অনাস্থা খারিজ করায় বিধানসভার বাইরে নকল অধিবেশন বসিয়ে প্রতিবাদ বাম-কংগ্রেসের
বাজেট অধিবেশনও বয়কট করে নকল অধিবেশনে ‘ভাঁওতার বাজেট’-এর প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা। ফের তারা নকল অধিবেশনকেই হাতিয়ার করলেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ হয়ে যাওয়ায় বিধানসভার বাইরে নকল অধিবেশন বসালেন বাম-কংগ্রেসের বিধায়করা। শুক্রবার এই নকল অধিবেশনেই সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের প্রতিবাদ জানানো হয়। তুলে ধরা হয় সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অনাস্থার বিষয়গুলি। এই নকল অধিবেশনে বিধানসভা অধ্যক্ষের ভূমিকা নেন বিশ্বনাথ চৌধুরী। আর মুখ্যমন্ত্রী সাজেন জাহানারা খান।
বাম-কংগ্রেসের বিধায়কদের আনা এই অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ হয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবারই বিধানসভা বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কক্ষের বাইরে নকল অধিবেশন বসিয়ে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হবে বলেও জানানো হয়েছিল। একেবারে বিধানসভা সাজিয়ে এদিন নকল অধিবেশন বসানো হয়েছিল কক্ষের বাইরে। সেখানে অনেক বিধায়ক তৃণমূল মন্ত্রীদের ভূমিকাও নেন।
গত ফেব্রুয়ারিতেও বাজেট অধিবেশেন বয়কট করে এমনই নকল অধিবেশন বসিয়েছিলেন বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা। সেই নকল অধিবেশন থেকেই বার্তা দেওয়া হয়েছিল রাজ্যে ভাঁওতার বাজেট পেশ করা হয়েছে। আবারও সেই নকল অধিবেশন। এবার অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের বিরুদ্ধে বিরোধীদের সম্মিলিত প্রতিবাদ।
বামেদের নবান্ন অভিযানের দিন সুজন চক্রবর্তী-সহ বাম বিধায়কদের সঙ্গে নবান্ন গেটে দুর্ব্যবহার করা হয়েছিল অভিযোগ। বিধায়ক হিসেবে তাঁদের অধিকার রয়েছে নবান্নে যাওয়ার, তা সত্ত্বেও পুলিশ তাঁদের বাধা দিয়ে গ্রেফতার পর্যন্ত করা হয়েছিল। এরই প্রতিবাদে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়। পাল্টা বাম বিধায়কদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে অধ্যক্ষের অনুমিত না নিয়েই বিধানসভা ত্যাগ করেছিলেন। ফলে বিধানসভার আইনভঙ্গ করে দোষ করেছেন বাম বিধায়করাই। এই যুক্তিতেই খারিজ করে দেওয়া হয় অনাস্থা প্রস্তাব।
এর পাশাপাশি আরও একটা যুক্তি খাড়া করা হয় প্রস্তাব খারিজের জন্য। বিধানসভার অধ্যক্ষ জানান, ছ'মাসের মধ্যে দু'বার অনাস্থা প্রস্তাব আনা যায় না। তাই বিরোধীদের এই প্রস্তাব খারিজ করে দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে কোনও আলোচনা সম্ভব নয় জানিয়ে দেন অধ্যক্ষ। এর পরিপ্রেক্ষেতি বিরোধী দলনেতা বলেন, ২০০২ সালে বর্তমান সরকারের বিদ্যুৎমন্ত্রী ছ'মাসের মধ্যে দু'বার অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন। এখন ক্ষমতায় বসে তারা স্বৈরাচারী মনোভাব পোষণ করছেন। তারই প্রতিবাদে আসল অধিবেশন বয়কট করে নকল অধিবেশনে প্রতিবাদ জানানোর পথে হাঁটেন বিরোধী বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা।