বাংলা ভাষায় চেতনার ডাক দেবীর আরাধনায়! শিক্ষামূলক নামকরণ বেহালা ক্লাবের, দেখুন ভিডিও
কোথাও যেন মনে হচ্ছে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলা ভাষা। বর্তমান সময়ের অভিভাবকরাও এজন্য অনেকটাই দায়ী। বর্তমান প্রজন্মের বাবা মায়ের দাবি, 'আমার ছেলের, বাংলাটা ঠিক আসে না।
কোথাও যেন মনে হচ্ছে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলা ভাষা। বর্তমান সময়ের অভিভাবকরাও এজন্য অনেকটাই দায়ী। বর্তমান প্রজন্মের বাবা মায়ের দাবি, 'আমার ছেলের, বাংলাটা ঠিক আসে না। 'ইংলিশ' ওর গুলে খাওয়া, ওটাই 'ফাস্ট' ল্যাঙ্গুয়েজ। হিন্দি সেকেন্ড, হিন্দিতে ওর দারুণ তেজ। বাংলা আবার ভাষা নাকি, বেঙ্গলি 'থার্ড ল্যাঙ্গুয়েজ।' এইসব নিয়েই বেহালা ক্লাবের এবারের থিম।
থিম যখন 'বাংলা আমার মাতৃভাষা'
বাংলা ভাষায় কবিতা লিখে রবীন্দ্রনাথ বিশ্বকবি। কিন্তু বর্তমান প্রজন্মের কাছে ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমাদের গর্বের বাংলা ভাষা গুরুত্ব হারাচ্ছে। তাই এই সমাজকে বাংলা সাহিত্যের মর্ম বোঝাতে তথা বাঙালির কাছে বাংলা সাহিত্যের গরিমা তুলে ধরতে বদ্ধপরিকর 'বেহালা ক্লাব'। ৭৪ তম বর্ষে তাই তারা পুজোর থিম হিসেবে বেছে নিয়েছে বাংলা ভাষাকে। থিমের শিক্ষামূলক নামকরণ, 'বাংলা আমার মাতৃভাষা'।
শিল্পীর কথায়
পূজো আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকটা দিন বাকি। তার আগে বেহালা বনমালি নস্কর রোড সংলগ্ন এই ক্লাবর তাই চলছে জোরকদমে পুজোর প্রস্তুতি। তাদের মণ্ডপের বিষয় ভাবনা এবং রূপায়ণে যিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন, তিনি শিল্পী তন্ময় চক্রবর্তী। শিল্পীর কথায়, 'গত বছর বেহালা ক্লাবের বিষয় ছিল , স্ফটিকের তৈরি মণ্ডপ। এবার বাংলা ভাষার ইতিহাস ও তাৎপর্য কতটা সমৃদ্ধ তা-ই ফুটে উঠবে পুজোমণ্ডপের কোণে কোণে। শুধু বড়োরাই নয়। মন্ডপ থেকে কিছু স্মৃতি ও শিক্ষা নিয়ে ফিরবে ছোটরাও। তিনি আরও বলেন, 'বর্তমান সমাজের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে মানুষের কাছে বই পড়ার সময় কোথায় ? তার থেকেও অনেক বেশি জনপ্রিয় নেট সার্ফিং করা। নিন্দুকরা বলছেন, বড়দের দেখাদেখি নতুন প্রজন্মের পড়ার অভ্যাস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আর তার ওপর বাবা-মায়েরাও আজকাল চান না সন্তানরা ইংরেজিতে যতটা স্বচ্ছন্দ হচ্ছে ঠিক মাতৃভাষাতেও ততটাই স্বাচ্ছন্দ থাকুক। ফলে ছোটরাও সেভাবে বাংলা পড়তে চাইছেন না।
দুর্গাপুজো এখন গণমাধ্যম
যেহেতু দুর্গাপুজো এমনই একটা গণমাধ্যম যেখান থেকে মানুষকে কোন বার্তা দেওয়া যায়। সেই অবস্থায় দাঁড়িয়ে বাংলা ভাষায় গৌরব মানুষ তথা নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করছে বেহালা ক্লাব। মণ্ডপের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেহালা ক্লাবের প্রতিমা নির্মাণ করেছেন সৌমেন পাল। আবহের দায়িত্বে শোভন সুন্দর বসু।
কর্মকর্তার কথায়
ক্লাব কর্মকর্তাদের অন্যতম সায়ন্তন ভট্টাচার্য জানান, প্রতি বছরই মস্তিষ্ক প্রসূত দর্শনার্থীদের অন্য এক স্তরে নিয়ে যায় তাদের পুজো। নতুন বার্তা দেয় । তাই বাংলা ভাষাকে ফিরিয়ে আনতে, তথা নতুন প্রজন্মের কাছে নতুন বার্তা দিতে জন্ম আমাদের প্রয়াস 'বাংলা আমার মাতৃভাষা'। তাঁরা আশা করেন সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে বেহালে ক্লাবের এই চিন্তা ভাবনা।