দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল থেকে চপ্পল সরানোর আদেশ দিল না হাইকোর্ট, স্বস্তি আয়োজকদের
কৃষকদের দুর্দশা বোঝাতে দুর্গা পূজা প্যান্ডেল সাজানো হয়েছিল চপ্পল দিয়ে। এক জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল থেকে চপ্পল সরানোর আদেশ পাস করতে অস্বীকার করল।
কৃষকদের দুর্দশা বোঝাতে দুর্গা পূজা প্যান্ডেল সাজানো হয়েছিল চপ্পল দিয়ে। এক জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট দুর্গাপুজোর প্যান্ডেল থেকে চপ্পল সরানোর আদেশ পাস করতে অস্বীকার করল। কলকাতা হাইকোর্ট বৃহস্পতিবার কলকাতার দমদম এলাকার একটি দুর্গাপুজো প্যান্ডেলে চপ্পল অপসারণের আদেশ দিতে অস্বীকার করে।
কেন্দ্রের নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের বিক্ষোভের উপর ভিত্তি করে প্যান্ডেল সাজাতে স্লিপার ব্যবহার করা হয়েছিল দমদমের একটি দুর্গাপুজো মণ্ডপে। তার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতার বাসিন্দা শান্তনু সিংহ একটি পিটিশন দায়ের করে স্লিপারগুলি সরানোর নির্দেশনা চেয়েছিলেন। তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে, প্যান্ডেলে জুতো দেখানো হিন্দু দেবতা দুর্গার প্রতি অসম্মান। এবং এটি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের অনুভূতিতে আঘাত করে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী অ্যাডভোকেট জেনারেল এস এন মুখার্জি যুক্তি দিয়েছিলেন, কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের প্রতিবাদ দেখানোর জন্য জুতোগুলি প্যান্ডেলের বিষয়-ভাবনা প্রদর্শনের অংশ। তিনি আরও বলেন, প্যান্ডেলের গর্ভগৃহে কোনও জুতো রাখা হয়নি এবং শিল্প স্থাপন ও দেব-দেবীর প্রতিমার মধ্যে ১১ ফুট দূরত্ব ছিল। দুর্গাপুজোর আয়োজকদের বিরুদ্ধে লেক টাউন থানায় প্রথম অভিযোগ দায়ের হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতেই আদালেত মামলা দায়ের করা হয়। এদিন সেই মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ বলেন যে, তিনি আবেদনে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেবেন না। কারণ এটি আবেদনে চাওয়া ত্রাণ প্রদানের সমান হতে পারে। তিনি লেক টাউন পুলিশকে ২৫ অক্টোবর তাদের তদন্ত রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেন। রবিবার কলকাতার একজন আইনজীবী প্যান্ডেলে চপ্পল ও জুতা ব্যবহার করা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত বলে বর্ণনা করে দুর্গাপুজো কমিটির আয়োজকদের একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন।
পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্যরা প্যান্ডেল থেকে স্লিপার সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানানোর পর এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আয়োজক কমিটির সেক্রেটারি প্রতীক চৌধুরী অবশ্য বলেন, কৃষি আইনের বিরুদ্ধে কৃষকদের আন্দোলনের উপর আলোকপাত করার জন্য একটি বৃহত্তর থিমের অংশ হিসেবে শিল্প স্থাপন করা হয়েছে।
আয়োজকরা বলেছিলেন যে, তাদের থিমটিতে অতীতের কৃষক আন্দোলনের উল্লেখ এবং উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরি জেলার সাম্প্রতিক সহিংসতার উল্লেখ রয়েছে। আর তাঁদের এই বিষয় ভাবনা বাইরের প্যান্ডেলেই সীমাবদ্ধ থেকেছে। মণ্ডপ পর্যন্ত এই বিষ, ভাবনা বা থিমকে তাঁরা নিয়ে যাননি, তাহলে কেন এত বিতর্ক।