কলকাতার বড়দিন মানেই এই ১২টি জিনিস, যা ছাড়া উৎসবটাই মাটি, জানুন একক্লিকে
অবলীলায় পার্কস্ট্রিটের বড়দিনের উৎসবকে বাঙালির বড় উৎসবের সঙ্গে তুলনায় টানতে পারেন। অন্তত বড়দিনের পার্কস্ট্রিট তো আদতে কার্নিভালেরই রূপ নেয়।
অবলীলায় পার্কস্ট্রিটের বড়দিনের উৎসবকে বাঙালির বড় উৎসবের সঙ্গে তুলনায় টানতে পারেন। অন্তত বড়দিনের পার্কস্ট্রিট তো আদতে কার্নিভালেরই রূপ নেয়। তাই এই ডিসেম্বরের জন্য বাকি ১১ মাস অপেক্ষা করে থাকেন অনেকে। ডিসেম্বর এলেই বাতাসে মেশে কেকের গন্ধ। যার জেরে পার্কস্ট্রিটকে ঘিরে তৈরি হয় উৎসবের আমেজ। পরিবারের সঙ্গে উৎসব উদযাপনের এক অনন্য ছবি ধরা পড়ে।
বাড়িতে তৈরি কেক
যে জিনিসটা ছাড়া বড়দিনের আনন্দটাই মাটি, তা হল কেক। আর সেই কেক যদি বাড়িতে তৈরি হয় তো কথাই নেই। ক্রিসমাসের কেক ছাড়া ক্রিসমাসের প্যান্ডাল হপিং- নৈব নৈব চ। তাই ক্রিসমাস এলে বাড়িতে বাড়িতে নানা স্বাদের কেক তৈরি যেমনস হয়, তা রসনা তৃপ্তিও করে কলকাতাবাসীর। আর এই রসনাতৃপ্তির তালিকায় ফলের কেক, আখরোটের কেক, প্লেইন কেক এবং প্লাম কেক- কত কিছুই না আছে।
বড়দিন মানেই খাওয়া-দাওয়া
ক্রিসমাস মানেই কিন্তু খাওয়া। রসনাতৃপ্তির এক আলাদা অনুভূতি। আর পার্কস্ট্রিটের বড়দিনে জায়গা করে নেয় ডাক ভিন্দালু, পিজ পোলাও, ইয়েলো রাইস, কোপ্তা মালাইকারি, চিকেন বা টার্কি রোস্ট, সল্ট মিট, রোজ-কুকিজ ও কুলকুলসের মতো আরও নানা পছন্দের পদ। ক্রিসমাসের কেকের বিভিন্ন স্বাদের সঙ্গে এইসব পদও আলাদা করে তৃপ্তি দেয় বড়দিনে।
বড়দিনের অঙ্গ শপিং
কোনও উৎসব কি কেনাকাটা ছাড়া হতে পারে। তেমনই বড়দিনের উৎসব তো নয়ই। যে উৎসবের মূল কেন্দ্র পার্কস্ট্রিট, সেখানে কেনাকাটা হবে না, ‘মেলা' বসবে না, তা কি হয়? তাই বড়দিনে কেনাকাটা হবে এই জন্যই যে বড়দিনের উপহার এক আলাদা মর্যাদার। পোশাক থেকে পরনের নানা সামগ্রী কেনাকাটা চলে দিনের শুরু থেকে রাতের শেষ পর্যন্ত।
পোশাকশিল্পীদের ব্যস্ততা
উৎসব যখন, তখন পোশাক ছাড়া চলেই না। নতুন পোশাক ছাড়া কোনও উশবই উৎসব নয়। আর উৎসবের পোশাক যখন আছে, তখন পোশাকশিল্পীদের ব্যস্ততা তুঙ্গে। ক্রিসমাস উৎসবের আগে টেলারদের তৈরি বস্ত্র সবসময়ই আলাদা মর্যাদা পেয়ে এসেছে। কারণ, রেডিমেড জামাকাপড়ের থেকে টেলারের তৈরি মনপসন্দ পোশাকে মানুষের আগ্রহ বেশি।
বড়দিনে গির্জা ভ্রমণ
বড়দিনে গির্জাকে কেন্দ্র করে উৎসবের আয়োজন। বড়দিনের বিশেষ প্রার্থনা তো আছেই, সেইসঙ্গে গির্জা দর্শনের একটা বিশেষ ইচ্ছা থাকে ভ্রমণপিপাসু বাঙালির। বাঙালিরা এদিনটিকে বেছে নেন গির্জায় ভ্রমণের জন্য। কলকাতার সমস্ত গির্জাতেই তাই এই বিশেষ দিন ভিড়ে জমজমাট থাকে। আর গির্জার সঙ্গে সেলফি বা মোবাইল-ক্যামেরায় ছবি তোলার ধূম তো আছেই।
ক্রিসমাসে ক্যারোল গান
ক্যারোল গান ছাড়া ক্রিসমাস অসম্পূর্ণ। বড়দিনের উৎসবে আলাদা অনুভূতি এনে দেয় এই ক্যারোল গান। উৎসবকে যেমন আলাদা মর্যাদাদান করে ক্যারোল গান, তেমনই মনকে হালকা করে দেয়। বড়দিনের উৎসবে যোগ দিয়ে ক্যারোল গানে মেতে ওঠেন অনেকেই। প্যারিসের এই ক্যারোল গানের রেস এখন ছড়িয়ে পড়েছে কলকাতায়।
বড়দিনের পার্টি
ডালহৌসি ইনস্টিটিউট থেকে রেঞ্জার্স ক্লাব, গ্রিল ক্লাব, সিসি অ্যান্ড এফসিতে ক্রিসমাস পালনে মেতে ওঠেন আট থেকে আশি। এখানে ক্রিসমাসের উৎসবে ক্রিসমাস পার্টি হয়। একেবারে আলাদা আঙ্গিক ক্রিসমাসে। বিভিন্ন ক্লাবে পার্টি করে আনন্দ উপভোগ করেন সবাই। আর এই পার্টিতে প্রধান আকর্ষণ হিসাবে 'সান্তা' আমন্ত্রিত হয়। তিনি আনন্দ দান করেন উপস্থিত সবাইকে।
পিকনিক আর কার্নিভাল
উৎসবের মেজাজ তো তৈরিই করে দেয় ডিসেম্বরের শীত। তারপর বড়দিনে পিকনিক আলাদা মাত্রা পায়। পিকনিক, কার্নিভাল আর উৎসব- মিলেমিশে একাকার। প্রথমে গোষ্ঠীবদ্ধ রহয়ে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া, তারপর ঘোরা। চিড়িয়াখানা থেকে ভিক্টোরিয়া, সায়েন্স সিটি থেকে, নিকো পার্ক- বড়দিনে একেবারেই আলাদা রূপে দেখা দেয়।
বড়দিনের সজ্জা ও ক্রিসমাস ট্রি
বড়দিন এলেই আলোকমালায়া সেজে ওঠে পার্কিস্ট্রিট-সহ কলকাতার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। কলকাতার বিভিন্ন ঘর-বাড়ি সেজে ওঠে চমৎকার আলো, ক্রিসমাস ট্রিতে। অনেকে নিজের বাড়িকেও সাজিয়ে তোলেন অপরূপ আলোকসভায়। এই একটি দিনকে কেন্দ্র করে কলকাতা হয়ে ওঠে মোহময়ী।
সান্তাক্লজ
বড়দিন পালন হবে, অথচ সান্তা থাকবে না, তা কি হয়। সান্তা তো শিশুদের মধ্যে বিশেষ জনপ্রিয় ছিল। অনেকে তো বিশ্বাস করে সান্তা একেবারেই আসল। আর এক অনির্বচনীয় আনন্দ নিয়ে তাঁর উপস্থিতি। সান্তার কাছে চাওয়ার দীর্ঘ তালিকা তো অনেক শিশুর মনে লেখা হয় বড়দিনের বেশ আগে থেকেই। লাল পোশাক পরিহিত সেই মানুষ কী উপহার প্রদান করবেন, তার জন্য উৎসুক সবাই।
পার্কস্ট্রিট
বড়দিনে কলকাতার হৃদস্পন্দন হল পার্কস্ট্রিট। কলকাতার ক্রিসমাস পার্কস্ট্রিটকে ঘিরেই আবর্তিত হয়। ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই সুসজ্জিত হয়ে ওঠে পার্কস্ট্রিট। ক্রিসমাস কার্নিভালে অন্য রূপ পায় পার্কস্ট্রিট। ডিসেম্বরজুড়েই শীতকালীন কলকাতার নজর এই পার্কস্ট্রিটের দিকে। গোটা পার্কস্ট্রিট আলোকমালায় সেজে ওঠে। তার সঙ্গে ক্রিসমাস ট্রি অপরূপ শোভাদান করে।
উপহার
বড়দিন উদযাপনের একটা সেরা অংশ হল অন্যদের কাছ থেকে উপহার গ্রহণ। ক্রিসমাস ট্রি-র নীচে রাখা একটি উপহারের উপর নিজের নামটি দেখতে কে না আনন্দ পায়। সে আনন্দের অনুভূতি একেবারেই আলাদা। ক্রিসমাস উপহার শিশুমনে বিশেষ প্রভাব ফেলে। একইসঙ্গে আত্মীয় এবং বন্ধুদের সাক্ষাতে আনন্দ উপভোগ একটা বড় উপহার বড়দিনে।