বায়ুদূষণের বাড়বাড়ন্তের নিরিখে গোটা দেশের মধ্যেই দিল্লির পরই স্থান কলকাতার
বায়ুদূষণের বাড়বাড়ন্তের নিরিখে গোটা দেশের মধ্যেই দিল্লির পরই স্থান কলকাতার
কম যানবাহন ও কলকারখানা সত্ত্বেও এবার ক্রমেই কলকাতার বাতাসের স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৬ সালের একটি প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে বায়ুদূষণের ক্ষেত্রে ভারতের মেট্রো শহরগুলির মধ্যে দিল্লির পরই দ্বিতীয় স্থানে বাংলার রাজধানী। ক্রমবর্ধমান বায়ুদূষণের জেরে কপালে চিন্তার ভাঁজ আরও চওড়া হয়েছে পরিবেশবিদদের।
এই বছর দীপাবলি ও কালীপূজোর একদিন পরেই ভিক্টোরিয়া সংলগ্ন এলাকার বায়ুমান ২৮২-র ঘরে পৌঁছে যায়। যা মানুষের শরীরের পক্ষে খুবই 'অস্বাস্থ্যকর' বলে মনে করে দেশের দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড। মজার বিষয় হল, এই স্মৃতিসৌধ সংলগ্ন বিস্তৃত ময়দান বা ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডকে কলকাতার ফুসফুস হিসাবে মনে করেন পরিবেশবিদরা। যানজট আর ধুলো ধোয়ায় ভরা শহর এড়িয়ে স্নিগ্ধ বাতাসের খোঁজে প্রত্যহ সকাল বিকেল এই ময়দান চত্বরেই যান হাজারো শহরবাসী।
এদিকে চলতি সপ্তাহের বুধবার রাতেই কলকাতার বায়ুমান সূচক ৩০০-র ঘরে পৌঁছে যেতেও দেখা যায়। সবুজে মোড়া শহরের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের সদর দফতর সংলগ্ন এলাকাতেও বায়ুমান ছুঁয়ে ফেলে ৩৩৩-র কাঁটা। উৎসবের মরসুমে রবীন্দ্র সরোবর এবং রবীন্দ্রভারতীর মতো জায়গাতেও পরিস্থিতি প্রায় একই রকম ছিল। ওই দুই জায়গায়াতেও বায়ুমানের পৌঁছে যায় যথাক্রমে ৩৪৫ থেকে ৩৮৫-র ঘরে।
সাধারণত বায়ু মান সূচক ২০০-র কাঁটা অতিক্রম করলেই তা মানুষের শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে শুরু করে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। বায়ুমান ০ থেকে ৫০-এর ঘরে থাকলে তাকে 'ভালো’, ৫১ থেকে ১০০-র ঘরে থাকলে 'সন্তোষজনক’ , ১০১ থেকে ২০০-র ঘরে থাকলে মাঝামাঝি এবং ২০১ থেকে ৩০০-র ঘরে থাকলে তাকে 'খারাপ’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। পাশাপাশি ৩০১ থেকে ৪০০-র মধ্যে থাকলে 'খুব খারাপ’ ও ৪০১ থেকে ৫০০-র মধ্যে থাকলে তাকে 'মারাত্মক’ বলে চিহ্নিত করে দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড।
দীপাবলি চলাকালীন, দিল্লির সামগ্রিক বায়ুমান প্রায় ৪০০ থেকে ৬০০-র ঘরে ঘোরা ফেরা করে, সেখানে কলকাতার আটটি জায়গায় বায়ুমান পৌঁছে যায় প্রায় ৩৫০-৪০০-র ঘরে। এই প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করে কলকাতার পরিবেশবিদ সৌমেন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের আশেপাশের বায়ুর গুণগান ক্রমেই খারাপ হয়ে উঠছে আপনি এটা স্বপ্নেও বিশ্বাস করতে পারেন? কলকাতার এই জায়গাগুলিতেই গাছপালার পরিমাণ সবথেকে বেশি ও অনেক খোলামেলা জায়গা রয়েছে। এবার এই তথ্য থেকেই থেকেই স্পষ্ট এবার দীপাবলিতে খারাপ বায়ু মানের নিরিখে দিল্লিকে সমানে টক্কর দিয়েছে কলকাতাও। ”
কলকাতার বায়ুদূষণ কপালে ভাঁজ ফেলে দিয়েছে বিশেষজ্ঞদের