মাত্র ৪০ মিনিটেই এখন ডেঙ্গু নির্ণয় সম্ভব
ডেঙ্গু আতঙ্কে থরহরি কম্প কলকাতা -সহ আশপাশের জেলার মানুষ। কারণ, বর্তমানে এই রোগ মহামারির আকার ধারণ করেছে। নিত্যদিন শহরের হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্তদের মৃত্যুর খবর শিরোনামে চলে আসছে। সঠিক সময় রোগীর ডেঙ্গু ধরা না -পড়লে,বড়জোর তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে সব শেষ। শিশু থেকে বয়স্ক কেউ বাদ নেই। প্রাণ হারাচ্ছেন প্রিয়জনেরা। ভেসে যাচ্ছে সংসার।
গত কয়েক মাস ধরে ডেঙ্গুর দাপটে এরাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে বই কমেনি। বর্তমানে শহরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ১১ হাজারের বেশি। এই সংখ্যয় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে চিকিৎসকদের। এই পরিস্থিতির মধ্যে এবার মশাবাহিত রোগ নিয়ে বড়সড় পদক্ষেপ নিল কলকাতা পুরসভা। কম সময়ে ডেঙ্গু রোগ নির্ণয়ের জন্য নতুন যন্ত্র নিয়ে আসা হল। নাম 'পলিমিয়ার্স চেইন রিঅ্যাকশন' বা পিসিআর।
বর্তমানে এলাইজা পদ্ধতিতে ডেঙ্গু নির্ণয় করা হয় কলকাতা পুরসভার সমস্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। এই পদ্ধতিতে এনএসওয়ান, আইজিএম এবং আইজিজি-এই তিনটি ধাপে ডেঙ্গু নির্ধারণ করা হয়। এলাইজা পদ্ধতিতে প্রাথমিক রিপোর্ট পেতে কমপক্ষে চার ঘন্টা সময় লাগে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অত্যধুনিক পিসিআর যন্ত্রে রোগ নির্ণয় করতে এক ঘণ্টারও কম সময় লাগবে। কারণ, মাত্র ৪০ মিনিটেই রিপোর্ট পাওয়া যাবে। জ্বরের প্রথম দিন থেকেই পিসিআর মেশিনে ডেঙ্গু নির্ণয় সম্ভব। এই নতুন যন্ত্রের সাহায্যে আরও নিখুঁতভাবে ডেঙ্গু নির্ণয় সম্ভব বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
এলাইজা পদ্ধতিতে মেশিনকে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রাখতে হয় অর্থাৎ নির্দিষ্ট ঘর ছাড়া এই পরীক্ষা অসম্ভব। অন্যদিকে পিসিআর যন্ত্রে তাপমাত্রার কোনও মাপদন্ড নেই। তাই হাসপাতালের বাইরে নিয়ে গিয়েও এই যন্ত্রে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা সম্ভব।
পিসিআর মেশিনের তিনটে অংশ রয়েছে। প্রথমে ইনকিউবেটরে স্যাম্পল জমা করতে হয়। পরের ইউনিটে ব্লাড স্যাম্পল ৫ থেকে ১০ মিনিট স্টেবল রাখতে হয়। থার্ড বামেন ইউনিটি ভাইরোলজি রিডিং অর্থাৎ কত শতাংশ জীবাণু রয়েছে তা নির্ণয় করা হয়।
পিসিআর মেশিনের আরেকটি সুবিধা হল, এতে ব্লুটুথ এর সাহায্যে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের সঙ্গে যুক্ত করা যায়। এই যন্ত্র সম্পূর্ণ অ্যান্ড্রয়েড নির্ভর। পুরসভা সূত্রে আরো জানা গিয়েছে, কলকাতায় আপাতত তিনটি পিসিআর মেশিন আনা হয়েছে । পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহারের পরই নিয়মিতভাবে তিনটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চালু করা হবে পিসিআর পদ্ধতিতে ডেঙ্গু নির্ণয়।