সীতারাম ইস্যুতে কারাতের সমালোচনা, শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ গৌতম দেবের বিরুদ্ধে
কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গান্ধী রাজ্যসভায় প্রার্থী হিসেবে সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরির নাম প্রস্তাব করার পর থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। চাপানউতোর শুরু হয় সিপিএমের অন্দরেই।
প্রকাশ্যে প্রকাশ কারাত শিবিরের সমালোচনা করায় কড়া জবাব চাওয়া হল গৌতম দেবের কাছে। সোমবার সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে সমালোচিত হলেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএমের সম্পাদক গৌতম দেব। এদিন শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে গৌতম দেবের বিরুদ্ধে দলকে চিঠি দেয় বর্ধমান জেলা কমিটি। সিপিএম সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এর পরিপ্রেক্ষিতে জানান, গৌতম দেবের বক্তব্য সমর্থন করে না রাজ্য কমিটি।
কংগ্রেস সহ সভাপতি রাহুল গান্ধী রাজ্যসভায় প্রার্থী হিসেবে সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরির নাম প্রস্তাব করার পর থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। চাপানউতোর শুরু হয় সিপিএমের অন্দরেই। প্রথমে বিতর্ক শুরু হয় এক পদ এক প্রার্থী নিয়ে। সীতারাম ইয়েচুরি যেহেতু সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক, সেইহেতু তাঁকে তৃতীয়বার রাজ্যসভায় পাঠানোর ব্যাপারে সম্মত ছিল না কেন্দ্রীয় কমিটি। তবু বিষয়টি বিবেচনাধীন রাখা হয়।
এরই মধ্যে গৌতমবাবু মন্তব্য করে বসেন, 'সীতারামকে কোনওমতেই প্রার্থী করবে না দল। জ্যোতিবাবু যে কারণে প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি, সেই একই কারণে রাজ্যসভার প্রার্থী হতে পারবেন না সীতারাম ইয়েচুরি। আসলে দক্ষিণের কমরেডরা এখন পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটিতে সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাই সীতারামের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বে না।' এমনকী সীতারামের নাম খারিজের পরও গৌতমবাবু বলেন, 'সীতারামকে প্রার্থী না করে ফের ভুল করল দল।'
গৌতমবাবু বরাবরই বড় বেশি খোলামেলা। সোজা কথা সোজাভাবে বলতেই ভালোবাসেন। পার্টি-শৃঙ্খলের তিনি তোয়াক্কা করেননি কোনওদিনও। বাস্তব ভিত্তির উপর দাঁড়িয়েই তিনি কথা বলেন, তত্ত্ব-কথার ধার ধারেন না। তাই তিনি দলের কঠোর অনুশাসন অমান্য করেই বলেছিলেন, 'সীতারাম ইয়েচুরি যোগ্য ছিলেন সাংসদ পদপ্রার্থী হিসেবে। তিনি সংসদে গেলে তবু দলের কথা বলার মতো একজন থাকত।'
উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় কমিটি সীতারাম ইয়েচুরির নাম অনুমোদন করেনি। কংগ্রেসের সমর্থনে রাজ্যসভায় পাঠানো নিয়ে তাঁদের আপত্তি। এ প্রসঙ্গে গৌতমবাবু বলেছিলেন, 'কংগ্রেসের সমর্থনই যদি সীতারামকে রাজ্যসভায় পাঠানোর মাপকাঠি হয়, তবে কংগ্রেসের সমর্থনেই তো দু-জন সাংসদ লোকসভায় গিয়েছেন। তাঁদের ব্যাপারে কী হবে? দল যে পদ্ধতিতে চলছে, তাতে রাজ্যে এর খারাপ প্রভাব পড়তে বাধ্য।'
গৌতমবাবুর এই সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতেই রাজ্য কমিটির বৈঠকে জবাবদিহি চাওয়া হয়। বর্ধমান জেলা কমিটি চিঠি দিয়ে দলকে জানায় বিষয়টি। গৌতমবাবুর কাছে জবাবদিহি চাওয়া হবে। প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেবে তারা। দলের তরফে রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র জানান, 'গৌতমবাবুর বক্তব্য সমর্থন করে না দল। ওটা গৌতমবাবুর ব্যক্তিগত মত।'