী সরকারের নোট বাতিলের সমালোচনা করেন। কেন্দ্রের সরকারকে বিঁধে তিনি বলেন, ৬ মাস আগে যা বলেছিলাম, এখন তা-ই সত্যি হচ্ছে। জিডিপি দুই শতাংশ কমেছে। অনেক যুবক চাকরি হারিয়েছে। নোট বাতিলের ফলে দেশের অর্থনীতিতে নেমে এসেছে চরম আঘাত।
আর এখন বিজেপি আন্দোলনের নামে ছড়ি ঘোরাচ্ছে। মারপিট, তরোয়াল খেলার প্রতিযোগিতা চলছে রাজ্যে। কিছু লোক অশান্তি পাকানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। রেল লাইন থেকে পাথর তুলে নিচ্ছে। কিন্তু এসব বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বাংলার মানুষও এসব মেনে নেবে না বলে জানান তিনি।
কেন্দ্রীর সরকারের গবাদি নির্দেশিকা মানবে না বলে ফের এদিন মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কটাক্ষ, মানুষের আধার নেই, গরুর আধার কার্ড হবে। ওরা বলে দিচ্ছে, কী পরবে, কী খাবে। কে কাকে পুজো করবে- তুমি ঠিক করে দেওয়ার কে? প্রশ্ন তোলেন মমতা। তাঁর কথায়, 'ওরা বাংলার সংস্কৃতি মানবে না। বহিরাগত সংস্কৃতি আমদানি করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু আমরা সর্বধর্ম সমন্বয়ে চলি।'