বনেদি বাড়ির পুজোর তালিকায় 'মাস্ট সি' খেলাৎ ঘোষের বাড়ির পুজো
পাথুরিয়াঘাটায় খেলাৎ ঘোষ দুর্গাপুজো শুরু করেন আনুমানিক ১৮৪৬ সালে। রামকৃষ্ণ এই বাড়িতেই দেহত্যাগ করেন। এই বাড়িতে এসেছেন মহাত্মা গান্ধী এবং বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
কলকাতায় বনেদি বাড়ির পুজোর তালিকায় একেবারে 'মাস্ট সি'-র তালিকায় অন্যতম পুজো এটি। বর্ধমান থেকে ব্যবসার সূত্রে কলকাতায় এসে পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটে বাড়ি তৈরি করেন রামরাম ঘোষ। আনুমানিক ১৭৮৪ সালে বাড়িটি তৈরি হয়। কলকাতা বাসের সূচনা করলেও, পাথুরিয়াঘাটা ঘোষ বংশের প্রতিষ্ঠাতা রামরামের ছেলে রামলোচন ঘোষ। ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানির ব্যবসায়ী ছিলেন তিনি। হেস্টিংসের আমলে দেওয়ানও হন তিনি। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে ৪৬ পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটের বাড়িতে দুর্গাপুজো শুরু করেন। রামলোচনের তিন পুত্র শিবনারায়ণ, দেবনারায়ণ এবং আনন্দনারায়ণ।
রামলোচনের মেজো ছেলে দেবনারায়ণের ছেলে খেলাৎচন্দ্র ঘোষ উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি ১৮৪৬ সাল নাগাদ পুরনো বাড়ির পাশেই ৪৭ পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটে দুর্গাদালানসহ নতুন বাড়ি তৈরি করে উঠে যান এবং সেখানে দুর্গাপুজো শুরু করেন। এখন সেটাই পাথুরিয়াঘাটা রাজবাড়ি। এই বাড়িতে এসেছেন শ্রীরামকৃষ্ণ এবং মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। এই ভবনেই দেহত্যাগ করেন রামকৃষ্ণ। সেই সময় বাড়ির কর্তা ছিলেন খেলাত ঘোষের ছেলে রামনাথ ঘোষ। কথা সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্য়ায় এই বাড়িতে আসতেন।
[আরও পড়ুন:পুজোর ক'টা দিন কলকাতার বাদামতলা আষাঢ় সংঘে ঘাঁটি গাড়ছে নাবিক কলম্বাসের দেশ ]
মার্টিন অ্যান্ড বার্নের তৈরি এই বাড়িতে মঠচৌরি চালের মহিষাসুরমর্দিনী প্রতিমায় পুজো হয়। পরানো হয় রুপোলি ডাকের সাজ। রুপোলি তবকে মোড়া সিংহাসনে দেবীর অধিষ্ঠান। পুজোয় ব্যবহার করা হয় রুপোর বাসন। ডাকের সাজের একচালা মা দুর্গার পায়ের কাছে সিংহের বদলে থাকে ঘোটক সিংহ। লুচি-মিষ্টি-মণ্ডা ভোগের সঙ্গে থাকে চিনির মঠ। আগে কাশী থেকে এলেও, এখ স্থানীয় মঠই দেওয়া হয় ভোগে।
বিলুপ্ত হয়ে যাওযায় নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানো অবশ্য এখন বন্ধ।