জিডি বিড়লায় পড়ুয়ার যৌন নির্যাতনে গ্রেফতার ২ 'দুষ্টু' স্যার, প্রিন্সিপ্যালকেও গ্রেফতারের দাবি
সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ জিডি বিড়লা স্কুলের দুই পিটি টিচার অভিষেক রায় ও মহম্মদ মুফিজুদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত ছয় বছর ধরে জিডি বিড়লা স্কুলে পিটি টিচার হিসাবে কাজ করছে অভিষেক।
জিডি বিড়লাকাণ্ডে অবশেষে দুই অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করল যাদবপুর থানা। শুক্রবার সকালেই গড়িয়া থেকে অভিষেক রায়কে আটক করেছিল পুলিশ। এরপরই দিনভর টানা জেরা করা হয় তাকে। জেরার সময়ই পুলিশ মহম্মদ মফিজুদ্দিন নামে আরও এক শিক্ষকের খোঁজ পায়। এরপর শুক্রবার দুপুরে নির্যাতিতা ৪ বছরের শিশু ফোটো দেখে জিডি বিড়লার দুই শিক্ষককে চিহ্নিত করার পরই পুলিশ এই দুই শিক্ষকের সঙ্গে ঘটনার যোগ থাকা নিয়ে নিশ্চিত ছিল। কিন্তু, দ্বিতীয়বার মেডিক্যাল টেস্ট-এর রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত যাদবপুর থানা দুই শিক্ষকের গ্রেফতারির খবর নিশ্চিত করছিল না।
[আরও পড়ুন:কাঠগড়ায় জিডি বিড়লা, ৪ বছরের পড়ুয়াকে যৌন নির্যাতন, আটক অভিযুক্ত শিক্ষক, দেখুন ভিডিও]
এরই মধ্যে যাদবপুর থানার সামনে ডিএসও, বিজেপি ও কংগ্রেস বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশের উপর চাপ বাড়ে। বিজেপি-র মহিলা মোর্চা নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় থানা ঘেরাও-এর হুমকি দেন। এমনকী, তাঁদের ৪ বছরের মেয়ে দুই অভিযুক্তকে চিহ্নিত করার পরও কেন তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না- এই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শিশুটির বাবা এবং তাঁর আইনজীবী। শেষমেশ সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ জিডি বিড়লা স্কুলের দুই পিটি টিচার অভিষেক রায় ও মহম্মদ মুফিজুদ্দিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
দুই অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধেই পসকো আইনের ৪ ও ৬ নম্বর ধারায় মামলা দায়ের করেছে যাদবপুর থানা। জানা গিয়েছে, অভিষেককে জেরা করেই বোঝা গিয়েছিল তাঁর সঙ্গে ঘটনার যোগ আছে। শুক্রবার দিনের বেলাতেও জেরা চলাকালীন অভিষেক এবং মহম্মদ মুফিজুদ্দিন বহু যুক্তি খাঁড়া করার চেষ্টা করলেও আদপে তা ধোপে টেকেনি।
[আরও পড়ুন:জিডি বিড়লাকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর মোড়, চকোলেট দেখিয়ে কি যৌন অত্যাচার, কী বলল নির্যাতিতা শিশু]
গত ছয় বছর ধরে জিডি বিড়লা স্কুলে পিটি টিচার হিসাবে কাজ করছে অভিষেক। মহম্মদ মফিজুদ্দিন বছর দুয়েক হস কাজে যোগ দিয়েছে। অভিষেক গড়িয়ার বাসিন্দা। আর মুফিজুদ্দিনের বাড়ি বেনিয়াপুকুরে।
এদিকে, গ্রেফতারির খবর পাওয়ার পরই প্রিন্সিপ্যালকে গ্রেফতারের দাবি জানান যৌন নির্যাতনের শিকার চার বছরের শিশুর বাবা। তাঁর এবং তাঁর আইনজীবী প্রিয়ঙ্কা টিবরিওয়ালের দাবি, প্রথম থেকেই জিডি বিড়লা স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল নানা ভাবে তথ্য গোপন করার চেষ্টা করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশের কাছ থেকে ফোন পাওয়ার পরও প্রিন্সিপ্যাল কোনওভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেননি বলে অভিযোগ নির্যাতিতা শিশুর বাবার। এমনকী, শুক্রবার সকালেও প্রিন্সিপ্যাল নানাভাবে অভিযোগ অস্বীকার করার চেষ্টা করছিলেনও বলেও তাঁর অভিযোগ। ঘটনার কথা স্বীকার না করে কেন তিনি সারাক্ষণ কিছু ঘটেনি গোছরের ভাব দেখানোর চেষ্টা করলেন তাতেও প্রশ্ন তুলেছেন নির্যাতিতার শিশুর বাবা। জিডি বিড়লার মতো স্কুলে যেভাবে তাঁর মেয়েকে বর্বরোচিত এবং পৈশাচিক অত্যাচারের শিকার হতে হল তাতে প্রিন্সিপ্য়াল তাঁর দায় এড়াতে পারেনও বলেও শিশুটির বাবা দাবি করেছেন। তাই প্রিন্সিপ্যালের গ্রেফতার হওয়া উচিত বলেও দাবি তুলেছেন তিনি।