ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারের অভিসন্ধি ফাঁস করলেন বিরোধীরা, নবান্ন কেন আদালতের দ্বারস্থ
ডিএ বিতর্ক ফের গড়াল আদালতের দোরগোড়ায়। কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া সময়সীমা যখন একেবারে শেষের মুখ তখনই আইনের দ্বারস্থ হয়ে রাজ্য বুঝিয়ে দিল তারা আসলে কী চায়! রাজ্যকে বার্তা দিয়ে বিরোধীরা বলছেন, এসব নিছকই সময় নষ্টের খেলা।
ডিএ বিতর্ক ফের গড়াল আদালতের দোরগোড়ায়। কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া সময়সীমা যখন একেবারে শেষের মুখ তখনই আইনের দ্বারস্থ হয়ে রাজ্য বুঝিয়ে দিল তারা আসলে কী চায়! রাজ্যকে বার্তা দিয়ে বিরোধীরা বলছেন, এসব নিছকই সময় নষ্টের খেলা। সময় কিনতেই রাজ্য এখন গিয়েছে আদালতের দরবারে।
সময় কেনার খেলায় নেমেছে তৃণমূল সরকার
বিরোধীদের কথায়, তিনমাস সময় দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছিল, রাজ্যকে তিনমাসের মধ্যে বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে রাজ্য সরকারি কর্মীদের। কিন্তু এই তিনমাসে রাজ্য সরকার কোনও পদক্ষেপ করেনি। ১৯ অগাস্ট শেষ হয়ে যাবে সেই মেয়াদ। এখন হাইকোর্টে পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে সময় কেনার খেলায় নেমেছে তৃণমূল সরকার।
যত কাণ্ড আদালতের সময়সীমা শেষ হওয়ার মুহূর্তে
বিরোধীদের অভিযোগ, যদি রাজ্য সরকার পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাতেই চেয়েছিল, তাহলে আদালতের রায়ের পরই তা জানাতে পারত। কিন্তু তা না করে নবান্ন আর্জি জানাল সময়সীমা যেখন শেষ হতে চলেছে, তখনই। আসলে রাজ্যের এই উদ্যোগ, আদালত অবমাননার হাত থেকে বাঁচতে। তা না হলে আদালতের সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ার মুহূর্তে তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হত না।
সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে কোনও ফায়দা হবে না, বুঝেই...
একদিকে সময় নষ্টের অছিলা, অন্যদিকে আদালত অবমাননার হাত থেকে বাঁচতেই রাজ্য সরকার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। তাঁরা আরও বলছেন, রাজ্য সরকার বুঝে গিয়েছে সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে কোনও ফায়দা হবে না। তাই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে সময় কিনতে চাইছে রাজ্য। রাজ্য দাবি করেছে, তাদের আরও সময় দেওয়া হোক।
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের প্রতি রাজ্য সরকার সদয়
তৃণমূলের তরফে দাবি, ডিএ বৃদ্ধির আগে রাজ্য সরকার ভাঁড়ারে অবস্থা তো দেখতে হবে। দেখতে হবে ডিএ বৃদ্ধি করতে গিয়ে রাজ্য সরকার মুখ থুবড়ে পড়তে হয় কি না। শুধু তো সরকারি কর্মীদের দিকে দেখলেই হবে না। পুরো রাজ্যবাসীর ভালো থাকা নির্ভর করছে সরকারের উপর। আর রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের প্রতি রাজ্য সরকার সদয়। তাই ডিএ কম করে হলেও বাড়িয়ে চলেছে। কেন্দ্রের সমহারে পারেনি, কিন্তু রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ তো বাড়ানো হচ্ছে।
খেলা-মেলা করছে অথচ সরকারি কর্মচারীদের বঞ্চনা
রাজ্যের এহেন দাবিকে উৎখাত করে বিরোধীদের বার্তা, এই সরকারের খেলা-মেলা করার পয়সা আছে। আর রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ দেওয়ার মতো টাকা নেই! রাজ্য সরকারে যদি তেমন অবস্থা হত, তাহলে নয় ভাবা যেত। কিন্তু আনন্দে মেতে তারা খেলা-মেলা করছে আর সরকারি কর্মচারীদের বঞ্চনা করে যাচ্ছে, দুটো একইসঙ্গে চলতে পারে না।
অবস্থান-বিক্ষোভ ও কর্মবিরতির ঘোষণা
অর্থ-পর্যবেক্ষকদের মতে, ডিএ মেটাতে গেলে প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা লাগবে। রাজ্যর বর্তমানে ব্যয়বরাদ্দ সামলে এই টাকার ব্যবস্থা করা খুবই সমস্যার। কিন্তু সেই যুক্তি মানছে না রাজ্য কো অর্ডিনেশন কমিটি ও বিরোধী সংগঠনের অনান্যরা। তাঁদের কথায়, রাজ্য সরার আইন-আদালত মানে না, এসব শুধু সময় নষ্ঠেক কৌশল। এর প্রতিবাদে আমরা ১৭ অগাস্ট বেলা ১২টা থেকে নব মহাকরণের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করব। ৩০ অগাস্ট রাজ্যজুড়ে ২ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালিত হবে।