১৯৮৪ সাল থেকে নির্বাচনে লড়ে মাত্র একবারই হেরেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!
তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য রাজনীতিতে তো বটেই দেশের রাজনীতিতে উজ্জ্বল মুখগুলির অন্যতম। আগামী ৩০ এপ্রিল শনিবার বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনি।
বিধানসভা নির্বাচন : ভবানীপুরের লড়াইটা স্পষ্টতই 'দিদি' বনাম 'বৌদি'র
ভবানীপুর কেন্দ্র এবারের নির্বাচনে প্রথম থেকেই সকলের নজরে রয়েছে। এই কেন্দ্রে মমতা ছাড়াও আর এক মহিলা প্রার্থী ভোটে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী দীপা দাশমুন্সি। এছাড়াও বিজেপির তরফে দাঁড় করানো হয়েছে নেতাজির প্রপৌত্র চন্দ্র বসুকে।
১৯৮৪ সাল থেকে ভোটে লড়ছেন মমতা। সেইবার প্রথম তিনি ভোটে লড়ে জয়লাভ করেন। সেটা ছিল লোকসভা ভোট। সেবছর ২৯ বছরের যুবতী মমতার কাছে হেরে গিয়েছিলেন সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়।
এরাজ্যে জেলে থেকে ভোট লড়ে এর আগে কারা জিতেছেন? জেনে নিন
এরপর বহুবার লোকসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লড়েছেন ও জিতেছেন। তবে ২০১১ সালে প্রথমবার তিনি বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। প্রথমে না দাঁড়ালেও কংগ্রেস-তৃণমূল জোট ক্ষমতায় এলে তিনি উপনির্বাচনে দাঁড়িয়ে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকেই জেতেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল এবছর নির্বাচনে হেরে গেলে কী হতে পারে?
২০১১ সালে ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটানো যেমন মমতার কেরিয়ারের বড় মাইলফলক, তেমনই বিধানসভা ভোটে দাঁড়ানোও নিঃসন্দেহে বড় ঘটনা।
১৯৮৪ সালের লোকসভা ভোটে জয়
সেবছর কংগ্রেস নেত্রী হিসাবে যাদবপুর কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়ে সোমনাথ চট্টোপাধ্য়ায়কে ১৯,৬৬০ ভোটে হারিয়ে প্রথমবার সাংসদ হন মমতা। মোট ৪৯.৮ শতাংশ ভোট তিনি পেয়েছিলেন।
১৯৮৯ সালে লোকসভা ভোটে পরাজয়
যাদবপুর কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়ে সেবছর সিপিএমের মালিনী ভট্টাচার্যের কাছে হেরে যান তিনি। সেবছর তিনি হারেন ৩০,৯০০ ভোটের ব্যবধানে। এবং এতদিনে তিনি ওই একবারই ভোটে হেরেছেন। রাজনীতিকরা বলেন, সেবছর কেন্দ্রের রাজীব গান্ধী সরকারের বিরুদ্ধে বোফর্স কেলেঙ্কারির রেশ পড়েছিল ভোটবাক্সে।
১৯৯১ সালে লোকসভায় জয়
১৯৯১ সালেই দক্ষিণ কলকাতা লোকসভা আসনে দাঁড়িয়ে সিপিএমের বিপ্লব দাশগুপ্তকে ৯৩,৬৬৩ ভোটের ব্যবধানে হারান তিনি।
১৯৯৬ সালে লক্ষ ভোটে জয়
এইবছর ভোটে জেতার ব্যবধান অনেকটা বাড়িয়ে লক্ষাধিক করে নেন মমতা। সেবছর সিপিএমের ভারতী মুখোপাধ্যায়কে দক্ষিণ কলকাতা আসন থেকেই ১ লক্ষ ৩ হাজার ২৬১ ভোটে হারান তিনি।
১৯৯৮ সালের ভোটে রেকর্ড ভোটে জয়
ততোদিনে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল তৈরি করে ফেলেছেন তিনি। এরপরে লোকসভা ভোটে লড়ে সিপিএমের প্রার্থী প্রশান্ত সূরকে ২ লক্ষ ২৪ হাজার ভোটে হারান মমতা।
১৯৯৯ সালে তৃণমূল নেত্রী হিসাবে জয়
তৃণমূল সুপ্রিমো হিসাবে সেই বছর সিপিএমের শুভঙ্কর চক্রবর্তীকে ২ লক্ষ ১৪ হাজার ভোটে হারান মমতা।
২০০৪ সালে জয়
এইবছর সিপিএম নেতা রবীন দেবকে ৯৮ হাজার ৪২৯ ভোটে হারান তিনি। সেবছর কংগ্রেসের হয়ে দক্ষিণ কলকাতার এই আসনে লড়েন অভিনেত্রী নাফিসা আলি।
২০০৯ সালে মমতার জয়
এবছরও মমতার বিরুদ্ধে দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রে প্রার্থী ছিলেন রবীন দেব। তবে মমতা তাঁকে সহজেই হারান ২ লক্ষ ১৯ হাজার ভোটে।
২০১১ বিধানসভা ভোটে জয়
কংগ্রেস-তৃণমূল জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেবার উপনির্বাচনে সিপিএমের নলিনী মুখোপাধ্যায়কে ৫৪ হাজার ভোটে হারান তিনি।