রেঙ্গুনের নয়ানিভরাম বৌদ্ধমন্দির কলকাতার পার্কসার্কাস ইউনাইটেডের সাবেকিয়ানার মূল আকর্ষণ
সুই টাও মিয়েট পায়া। রেঙ্গুনের একটি বৌদ্ধ মন্দির। অসাধারণ কারুকার্যে সমৃদ্ধ। সুবিশাল এই মন্দিরের দিকে তাকালে চোখ ফেরানো যায় না। কলকাতা তথা বাংলার দর্শনার্থীদের কাছে সুখবর, এই নয়নাভিরাম মন্দির পরিদর্শন করতে সুদূর মায়ানমারের রেঙ্গুন শহরে যেতে হবে না। এই শহরের বুকেই উঠে এসেছে এক টুকরো রেঙ্গুন। মায়ানমারের ওই বৌদ্ধ মন্দিরের আদলেই তৈরি হয়েছে পার্কসার্কাস-বেনিয়াপুকুর ইউনাইটেড পুজো কমিটির মণ্ডপসজ্জা।
এক কথায় অসাধারণ। শিল্পীর হস্তনৈপুণ্যের সার্থক নমুনা। দেখে বোঝার উপায় নেই, কে আসল, কে নকল। স্রেফ কাঠ, অ্যালুমিনিয়াম আর কাপড় দিয়ে এই অসাধারণ কারুকার্যের স্বাক্ষর রেখেছেন শিল্পীরা। সাদা আর সোনালি রঙ মেখে কলকাতার বুকে জীবন্ত রূপ পেয়েছে রেঙ্গুনের মন্দির। পুজো ও মেলা কমিটির চেয়ারম্যান অজয় কর জানালেন, আমরা কোনওদিনই থিম পুজোয় বিশ্বাসী নই।
বরাবর সনাতন রীতি মেনে সাবেকিয়ানায় জোর দিয়েছি। প্রকৃত অর্থেই মাতৃ আরাধনাতেই মনপ্রাণ ঢেলে দেওয়া হয় এই পুজোয়। একটা পরিবার যাতে এই পুজোয় এসে সময় কাটাতে পারে, তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা রাখি আমরা। আকর্ষণ বলতে সাবেকি প্রতিমার অধিষ্ঠান যেখানে হবে, সেই মণ্ডপসজ্জা। সেখানেও কোন থিম নয়। আমরা তো দেবীর পুজো করি মন্দিরে। এখানেও মন্দিরে অধিষ্ঠান দেবী দুর্গার। এক্ষেত্রে এমন একটা মন্দিরের আদল আমরা তুলে ধরেছি, যা দর্শনার্থীদের ভালো লাগবে।
প্রতিমাসজ্জায় নিখাদ সাবেকিয়ানা। একেবারে মৃন্ময়ী দুর্গা। কলেজ স্কোয়ার ও একডালিয়া পার্কের মতো এখানেও সনাতনী প্রথার অন্যথা হয় না। এই তিন মণ্ডপের প্রতিমা করেন সনাতনরুদ্র পাল। চিরাচরিতভাবে এই রীতি চলে আসছে। আর গোটা পরিবার নিয়ে যাতে দর্শনার্থীরা এই পুজোয় অংশ নিতে পারে তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়।
এমনিতেই এখানে যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। শিশুদের ঠাকুর দেখার পাশাপাশি সময় কাটানোর জন্য পার্কে মেলা বসে। সেই মেলায় বিদেশ থেকে দোলনা আনা নয়। এবার ১৪টি দোলনা আনা হয়েছে। প্রায় ১৫০টি স্টল হয়েছে মেলায়। সেখানে দর্শনার্থীরা কেনাকাটা করতে পারবেন।
আদতে আমাদের এই দুর্গা আরাধনা রূপ নেয় একটা উৎসবে। বরাবর এই রেওয়াজ চলে আসছে। অন্য পুজো মণ্ডপে ঠাকুর দেখে এসে দর্শনার্থীরা যেন আমাদের মণ্ডপে দীর্ঘ সময় কাটান, নিবেদন পার্ক সার্কাস বেনিয়াপুকুর ইউনাইটেড পুজো কমিটির।