ধর্ষণকাণ্ডে ঋতব্রতর হয়ে ওকালতি! মুকুল ঘনিষ্ঠ মহিলাকে নোটিশ ধরাল সিআইডি
মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ ডা. অর্চনা মজুমদার ফোন করে এবং এসএমএস করে অভিযোগকারী নম্রতা দত্তকে বারবার ঋতব্রতর বিরুদ্ধে করা যাবতীয় অভিযোগ তুলে নিতে অনুরোধ করেন। তার পরিপ্রেক্ষিতেই সিআইডি-র নোটিশ।
ঋতব্রত-কাণ্ডে এবার মুকুল ঘনিষ্ঠ চিকিৎসক অর্চনা মজুমদারকে নোটিশ পাঠাল সিআইডি। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বহিষ্কৃত সিপিএম সাংসদকে ধর্ষণকাণ্ড থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই তাঁকে তলব করে নোটিশ পাঠাল সিআইডি-র বিশেষ তদন্তকারী দল।
মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ ডা. অর্চনা মজুমদার ফোন করে এবং এসএমএস করে অভিযোগকারী নম্রতা দত্তকে বারবার ঋতব্রতর বিরুদ্ধে করা যাবতীয় অভিযোগ তুলে নিতে অনুরোধ করেন। এরপর নম্রতা দত্ত তদন্তকারীদের কাছে নালিশ করেন অর্চনা দেবীর নামে। এমনকী এই ঘটনায় মুকুল রায়ের ইন্ধন রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর ঋতব্রতর মুকুল রায়ের কথা শুনেই চলছেন। তিনিই অর্চনাদেবীকে পাঠান মধ্যস্থতার জন্য।
বহিষ্কৃত সিপিএম সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নম্রতাকে দিল্লিতে তাঁর ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে একাধিকবার সহবাস করেন। কিন্তু পরে তিনি টাকার বিনিময়ে সবকিছু মিটমাট করে নেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু নম্রতা চান স্বীকৃতি। তাই তিনি প্রশাসনের শরণাপন্ন হন মর্যাদার প্রশ্নে।
তিনি টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছেও সাহায্য প্রার্থনা করেন। এরপর বালুরঘাট থানায় তিনি ঋতব্রতর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। এদিকে সিআইডিও তৎপর হয় সাংসদ ঋতব্রত-র বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগের তদন্তে। সিআইডি দুবার অভিযুক্ত সাংসদকে নোটিশ পাঠায়। কিন্তু দুবারই সিআইডি হাজিরা এড়িয়ে গিয়ে তিনি ১৫ দিনের সময় চান।
এরপর এই ঘটনায় প্রকাশ্য আসে অর্চনাদেবীর নাম। অর্চনা মজুমদার মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ। তাঁকে নিজাম প্যালেস থেকে শুরু করে অনেক অনুষ্ঠানেই সম্প্রতি দেখা যাচ্ছিল মুকুল রায়ের সঙ্গে। সেই অর্চনাদেবীর নামেই অভিযোগ করেন নম্রতা। অভিযোগ তিনি ঋতব্রতর হয়ে ওকালতি করতে আসছেন। তিনি তাঁকে বোঝাচ্ছেন সমস্ত মামলা তুলে নিতে।
এর আগে ঋতব্রতর এক বান্ধবী দুর্বা সেনের নাম প্রকাশ্যে আসে। তিনি ঋতব্রতর পাশে দাঁড়িয়ে পুরো বিষয়টি দেখছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধেও হমকি দেওয়ার অভিযোগ তোলেন নম্রতা। এরপর দুর্বাদেবী নম্রতার বিরুদ্ধে মামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। কিন্তু ক্রমেই দুর্বাদেবী সরে যান এই ঘটনা থেকে, উঠে আসে অর্চনাদেবীর নাম। তিনি আবার মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ হওয়ায় রাজনৈতিক মহলে চর্চা চরমে ওঠে।
অর্চনাদেবীর বক্তব্য ছিল, তিনি কোনওদিন নম্রতাকে ফোন করেননি। বরং নম্রতাই তাঁকে ফোন করেছিলেন। ঋতব্রত ইস্যুতেও তিনি কোনওদিন মাথা ঘামাননি। তিনি মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ বলেই তাঁকে এই ঘটনায় জড়ানো হচ্ছে। তিনি টার্গেট হয়ে গিয়েছেন। তিনি বিবৃতি প্রকাশের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন। এখন দেখার সিআইডির মুখোমুখি হয়ে তিনি কী জানান।