‘বিদ্রোহী’ ভারতী কি তবে বিজেপিতেই! দিলীপ-মুকুলকে চিঠিতে ‘পালাবদলে’র জল্পনা
রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করে গেরুয়া শিবিরের দিকেই অবশেষে ঢলে পড়লেন মুকুল ঘনিষ্ঠ আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষ।
জল্পনাটা ছিলই, তা-ই সত্যি হতে চলল। রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় ফেলে দিলেন এক পুলিশ আধিকারিক। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে 'বিদ্রোহ' ঘোষণা করে গেরুয়া শিবিরের দিকেই অবশেষে ঢলে পড়লেন মুকুল ঘনিষ্ঠ আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষ। এবার সরাসরি বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও মুকুল রায়কে উদ্দেশ্য করে চিঠি লিখলেন দলে যোগদানের ইচ্ছাপ্রকাশ করে। তাঁর সেই চিঠিতেই ফের জল্পনা, তিনি পুলিশের চাকরি ছেড়ে তবে কি বিজেপিতেই যোগ দিতে চলেছেন!
মমতা ঘনিষ্ঠ পুলিশ অফিসার হিসেবে তাঁর বিশেষ পরিচিতি ছিল। স্বভাবতই মমতা ঘনিষ্ঠ মানেই তিনি মুকুল ঘনিষ্ঠও একপ্রকার। মুকুল রায় মমতা-সঙ্গ ত্যাগ করার পর তাই পশ্চিম মেদিনীপুরের সদ্য প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের সমর্থন কোন দিকে যায়, তা নিয়ে চর্চা চলছিল। বিশেষ করে সবং উননির্বাচন উপলক্ষেই এই চর্চা শুরু হয়। সেখানেই গন্ডগোল- ভারতীদেবী সবংয়ের ভোটে বিজেপিকে সাহায্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
তারই প্রভাব পড়ে তাঁর চাকরি জীবনে। যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি 'জঙ্গলমহলের মা' বলে সম্বোধন করেছিলেন, সেই মায়েরই সরকার তাঁকে কম গুরুত্বপূর্ণ পদে বদলি করে দেয়। এই বদলির পিছনে সবং ভোটে অন্তর্ঘাতের অভিযোগই বড় করে দেখা হচ্ছিল। তারপর ভারতী ঘোষের ইস্তফা ও তিন মাসের ছুটি চাওয়ার পিছনেও জল্পনার উদ্রেক হয়।
শেষমেশ সেই জল্পনার একপ্রকার ইতি ঘটালেন স্বয়ং আইপিএস অফিসারই। ভারতী দেবী বিজেপিতে যোগদানের ইচ্ছাপ্রকাশ করে লিখিত আবেদন করলেন বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গিয়েছে। বিজেপির একটা অংশই এই চিঠির প্রাপ্তী স্বীকার করেছেন। এমনকী তিনি মুকুল রায়কেও চিঠি দিয়ে বিজেপিতে যোগদানের ইচ্ছাপ্রকাশ করেন বলে সূত্রের খবর।
আর এই জোড়া চিঠিতেই অনেকটা পরিষ্কার পুলিশের চাকরিতে আর মতি নেই। এবার রাজনীতির ময়দানেই নামতে চান ভারতী ঘোষ। তাঁকে কম গুরুত্বপূর্ণ পদে বদলির জবাব সরকারকে দিতে চান রাজনৈতিকভাবেই, এমনই ব্যাখ্যা রাজনৈতিক মহলের একাংশের। নবান্ন তাঁর উপর রীতিমতো ক্ষুব্ধ ছিল। তার কারণ ইস্তফা ও ছুটি নামঞ্জুর হওয়ার পরও তিনি কাজে যোগ দেননি।
একদা যিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন, সেই আইপিএস অফিসার বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। শনিবারই বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ তাঁকে 'যতটা না পুলিস অফিসার তার থেকেও বেশি তৃণমূল নেত্রী' বলে ব্যাখ্যা করেছিলেন। একদিন পরই সেই পুলিশ অফিসারের রাজনৈতিক পালাবদল বঙ্গ রাজনীতিতে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।