মমতাই এক নম্বরে বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে! দিলীপ ঘোষের মন্তব্যে জোর জল্পনা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে দেখতে চান তৃণমূল নেতারা। এবার সবাইকে চমকে দিয়ে দিল্লির মসনদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে চাই বলে মন্তব্য করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
এতদিন তৃণমূলের অন্দরে কিংবা মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহলে কেউ কেউ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে দেখতে চেয়েছিলেন। এবার সবাইকে চমকে দিয়ে দিল্লির মসনদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে চাই বলে মন্তব্য করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রাজ্যে তৃণমূলের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির রাজ্য সভাপতির মুখেই এই দাবি শুনে তাজ্জব রাজনৈতিক মহলের একাংশও।
মুখ্যমন্ত্রীর সাফল্য কামনায় দিলীপ ঘোষ
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জন্মদিনের শুভেচ্ছা দিতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনে দিলীপ ঘোষ বলেন, আমাদের মুখ্যমন্ত্রীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাই। তাঁর সুস্থতা ও সাফল্য কামনা করি। উনি বাংলার মুখ। ওনার সুস্থ থাকাটা জরুরি। কারণ ওনার সুস্থ থাকার উপরই বাংলার ভাগ্য নির্ভর করছে।
মমতাকে প্রধানমন্ত্রী চান দিলীপ ঘোষ
এরপরই বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুস্থ থাকাটা এ জন্যই জরুরি যে, বাঙালি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী যদি কেউ হন, তবে ওনার সম্ভাবনা আছে। জ্যোতি বসুকে আমরা একটুর জন্য ফসকেছি, ওনার সুযোগ এসেছিল, কিন্তু ওনার পার্টি তা হতে দেয়নি। এখন সুযোগ আছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। ওনার নামই এক নম্বরে আছে।
বাঙালি রাষ্টপতির পর বাঙালি প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, এর আগে প্রণববাবু রাষ্ট্রপতি হয়েছে। এরপর একজন বাঙালির প্রধানমন্ত্রী হওয়া প্রয়োজন। এরপরই দিলীপবাবুকে প্রশ্ন করা হয়, কেন বিজেপি থেকে কোনও বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন না। তার প্রত্যুত্তরে দিলীপ ঘোষের জবাব, পরে হয়তো হবে, কিন্তু প্রথমে নাম আছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই।
খাতায় কলমে মমতার জন্মদিন ৫ই
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, যে ৫ জানুয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাতায় কলমে জন্মদিন হলেও, মুখ্যমন্ত্রীর প্রকৃত জন্মদিন দুর্গাপুজোর সন্ধিপুজোর দিন। ওইদিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মদিন পালন হয়। শুভেচ্ছার বন্যা বইয়ে দেন রাজনৈতির নেতা থেকে অনুগামীরা। এদিন তাঁর জন্মদিন পালন করেত দেখা যায়নি কোনও মহলেই।
বিজেপির রণেভঙ্গ? প্রশ্ন
দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের পর প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি ২০১৯-এর আগে রণেভঙ্গ দিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি? ভোটের আগেই কার্যত হার স্বীকার করে নিলেন। তাঁর কথায় স্পষ্ট, শুধু বাংলাতেই নয়, ২০১৯-এ দিল্লির কুর্সিতেও বদল আসন্ন বলে ধরে নিয়েছেন তিনি।
বিজেপি-তৃণমূলের আঁতাত জল্পনা
সিপিএম বা বামেদের পক্ষ থেকে প্রায়শই অভিযোগ করা হয়, বিজেপি-তৃণমূলের গোপন আঁতাতের। এদিন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য ফের সেই জল্পনা উসকে দিল। তা না হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এইভাবে তুলে ধরবেন কেন!
রাজনৈতিক অভিসন্ধি নেই
যদিও বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যের পিছনে কোনও রাজনৈতিক অভিসন্ধি নেই বলে দাবি করা হয়েছে। তিনি একেবারেই ব্যক্তিগতভাবে বাঙালি প্রধানমন্ত্রী দেখার ইচ্ছা থেকেই এই কথা বলেছেন। আর এই তালিকায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে অগ্রগণ্য, তা-ই তিনি বোঝাতে চেয়েছেন।
দিলীপের মন্তব্য, তাৎপর্যপূর্ণ
তবে দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্য নিয়ে বিজেপিতে অস্বস্তি বাড়লেও, তৃণমূলের একাংশ দিলীপবাবুর মন্তব্যকে তাঁর বোধোদয় বলে মন্তব্য করেছেন। তাঁর মূল্যায়ন সঠিক বলেই ব্যাখ্যা করেছেন অনেকে। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের এই নরম মনোভাব যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেও মনে করছে রাজনৈতিক মহল।