পুরভোটের আগে ফেসবুক পোস্টে অস্বস্তি বাড়ালেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, প্রশ্ন উঠছে বিজেপি নেত্রীর অবস্থান নিয়ে
হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন সময়। তারপরেই বুথমুখী হবেন শহরবাসী। তারমধ্যে ফের বিস্ফোরক ফেসবুক পোস্টে বঙ্গ বিজেপির স্বস্তি বাড়ালেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। এবারও সেই তিস্তা বিশ্বাসেসর প্রসঙ্গ টেনে ফেসবুক পোস্টে বিজেপি সাংসদ লিখেছেন,' তিনি দলের নগন্য কার্যকর্তা! দল আমাকে তাড়াতে পারে, শো-কজ করতে পারে, সাসপেন্ড করতে পারে, কিন্তু দল থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করতে পারে না।'পুরভোটের প্রার্থী নির্বাচনের বৈঠকের দিন থেকেই রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে সুকান্ত মজুমদার এবং দিলীপ ঘোষদের বিবাদ চরমে উঠেছিল। প্রার্থী বাছাইয়ের বৈঠক শেষ না করেই বেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।

ফের বিস্ফোরক রূপা
ফের বেসুরো বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। দিল্লি থেকেই ফেসবুক পোস্টে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের বিরুদ্ধে আগুন ঝরা পোস্ট লিখলেন তিনি। পুরভোটের মাত্র হাতে গোনা দিন বাকি। রবিবার ১৯ ডিসেম্বর কলকাতা পুরসভা ভোট। তার আগে বঙ্গ বিজেপির নেতাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি। রূপা গঙ্গোপাধ্যায় নিজের ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, 'অনেক স্মৃতি ভিড় করে আসছে। ২০১৫ সালের পুরসভা নির্বাচনের কথা এসে ভিড় করছে। আমাকে অনেক শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছিল তখন। আজ আমি স্বীকার করি, আমি হয়ত রাজনীতির লোক নই। দল আমাকে তাড়াতে পারে, শো-কজ করতে পারে, সাসপেন্ড করতে পারে, কিন্তু দল থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করতে পারে না'।

আবারও তিস্তার পাশে রূপা
ফেসবুক পোস্টে ফের বিজেপি নেত্রী তিস্তা বিশ্বাসকে নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, 'আমার তো আর হোর্ডিং লাগাবার ক্ষমতা নেই। থাকলে তোদের দু' জনের ছবি টাঙিয়ে বলতাম আমি তোদের সঙ্গে আছি। থাকব।' তারপরেই বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে সব ক্ষোভ উগরে দিয়ে এই পোস্ট করেছেন তিনি। তিনি দাবি করেছেন, রাজ্য পুলিশের সাহায্যে তিনি ৩০ থেকে ৩৫ খুনি, ধর্ষকদের গ্রেফতার করিয়েছেন। এবং 'শান্ত ও ভদ্র আন্দোলনের' আন্দোলনের মাধ্যমেই তিনি তা করেছিলেন। তারপর রূপা গঙ্গোপাধ্যায় দাবি করেন সেকারণেই তাঁকে তাড়াতে তৎপর হয়েছে বিজেপি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য তিস্তা বিশ্বাসকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন রূপা। তিস্তা বিশ্বাসের গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে সেকথা তিনি মানতে রাজি হননি।

পুরভোটে হাইকোর্টে ধাক্কা বিজেপি
পুরভোটের মামলায় পর পর ধাক্কা বিজেপির। গতকাল পুরভোটের স্থগিতাদেশ চেয়ে বিজেপির আবেদন খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। অর্থাৎ ১৯ ডিসেম্বরই কলকাতা পুরসভার ভোট হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। উল্টে বকেয়া পুরভোটও দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। আগামী ২৩ ডিসেম্বর রাজ্য সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে বকেয়া পুরভোটের নির্ঘণ্ট জানাতে বলা হয়েছে। এবং যতটা সম্ভব কম দফায় বকেয়া পুরভোট করাতে বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে মামলাতেও ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়ে আদালতে মামলা করেছিল বঙ্গ বিজেপি। কিন্তু বৃহস্পতিবার সেই মামলায় রায় দানে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। উল্টে রাজ্যপুলিশকে দিয়েই পুরভোট করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকট
পুরভোটের প্রার্থী বাছাই নিয়ে অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে উঠেছে। বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে প্রার্থী নির্বাচনের অভিযোগ উঠেছে। এমনকী বিজেপির প্রবীণ নেতা তথাগত রায়ও এই নিয়ে প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং টুইটে তিনি লিখেছিলেন আপাতত বিদায় বঙ্গ বিজেপি। তারপরেই তাঁর বিজেপি ছাড়ার জল্পনা প্রকট হয়েছিল। যদিও তিনি স্পষ্ট করে দেন যে পুরভোট নিয়ে তিনি কোনও কথা বলবেন না। এবং বিজেপি ছাড়ার জল্পনাও উড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি